রামকৃষ্ণের বাণী পড়েই দিন কাটাতে চাইছেন অর্থ উদ্ধার-কাণ্ডে অনর্থে জড়িয়ে পড়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
টাকা মাটি, মাটি টাকা। অর্থই আসল সম্পদ নয়। সেটা বোঝাতেই মূলত এমন কথা বলেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ। এখন সেই রামকৃষ্ণের বাণী পড়েই দিন কাটাতে চাইছেন অর্থ উদ্ধার-কাণ্ডে অনর্থে জড়িয়ে পড়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রীও। কিন্তু এখন তিনি কারাবন্দি। আর সেই আঁধারে আলোর খোঁজে রামকৃষ্ণেই ভরসা রাখতে চাইছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেলে তো আর খাওয়া-ঘুম-খাওয়া ছাড়া বিশেষ কাজ নেই। মাঝে মধ্যে জেরা করতে এলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) আধিকারিকদের একঘেয়ে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বা না দেওয়া। বাকি সময়টা ‘অধ্যাত্মচেতনা’ বাড়াতে চাইছেন পার্থ। তাই জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবদার করে আনিয়ে নিয়েছেন ‘শ্রীম কথিত শ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত’। সূত্রের খবর, রামকৃষ্ণ শরণ নিয়ে অমৃতের খোঁজের পাশাপাশি জেল-জীবনে সাহিত্যেও ডুব দিতে চাইছেন প্রথমে অর্থনীতি ও পরে বিজনেস ম্যানেজমেন্টের ছাত্র পার্থ। তাঁর ইচ্ছা শুনেই জেলে পার্থের জন্য পাঠানো হয়েছে ‘মহাশ্বেতা দেবী অমনিবাস’। ‘হাজার চুরাশির মা’ পড়বেন পার্থ। ‘স্তন্যদায়িনী’, ‘অরণ্যের অধিকার’ও পড়বেন। মহাশ্বেতার কলমে উঠে আসা লোধা, শবরদের নিয়ে পড়াশোনা করবেন। ওই সূত্রের আরও দাবি, পার্থের সেই ইচ্ছার কথা জানতে পেরেই প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে সেই বই। তবে সেই বই পেয়ে পার্থ এখনও পড়া শুরু করেছেন কি না তা জানা যায়নি। যেমন জানা যায়নি, আবদার করে আনানো খাতা, কলম ব্যবহার শুরু করেছেন কি না! তিনি কি নিজের রোজকার কথা লিখবেন? জেল-জীবনের কথা? না কি ফেলে আসা আলোয় আলোয় থাকা সময়টাই কাগজ-কালি-মন দিয়ে ধরে রাখবেন! সে কথা শুধু পার্থই জানেন।
অসহায় সময়ে রামকৃষ্ণের কাছে পার্থের আশ্রয় নেওয়ায় অবাক হওয়ার যদিও কিছু নেই। ছেলেবেলায় অন্তত কিছু দিনের জন্য তিনি লেখাপড়া করেছেন এমন এক পরিবেশে যেখানে কথামৃতের চর্চা ছিল। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তনী পার্থ অবশ্য পরবর্তী জীবনে ছিলেন বেসরকারি সংস্থার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মী। তবে লেখাপড়ার প্রতি তাঁর টান বরাবরের বলেই জানা যায়। ঘনিষ্ঠেরা বলেন, শুধু পড়ার প্রতি ঝোঁক নয়, নিজস্ব বইয়ের সংগ্রহও বেশ ভাল। দল তাঁকে মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’-র সম্পাদক করে। আর পাঁচটা বন্দির মতোই পার্থের জেল-জীবন কাটছে বলে জেল সূত্রে জানা গিয়েছে। গত শুক্রবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে ইডির বিশেষ আদালত। তাঁর পর থেকে আপাতত তাঁর ঠিকানা প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের এক নম্বর ব্লকের দু’নম্বর সেল। যেখানে ছোট একটা ফ্যান, কয়েকটা কম্বল তাঁর সম্বল। অতিরিক্ত বলতে একটা খাট পেয়েছেন তিনি। তবে তার মধ্যেই জায়গা করে নেবে পছন্দের বই। খাতা, কলমও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy