লটারির ফলের কাগজ হাতে ইন্দ্রনারায়ণ সেন। —নিজস্ব চিত্র
সংসারে অভাব-অনটন ছিল। তার থেকে মুক্তি পেতে মাঝেমধ্যেই লটারি কাটতেন। তা বলে রাতারাতি প্রথম পুরস্কার জিতে কোটিপতি হয়ে যাবেন এমনটা ভাবেননি পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাসিন্দা ইন্দ্রনারায়ণ সেন। কিন্তু, এক কোটি টাকার পুরস্কার জিতে কার্যত ঘুম উড়ে গিয়েছে তাঁর। নিরাপত্তা চেয়ে দ্বারস্থ হয়েছেন পুলিশের। অন্য দিকে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কালনায় দু’জন এক কোটি টাকার পুরস্কার জেতায় লটারি ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে আগ্রহ চরমে।
কালনার সাতগাছি পঞ্চায়েতের সাহাপাড়ার প্রবীণ বাসিন্দা ইন্দ্রনারায়ণবাবু জানিয়েছেন, হুগলির গুপ্তিপাড়ায় তাঁর ছেলের ছোট একটি সোনার দোকান রয়েছে। সোনার গয়না বানিয়ে বিক্রি করেন ছেলে। তাঁর রোজগার আর ইন্দ্রনারায়ণবাবুর পেনশনেই সংসার চলে। সেই সূত্রেই মাঝেমধ্যে গুপ্তিপাড়ায় যেতেন তিনি। ছেলের দোকানের পাশে একটি লটারির দোকান থেকে মাঝেমধ্যেই টিকিট কিনতেন।
সেই অভ্যাসেই গত ২৯ ডিসেম্বর ৬০ টাকা দিয়ে লটারির টিকিট কেনেন ইন্দ্রনারায়ণবাবু। লটারির ফল ঘোষণা ছিল ওই দিন রাত আটটায়। গুপ্তিপাড়ায় বসেই সেই টিকিট মেলাতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু কয়েক বার মেলানোর পরেও নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না ওই বৃদ্ধ। প্রথম পুরস্কারের টিকিটের নম্বরটিই তাঁর। পরে বিশ্বাস হয়ে কিছুটা ধাতস্থ হন তিনি। তত ক্ষণে এলাকাতেও রটে যায় তাঁর লটারি জেতার কথা।
এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে ফিরে আসেন। ইন্দ্রনারায়ণবাবু জানান, আনন্দে আর টিকিটের সুরক্ষার চিন্তায় রাতে কার্যত দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি। সকালে ব্যাঙ্ক খুলতেই ছুটে যান স্টেট ব্যাঙ্কে। ব্যাঙ্কের কর্মীরা টাকা পাওয়ার নিয়ম-কানুন জানিয়ে দেন তাঁকে। কিন্তু তাতেও আশ্বস্ত হতে পারেননি। পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার কালনা থানায় হাজির হয়ে নিরাপত্তার দাবি জানান। পুলিশকর্মীরাও তাঁকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেন। তার পরে কিছুটা স্বস্তি পান।
যদিও টাকা না পাওয়া পর্যন্ত দুশ্চিন্তা কাটবে না বলে জানিয়েছেন ইন্দ্রনারায়ণবাবু। তিনি বলেন, ‘‘স্ত্রী, দুই ছেলে ও বউমা এবং নাতি-নাতনিদের নিয়ে ন’জনের সংসার। ছেলেদের রোজগার তেমন নয়। আমার পেনশন আর ছেলেদের সামান্য রোজগারে কোনও রকমে সংসার চলে। এই টাকা পেলে সেই অবস্থা থেকে কিছুটা সুরাহা হবে। খুব শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট লটারি স্টকিস্টের সঙ্গে কথা বলে টাকা পেতে যা যা করণীয়, সবই করব।’’
সপ্তাহ দু’য়েক আগে গত ১৪ ডিসেম্বরই কালনা মহকুমার পূর্বস্থলীর এক কিশোর লটারি টিকিট কেটে এক কোটি টাকা পেয়েছিলেন। সেই পরিবারও পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy