—প্রতীকী ছবি
রোগের আক্রমণ অনেক ক্ষেত্রেই হয় খুব আকস্মিক। দরকার হয় আশু চিকিৎসার। সেই জরুরি প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে তৎকাল ব্যবস্থাতেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি করে দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। তার জন্য কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উপভোক্তার আঙুলের বায়োমেট্রিক ছাপ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
অ্যাম্বুল্যান্সে শুয়ে ছিলেন রোগী। সেই অবস্থায় তাঁর আঙুলের বায়োমেট্রিক ছাপ নিয়ে এবং রোগীর ছবি তুলে ঘটনাস্থলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি করে দিয়েছেন কর্মীরা। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে অন্তত দু’জন রোগীর ক্ষেত্রে পরিবারের অনুরোধে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা বায়োমেট্রিক যন্ত্র, কম্পিউটার ও স্মার্টকার্ড প্রিন্টার নিয়ে এমন চমকপ্রদ তৎপরতা দেখিয়েছেন।
‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের শিবিরে গিয়ে যাঁরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন, তাঁদের অনেকেই এখনও কার্ড হাতে পাননি। সেই ছবির পাশাপাশি এই উজ্জ্বল ছবিটাও আছে। ওই আবেদনকারীদের মধ্যে কিছু মানুষের আচমকাই বেসরকারি হাসপাতালে নিজের বা স্বজনের চিকিৎসা করানো জরুরি হয়ে পড়েছিল। তাঁদের অনেককেই জরুরি ভিত্তিতে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় স্বাস্থ্য দফতর। এবং সেই কার্ড নিয়ে সেই দিনেই পরিষেবা পেয়েছেন সংশ্লিষ্ট রোগীরা।
কর্তারা জানাচ্ছেন, ১ ডিসেম্বর দুয়ারে সরকার চালু হওয়ার পরে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে রাজ্যে ২১৭ জন দু’-এক ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়েছেন। তৎকাল ভিত্তিতে কার্ড পাওয়ার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর। সেখানে ডিসেম্বরে ৩০ জন তৎকালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়েছেন। মালদহ এবং বাঁকুড়ায় জরুরি ভিত্তিতে যথাক্রমে ২৪ এবং ২২ জন এই কার্ড পেয়েছেন, চিকিৎসাও করিয়েছেন। কিছু ক্ষেত্রে রোগী বা তাঁর স্বজনেরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করে উঠতে পারেননি। তা সত্ত্বেও হঠাৎ প্রয়োজন পড়ায় দু’-তিন ঘণ্টার মধ্যে আবেদনপত্র পূরণ করিয়ে তাঁদের কার্ড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
দৃষ্টান্ত দিয়ে স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, গত মাসেই পুরুলিয়ার আরশা ব্লকে মারুফা বিবি নামে এক মহিলার জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়েছিল। তিনি তখনও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করে উঠতে পারেননি। জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানানোর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে দিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করানো হয়। তা জমা দেওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে তাঁর ‘ইউনিক রেজিস্ট্রেশন নম্বর’ চলে আসে। আধ ঘণ্টার মধ্যে তিনি কার্ড পেয়ে যান এবং চিকিৎসার জন্য পরিজনকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন। বীরভূমে রামপুরহাটে প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে আবেদন জানানোর চার ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়ে এক শিশুর জটিল অস্ত্রোপচার করান অভিভাবকেরা। উত্তরবঙ্গে কালিয়াগঞ্জে চলাফেরায় অক্ষম বৃদ্ধ সুকেশচন্দ্র মোদক ও অসুস্থ বৃদ্ধা পার্বতী সাহার বাড়ি গিয়ে জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেওয়া হয়।
‘‘এর থেকে এটাই প্রমাণিত হচ্ছে যে, সরকার আর স্বাস্থ্য দফতর ভাল ভাবে কাজ করছে,’’ বলেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। স্বাস্থ্য দফতরেরই একাংশ জানাচ্ছে, আসন্ন্ বিধানসভা ভোটে স্বাস্থ্যসাথী শাসক দলের অন্যতম ‘ট্রাম্প কার্ড’। তাই এই প্রকল্পে কোনও দিক থেকে কোনও ত্রুটি চাইছে না সরকার। প্রকল্পের সুবিধা না-পেয়ে জনমনে কোথাও ক্ষোভ তৈরি হোক বা বিরোধী শিবির সমালোচনার সুযোগ পাক— এগুলো একেবারেই চায় না সরকার। তাই তৎকাল ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি করে তৎক্ষণাৎ তার মাধ্যমে পরিষেবার সুযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। পর্যবেক্ষক শিবিরের বক্তব্য, এর পিছনে রাজনীতি থাক বা না-থাক, আখেরে মঙ্গল হচ্ছে জনগণেরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy