Advertisement
E-Paper

TMC Executive: পেল্লায় বাড়ির জন্য খেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ধমক, সৎপথেই তৈরি, দাবি নেতার

আদতে ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম ব্লকের বাসিন্দা উজ্জ্বল। তবে বাড়ি করেছেন পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের বেলদার দেউলিতে।

বেলদায় উজ্জ্বল দত্তের বাড়ি।

বেলদায় উজ্জ্বল দত্তের বাড়ি। ছবি: কিংশুক আইচ।

দেবমাল্য বাগচী

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২২ ০৫:০০
Share
Save

সামনে কয়েক ডেসিমেল জমি গাছে ঘেরা। সেখান থেকেই দেখা যাচ্ছে পেল্লায় তেতলা বাড়িটা। বাইরে রং করা এখনও বাকি। তবে দেউলি গ্রামের সঙ্কীর্ণ পথের ধারে সেই বিবর্ণ বাড়ির অন্দরমহল সত্যিই ‘উজ্জ্বল’।

বাড়ির মালিক উজ্জ্বল দত্ত ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ নেতা। দিন কয়েক আগেই ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক সভায় খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেয়েছেন। উজ্জ্বলকে সতর্ক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “কত খাবে গো? হিরের চচ্চড়ি খাবে না সোনার ডালনা খাবে?” উজ্জ্বলের অবশ্য দাবি, সবই সৎ পথে করেছেন তিনি।

আদতে ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম ব্লকের বাসিন্দা উজ্জ্বল। তবে বাড়ি করেছেন পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের বেলদার দেউলিতে। বছর পাঁচেক হল সেই অট্টালিকা সবার নজর কাড়ছে। উজ্জ্বলের দাবি, অনেক বছর ধরে ধাপে ধাপে করেছেন এই বাড়ি। তেতলা বাড়ির মার্বেলময় অন্দরমহল ঝাঁ চকচকে। প্রত্যেক তলায় চারটি করে ঘর, রান্নাঘর, ডাইনিং হল, শৌচাগার মিলিয়ে আয়তন প্রায় ১৪০০ বর্গফুটের কম হবে না। থাকার লোক বলতে উজ্জ্বল, তাঁর স্ত্রী ও একমাত্র পুত্র। এক তলায় রয়েছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তেতলায় ভাড়াটেও রয়েছে। লোহার দরজা-জানলায় ঘেরা বাড়ির চারপাশ মুড়ে ফেলা হয়েছে সিসি ক্যামেরায়।

গত কয়েক বছরে এলাকায় বেশ কিছু জমি কিনেছেন, স্ত্রীর নামে রান্নার গ্যাসের ডিলারশিপও নিয়েছেন উজ্জ্বল। সঙ্গে ঝাড়গ্রামের রাজনীতিতে প্রভাব বেড়েছে তাঁর। তৃণমূলের নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি থেকে এখন জেলা নেতা। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ থেকে ২০১৮-য় জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ। ব্র্যান্ডেড জামা-প্যান্ট-জুতোয় ফিটফাট উজ্জ্বলের গাড়িও নজরকাড়া। মমতার ধমক নিয়ে অবশ্য তিনি বলছেন, “উনি আমাদের অভিভাবক। বলতেই পারেন। কিন্তু আমি ও সবে যুক্ত নই।” বরং সঙ্গে দাবি, ‘‘খরচ কমাতেই বাড়িতে কাঠের বদলে লোহার দরজা-জানলা করেছি।”

উজ্জ্বল আদি তৃণমূল। দলের প্রতিষ্ঠালগ্নেই নয়াগ্রামে রাজনৈতিক হিংসায় বেলদায় চলে এসেছিলেন। ২০০৫-’০৬ সাল পর্যন্ত কীটনাশকের সংস্থায় সামান্য বেতনে সেলসের চাকরি করেছেন। তখন দেউলিতে এক সার ব্যবসায়ীর মাটির ঘরে ভাড়া থাকতেন। দলে উত্থানের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর অবস্থাও ফেরে। ২০০৬ সালে তৃণমূলের নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি হওয়ার পরে দেউলির এই জমিতে ছোট চালাবাড়ি করেন। স্ত্রী তখন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীর দাবি, “ওঁর আর্থিক অবস্থার রকেট গতিতে উন্নতি হয়েছে। সবই গত পাঁচ-ছ’বছরে। তেতলা বাড়ি ছাড়াও বেলদা-কেশিয়াড়ি রোডের উপর দু’টি জমি রয়েছে। কেশিয়াড়িতে রান্নার গ্যাসের মূল ডিলারশিপ, বেলদায় রয়েছে সাব-সেন্টার। তবে অঙ্গনওয়াড়ির কাজ ছেড়েছেন স্ত্রী।”

উজ্জ্বলের বাড়ির ঔজ্জ্বল্য প্রসঙ্গে দলের লোকজনই ১৭০কোটি টাকায় নির্মিত কেশিয়াড়ি-নয়াগ্রাম ‘জঙ্গলকন্যাসেতু’র কথা তুললেন। দেউলির এক বুথ নেতার অভিযোগ, “জঙ্গলকন্যা সেতু শুরু হতেই তো উজ্বল জ্বলজ্বলে হল। সেতুর সঙ্গেই ওঁর বাড়ির কাজটাও এগিয়েছে। তার পরে নয়াগ্রামে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, স্টেডিয়াম, কলেজ হয়েছে, উজ্জ্বলের আরও উন্নতি হয়েছে।” পড়শি এক মহিলা আবার জুড়লেন, “বিশাল বাড়ি, গাড়ি, টাকা, জমি, রান্নার গ্যাসের ডিলারশিপ, নিরাপত্তারক্ষী সব রয়েছে। দানধ্যানও করেন।”

উজ্জ্বলের অবশ্য দাবি, “জঙ্গলকন্যা সেতুর সঙ্গে আমরা কোনওভাবেই যুক্ত ছিলাম না।” কিন্তু আপনার এত টাকার উৎস কী?

উজ্জ্বলের জবাব, “আগে সেলসের চাকরি করতাম। তখন থেকেই বাড়িটা ধাপে ধাপে করেছি। নয়াগ্রামে আমাদের পারিবারিক মুরগি খামার আছে। আর বছর দু’য়েক আগে ঋণ নিয়ে রান্নার গ্যাসের ডিলারশিপ নিয়েছি।”

তাতেও কি এত সম্পত্তি করা সম্ভব? থমথমে মুখে এ বার ঢোঁক গিললেন উজ্জ্বল। তারপর জুড়লেন, “নিন্দুকেরা অনেক কথাই বলে। সব প্রতিহিংসা।’’

TMC Jhalda tmc worker

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।