রাজ্যে কারও চাকরি চলে যাক, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা চান না। প্রয়োজনে তিনি অতিরিক্ত পদ তৈরির প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে কলকাতা হাই কোর্টের ‘অনুমতি’ চেয়ে আদালতে হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার দাবি করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর দাবি, মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে হলফনামা জমা দিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। ওই হলফনামায় জানানো হয়েছে, হাই কোর্ট ‘অনুমতি’ দিলে তবেই রাজ্য সরকারের ‘অতিরিক্ত পদ’-এর তালিকা মেনে সকলকে চাকরি দিতে প্রস্তুত এসএসসি। একই সঙ্গে ওই হলফনামায় এসএসসি জানিয়েছে, যদি হাই কোর্ট না চায়, তবে ‘ব্যতিক্রমী ভাবে’ যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের বাতিল করতেও রাজি শিক্ষা দফতর।

সাংবাদিক সম্মেলনে ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন নতুন প্রায় ১০ হাজার পদ তৈরি করা হবে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে এসএসসির এই হলফনামা জমা দেওয়ার কথা জানান ব্রাত্য। এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে পাশে বসিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ওই বৈঠক করেন। ব্রাত্য বলেন, ‘‘ভুলক্রমে মেধাতালিকার ক্রম ভেঙে সুপারিশের কারণে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের জন্য ‘সুপার নিউমেরারি’ পদ তৈরি করে চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাব হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রিসভায়। সেই অনুযায়ী এসএসসি হাই কোর্টে আর্জি জানিয়েছে, যাতে মহামান্য আদালত নির্দেশ দিলে রাজ্য সরকারের তৈরি সুপার নিউমেরারি তালিকা মেনে সকলকে চাকরি দিতে প্রস্তুত এসএসসি।’’
আরও পড়ুন:
এর পরেই শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা মেনেই এই পদ তৈরির চিন্তাভাবনা করেছে এসএসসি। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চান না কারও কাজ চলে যাক। কারও কাজ চলে গেলে শুধু তাঁর ক্ষতি নয়, তাঁর পরিবারেও বিপর্যয় নেমে আসে। আবার চান না কোনও যোগ্য প্রার্থী বঞ্চিত হোন। তাই প্রয়োজনে সুপার নিউমেরারি পদ তৈরির ইচ্ছা পোষণ করেছেন।’’ শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, এ বার হাই কোর্ট যে নির্দেশ দেবে, তা মেনেই পরবর্তী কালে পদক্ষেপ করা হবে। সূত্রের খবর, শিক্ষা দফতরের কাছে ২২২ জনের হদিস রয়েছে, যাঁরা ‘ব্যতিক্রমী ভাবে’ চাকরি পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৮৩ জন নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক। ৩৯ জন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক। তাঁদের চাকরি কি থাকবে? ব্রাত্য বলেন, ‘‘সবটাই নির্ভর করছে আদালতের রায়ের উপর।’’
আরও পড়ুন:
রাজ্যের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, ইতিমধ্যে মোট ৫,২৬১ অতিরিক্ত পদ (সুপার নিউমেরারি) তৈরি হয়েছে। আরও ৯,৭১৬ অতিরিক্ত পদ তৈরি হবে। শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষায় ১,৬০০ জনের নিয়োগ ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে।