Advertisement
E-Paper

শুধু কোচবিহার নয়, এ বার গোটা দেশের কথা বলবেন, বলছেন পদ্মের রাজ্যসভার ভোটপ্রার্থী রাজবংশী অনন্ত

এত দিন পৃথক কোচবিহার রাজ্যের দাবিই শোনা গিয়েছে কোচবিহারের অনন্ত রায়ের মুখে। তিনি রাজবংশীদের ‘মহারাজ’ হিসাবেই পরিচিত। এ বার রাজ্যসভায় গিয়ে কী ভাবনা? শুনল আনন্দবাজার অনলাইন।

Exclusive interview of BJP candidate for Rajya Sabha Election Ananta Rai

কোচবিহারের রাজবংশী ‘মহারাজা’ অনন্ত রায়। —ফাইল চিত্র ।

পিনাকপাণি ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৩ ১১:১৮
Share
Save

কোচবিহারের রাজবংশী ‘মহারাজা’ অনন্ত রায় ‘বিজেপি’ হয়ে উঠলেন। পুরোপুরি না হলেও অনেকটাই। বাংলা থেকে রাজ্যসভায় বিজেপি প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরেই তাঁর মুখে ‘পৃথক কোচবিহার’ গঠনের দাবি নেই। বিজেপিই তাঁকে এমন দাবি তুলে এখন আর ‘অস্বস্তি’ বাড়াতে বারণ করেছে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর। তবে অনন্তের দাবি, তেমন কিছু নয়। একই সঙ্গে দাবি করলেন, তিনি কারও কথা শুনে চলার মানুষ নন।

কিন্তু রাজ্যসভায় বিজেপি সাংসদ হওয়ার পর তাঁর দল ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপল্‌স অ্যাসোসিয়েশন’ (জিসিপিএ)-এর কী হবে? গ্রেটার কোচবিহারের দাবিরই বা কী হবে?

প্রশ্ন: আপনি তো এ বার বিজেপি নেতা। বিজেপির সাংসদও হচ্ছেন।

অনন্ত: আমি এত দিন কোথায় ছিলাম? কবে থেকেই তো আমি এনডিএ-র (কেন্দ্রের বিজেপি জোট) শরিক! আমি যে সভা করেছি, সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছিলেন কি না? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ছিলেন কি না?

প্রশ্ন: কিন্তু সেখানেও তো আপনার সমর্থকেরা আপনার দলের হলুদ পতাকা নিয়ে যেতেন। গেরুয়া পতাকা তো নয়। কিন্তু এখন তো আপনি বিজেপির? গেরুয়া শিবিরের লাইনেই তো কথা বলতে হবে। না কি?

অনন্ত: এখনও তো সাংসদ হইনি। আগে ভোট হোক। হই সাংসদ, তার পরে। বিজেপি আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে সাংসদ করার জন্য। সেটা তো শুধু একটা জায়গার জন্য নয়, গোটা দেশের জন্য।

প্রশ্ন: এখন আপনার যে মূল দল গ্রেটার কোচবিহার পিপল্‌স অ্যাসোসিয়েশন, তার তা হলে কী হবে?

অনন্ত: আমি তো আমার নিজের দলেই রয়েছি। বিজেপি আমায় মনোনয়ন দিয়েছে।

প্রশ্ন: তা হলে সংসদে আপনার কী পরিচয় হবে? বিজেপি সাংসদ না কি জিসিপিএ সাংসদ?

অনন্ত: বিজেপি সমর্থিত। আগে তো সাংসদ হই। একটা কথা বলে দিই, আমি সাংসদ হইনি। সাংসদ হওয়ার জন্য সবে মনোনয়ন দিয়েছি।

প্রশ্ন: আপনার পুরনো দাবিদাওয়াগুলোর কী হবে?

অনন্ত: এ গুলো পরে বলব।

প্রশ্ন: তা হলে কি আপনি বিজেপির সুরেই কথা বলবেন?

অনন্ত: বিজেপির লাইন কী?

প্রশ্ন: আপাতত নেতারা এ সব নিয়ে চুপই থাকছেন।

অনন্ত: আমিও চুপই থাকছি।

প্রশ্ন: তবে কি বলা যায় যে, আপনি পৃথক কোচবিহার রাজ্যের দাবি থেকে সরে আসছেন?

অনন্ত: সরে যাব কেন? তবে সে সব কথা এখন থাক। এ নিয়ে পরে কথা বলব। আগে নির্বাচিত হই, তার পরে বলব। আমি মনোনয়ন দিয়েছি বলেই তো আর সাংসদ হয়ে যাইনি। আগে সাংসদ হই। তার পরে হ্যাঁ, না, দাবি করব কি করব না, সেটা বলতে পারব।

প্রশ্ন: বিজেপি নেতৃত্ব কি আপনাকে আপাতত পুরনো দাবিদাওয়া নিয়ে মুখ খুলতে বারণ করেছেন?

অনন্ত: ভাই, আমি কি কারও কথা শুনি? আমি কি কারও কোনও কথা শোনার লোক? কোনওদিন মনে হয়েছে?

প্রশ্ন: তার মানে আপনি রাজ্যসভায় গিয়ে আলাদা কোচবিহারের দাবিতে সরব হবেন?

অনন্ত: সে প্রশ্ন এখন আসছে কেন? আগে সাংসদ হই। তার পরে।

প্রশ্ন: সহজ অঙ্কের হিসাবে আপনার জয় তো নিশ্চিত।

অনন্ত: সেটা ঠিক। কিন্তু আমি রাজ্যসভায় গিয়ে দেশের সংবিধানের কথা বলব। আমি গোটা দেশের কথা বলব। শুধু কোচবিহার বা পশ্চিমবঙ্গে আটকে থাকব কেন? আমি চাই সর্বস্তরের মানুষ— গরিব, ধনী, ব্রাহ্মণ, শূদ্র সকলেরই ভাল হোক। সকলের জন্য সাংবিধানিক অধিকার থাকুক। দেশের সংবিধান সবচেয়ে উপরে।

প্রশ্ন: আপনি কিন্তু বার বার পৃথক রাজ্যের দাবির প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাচ্ছেন।

অনন্ত: এড়িয়ে যাইনি। আমি বলছি এ নিয়ে পরে কথা বলব। সব কিছুর একটা সময় রয়েছে। তবে এটা ঠিক যে, আমি এখন গোটা দেশের কথাও ভাবতে চাই।

প্রশ্ন: রাজবংশী সমাজে আপনার প্রভাব রয়েছে। এই সমাজের মানুষ পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসমে রয়েছেন। এই দুই রাজ্যে বিজেপি সুবিধা পাওয়ার জন্যই কি আপনাকে মনোনয়ন দিল?

অনন্ত: শুধু বাংলা আর অসম কেন, গোটা দেশেই রাজবংশীরা রয়েছেন। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক— সর্বত্র। আমরা এখানে রাজবংশী বলি। ওরা ওখানে রাজপুত বলে। আবার নেপালের রাজাও তো আমাদের বংশের লোক। আমাদের বংশের লোকেরাই সব জায়গায় শাসন করেছেন। যাঁরা যেখানে বাস করছেন, সেখানকার ভাষা শিখেছেন। কিন্তু সবাই তো আসলে রাজবংশী। আমি তাঁদের সকলের প্রতিনিধি।

প্রশ্ন: আপনি সাংসদ হলে রাজ্যসভায় বাংলার জন্য কী কী দাবি তুলবেন?

অনন্ত: আমি যদি সাংসদ হই তবে শুধু তো পশ্চিমবঙ্গের হব না। আমি গোটা দেশের কথা বলব। দেশের জন্য কাজ করব। আমি তো ওই রকম নই। আমি তো শুধু ব্রাহ্মণ বা শূদ্রের রাজবংশী নই। আমি সবারই। মানুষের হিতের কথা বলব। যাঁরা এখানে মুসলমান রয়েছেন, তাঁরাও তো ভারতের নাগরিক। আমি তাঁদের হিতের কথাও বলব। সংবিধানে যা অধিকার দেওয়া রয়েছে তাতে মন যা বলে সেই কথা বলা যায়। আমি যেটা ভাল মনে করি সেটাই বলব। সংবিধান অনুযায়ী যা দায়িত্ব সেটা তো এড়িয়ে যেতে পারব না। আমি কোনও জাতি নিয়ে কথা বলব না। এক জন সাংসদের যা ক্ষমতা, তার মধ্যে থেকেই সারা ভারতের ব্রাহ্মণ, শূদ্র, কীট-পতঙ্গ, সমস্ত প্রাণীর হিতের জন্য ভাবব। আবার বলছি, যদি সাংসদ হই তবে।

প্রশ্ন: তৃণমূল তো আপনার নামে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ প্রচার করতেই পারে?

অনন্ত: (অট্টহাসি) আচ্ছা। উপর দিকে থুতু ফেললে কোথায় পড়ে যেন? আমার আর কিছু বলার দরকার নেই।

Ananta Maharaj BJP Rajya Sabha MP Rajya Sabha Election

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।