Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

পুরনো নিয়োগ নিয়ে ভাববেন না পার্থ

প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সোমবার বিধানসভায় তৃণমূল বিধায়ক বীণা মণ্ডল প্রশ্ন করেন, ২০০৯ সালে যাঁরা প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাঁদের নিয়োগের ব্যাপারে সরকার কি কিছু ভাবছে?

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:০৬
Share: Save:

প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সোমবার বিধানসভায় তৃণমূল বিধায়ক বীণা মণ্ডল প্রশ্ন করেন, ২০০৯ সালে যাঁরা প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাঁদের নিয়োগের ব্যাপারে সরকার কি কিছু ভাবছে? জবাবে পার্থবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টা বিচারাধীন। আর ২০০৯ সালের ব্যাপারে আমাদের কোনও সহানুভূতি নেই।’’ পার্থবাবুর এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, যে হেতু ওই নিয়োগের পরীক্ষা বাম জমানায় হয়েছিল, তাই তা নিয়ে তাঁদের বিশেষ মাথাব্যথা নেই।

টেট নিয়ে অভিযোগ ঘিরে রাজ্য রাজনীতি এখন যথেষ্ট উত্তপ্ত। বিধানসভার ভিতরে-বাইরে এ দিনও তার আঁচ টের পাওয়া গিয়েছে। পার্থবাবুর এ দিনের মন্তব্য ক্ষোভ আরও উস্কে দেবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তাদের মতে, মন্ত্রী হিসেবে পার্থবাবুর কোনও নিয়োগপ্রার্থীর রাজনৈতিক দল-মত দেখার কথা নয়। কিন্তু পার্থবাবুর বক্তব্যে স্পষ্ট, বাম জমানার নিয়োগপ্রার্থীদের বিষয়ে তিনি দায় ঝে়ড়ে ফেলতে চাইছেন।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে টেট পরীক্ষা ছিল না। তখন মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর ও ইন্টারভিউয়ের ভিত্তিতে নিয়োগ হতো। ওই পর্বে কেন্দ্রের শিক্ষার অধিকার আইন চালু হওয়ার ফলে মাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতে প্রাথমিকে নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়। নতুন আইনে বলা হয়, প্রাথমিকে শিক্ষক হতে গেলে উচ্চ মাধ্যমিকে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। ফলে মাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতে ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়। মামলায় জড়ায় উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মালদহ, হাওড়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরের নিয়োগ প্রক্রিয়া। পরে হাওড়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরের জট কেটে গেলেও বাকি তিনটি জেলায় নিয়োগ মামলার কারণে ঝুলে থাকে। বীণাদেবী যে হেতু উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের বিধায়ক, ফলে তিনি এ দিন ওই বিষয়ে প্রশ্ন করেন।

আরও পড়ুন: একুশ মানে বাঙালির শেকড় আর সাহস

বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান-সহ বিরোধী বিধায়কদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নিয়ে বিধানসভার চলতি অধিবেশনে রোজই বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিরোধীরা। এ দিনও কংগ্রেস এবং বাম বিধায়করা অধিবেশনের শুরুতেই এপ্রন পরে ঢুকে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তবে এ দিন তাঁদের এপ্রনের স্লোগানে টেট কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গও যুক্ত হয়। বিধায়কদের স্কুলশিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পার্থবাবু যখনই উত্তর দিচ্ছিলেন, তখনই ‘চোর’ ‘চোর’ এবং ‘টেট কেলেঙ্কারির সরকার, আর নেই দরকার’ প্রভৃতি স্লোগান দেন কংগ্রেস ও বাম বিধায়করা। পার্থবাবুও তাঁদের পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘ডাকাতরা ডাকাতি করে চলে গিয়েছে। এখন ছিঁচকে চোরেরা চিৎকার করছে!’’

পার্থবাবুর অভিযোগ, ‘‘বাম জমানায় নিয়োগ হয়নি। যেটুকু হয়েছে, তা-ও সিপিএমের ক্যাডারদের কর্মসংস্থানের খাতিরে।’’ বাম জমানায় স্কুলগুলি সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছিল এবং সেখানে তাদের দলীয় মুখপত্র বিক্রি হতো বলেও বিদ্রুপ করেন পার্থবাবু।

টেট কেলেঙ্কারির প্রতিবাদে এ দিন বিধানসভার বাইরেও বিক্ষোভ হয়। হাজরা মোড়ে ছাত্র পরিষদ, কলেজ স্ট্রিট ও যাদবপুর থানার সামনে এসএসআই-ডিওয়াইএফআই এবং করুণাময়ীতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরে ডিওয়াইও বিক্ষোভ দেখায়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy