সংরক্ষণ রায় নিয়ে সহমত প্রায় সব দল। — ফাইল চিত্র।
অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল শ্রেণি (ইডব্লিউএস)-র জন্য কলেজ এবং সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণের পক্ষে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই রায় নিয়ে একসারিতেই অবস্থান করছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি এবং বিরোধী তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেসের মতো রাজনৈতিক দলগুলি। তবে এই আবহে উঠে আসছে নতুন দাবিও। সোমবার রায় ঘোষণার পর থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বেকারদের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করার দাবি তুলেছে বিরোধীরা।
সংরক্ষণ নিয়ে এই রায়ে উল্লসিত বিজেপি শিবির। এ নিয়ে দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা অস্বীকার করা যায় না, সমাজের যে কোনও বর্ণের হোন না কেন, সকলেরই শিক্ষা পাওয়া, সামাজিক প্রতিষ্ঠা পাওয়ার সমান সুযোগ আছে। কিন্তু, কেউ যদি অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়েন, সেই কারণে যদি তাঁর অগ্রগতি না হয় তা হলে তাঁকে সংরক্ষণের সুযোগ দেওয়া হবে।’’
এর আগে, মনমোহন সিংহ সরকারের জমানায় আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলার রায়। সোমবার শীর্ষ আদালতই রায় দিয়েছে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য কলেজ এবং সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণের পক্ষে। এ নিয়ে কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘‘এই রায় সংরক্ষণ ব্যবস্থায় নতুন অধ্যায়। এত দিন সংরক্ষণ দেওয়া হত জাতপাতের ভিত্তিতে বা পিছিয়ে পড়া জাতির ভিত্তিতে। এ বার থেকে আর্থিক ভাবে গরিবদের সংরক্ষণ দেওয়া হবে। এটা সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একটা ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।’’ তবে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করার পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। তাঁর মতে, ‘‘সংরক্ষণের থেকে বড় কথা কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা। না হলে সংরক্ষণই মানুষকে আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়ার শেষ পন্থা নয়। আমার সক্ষমতা নেই কিন্তু, আমি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করছি। এমনটা হলে এই সংরক্ষণ ব্যবস্থা কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।’’
২০১৯ সালে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা অসংরক্ষিত শ্রেণির মানুষদের জন্য ১০ শতাংশ চাকরি বা শিক্ষাক্ষেত্রে সংরক্ষণের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে বিল পাশ হয়েছিল লোকসভা এবং রাজ্যসভা দু’টি কক্ষেই। সেই ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের মত, ‘‘সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে ১০৩ নম্বর সংবিধান সংশোধনী পাশ করানো হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে লোকে আদালতে যায়। কিন্তু এই সংশোধন আইনগত ভাবে গ্রহণযোগ্য, তা সুপ্রিম কোর্ট বলে দেয়। এর ফলে উচ্চ শ্রেণির মধ্যে যাঁরা আর্থিক ভাবে দুর্বল তাঁরা সুবিধা পাবেন। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে খুব ভাল বলে আমার মনে হয়। সমাজে অর্থনৈতিক সাম্য আনার ক্ষেত্রে এটা বড় কাজ করবে।’’
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পিছনে অবশ্য ‘চমক’ দেখছে না সিপিএম। সিপিএমের সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘এই দাবিটা প্রায় সকলেরই ছিল যে, যাঁরা আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়েছেন তাঁদের খানিকটা সাহায্য করা দরকার। সেই সংবিধান সংশোধনকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, এটা করা যায়। সরকার, সংসদ মনে করলে করা যায়। এর মধ্যে বিশেষ কোনও চমক আছে বলে মনে হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy