ভুয়ো পাসপোর্ট-কাণ্ডে গ্রেফতার আজাদ মল্লিক আদতে পাকিস্তানি! মঙ্গলবার কলকাতায় বিচার ভবনে মামলার শুনানির সময় এমনটাই দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। চলতি মাসের শুরুর দিকে উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটি থেকে আজাদকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। অভিযুক্ত আজাদ বাংলাদেশি বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল। তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে জানান, ইডির হেফাজতে থাকাকালীন তদন্তে জানা গিয়েছে আজাদ বাংলাদেশি নন। তিনি আসলে পাকিস্তানি নাগরিক। পাকিস্তানি পরিচয় আড়াল করার জন্য তিনি নিজের বাংলাদেশি পরিচয় ব্যবহার করতেন!
আদালতে ইডির আইনজীবী জানান, ওই অভিযুক্ত প্রায় ১২-১৩ বছর আগে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। তিনি পরিচয় বদলে এ দেশে ভিসার আবেদন করেছিলেন। অভিযুক্ত দু’টি ভোটার কার্ড এবং একাধিক ড্রাইভিং লাইসেন্স বানিয়েছিলেন বলেও আদালতে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। ইডির দাবি, অভিযুক্ত এক এক দেশে এক এক নামে পরিচিত। তাঁর চারটি জন্ম শংসাপত্রের কথাও জানা গিয়েছে বলে দাবি আইনজীবীর। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ভারতে ধৃত আজাদ মল্লিক বাংলাদেশে আহমেদ হোসেন আজাদ নামে পরিচত ছিলেন। আবার পাকিস্তানে তাঁর নাম ছিল আজাদ হোসেন।
বিচার ভবনের এজলাসে ইডি জানিয়েছে, অভিযুক্তের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে দু’কোটি ৬২ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। আদালতে সওয়ালের সময়ে জাতীয় সুরক্ষার বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন ইডির আইনজীবী। অভিযুক্তের অপরাধমূলক কাজকর্ম থেকে পাওয়া টাকা কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়েছে, সেটির সঙ্গে দেশবিরোধী কোনও কাজের যোগ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে আদালতে জানান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী।
আরও পড়ুন:
ভুয়ো পাসপোর্ট-কাণ্ডের তদন্তে পাওয়া নতুন তথ্যের ভিত্তিতে একটি নতুন মামলা রুজু করেছে ইডি। সেই মামলার তদন্তও শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। নতুন ওই মামলাটির তদন্তের স্বার্থে আজাদকে পুনরায় নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চান ইডির আধিকারিকেরা। সেইমতো মঙ্গলবার অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানায় ইডি। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারক। অভিযুক্ত আজাদকে আগামী ৮ মে পর্যন্ত ইডি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।