ব্রাত্য বসু। নিজস্ব ছবি।
করোনা অতিমারির প্রভাব সামান্যই। এ বার বাংলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ার মূলে শিক্ষার অধিকার আইনের একটি ‘বিশেষ নিয়ম’কে দায়ী করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানালেন, ২০১৩ সালে বয়সের বিধিনিষেধের কারণে প্রথম শ্রেণিতে অনেক কম পড়ুয়া ভর্তি হয়েছিল। সময়ের নিয়মে তারাই এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। মন্ত্রীর দাবি, আগামী বছর থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা আবার ১০ লক্ষের আশপাশে থাকবে।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, এ বার বঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গত বারের তুলনায় প্রায় ৪ লক্ষ কম। মাধ্যমিকে বসার জন্য যত নাম নথিভুক্ত (রেজিস্ট্রেশন) হয়েছিল, ফর্ম পূরণের সময় সেই সংখ্যাও কমেছে ২ লক্ষের মতো। এ নিয়ে লাগাতার বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। ব্রাত্যের ব্যাখ্যা, শিক্ষার অধিকার আইনের একটি বিশেষ নিয়মের কারণে ২০১৩-’১৪ বর্ষে স্কুলগুলিতে ভর্তির সময় বয়স নিয়ে কড়াকড়ি ছিল। প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সসীমা ন্যূনতম ৬ বছর করা হয় সেই সময়। যার জেরে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিই অনেক কম হয়েছিল আগের বছরগুলির তুলনায়।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস নিয়ে বিধানসভায় একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। বৃহস্পতিবার সেই বিবৃতিই সংবাদমাধ্যমের সামনে পাঠ করে শোনালেন তিনি। ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সংস্কৃত সপ্তাহ’ পালনের একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে গিয়েছিলেন ব্রাত্য। বেরোনোর সময় তিনি বলেন, ‘‘এর আগে যে হেতু বয়সের এত কড়াকড়ি ছিল না, তাই ৫ বছরের শিশুরাও স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হত। ২০১৩-’১৪ বর্ষে তা ঘটেনি। বিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগের পোর্টাল থেকে প্রত্যেক বছর প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির তথ্য যা পাওয়া গিয়েছে, তার ভিত্তি করে বলা যায়, আমাদের রাজ্যে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির গড় সংখ্যা সাড়ে ১০ লক্ষ। যারা কালের নিয়মে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে। ২০১৩-’১৪ সালে যারা প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল, কালের নিয়মে এ বার তারাই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে।’’
শিক্ষক মহলের একাংশের দাবি ছিল, করোনার প্রভাবে স্কুলছুটও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কমার অন্যতম কারণ। তার প্রেক্ষিতে অনেকের পাল্টা যুক্তি, বাংলার মতো অতিমারিতে বিপর্যস্ত হয়েছে সব রাজ্যই। সেই অনুযায়ী, সব রাজ্যেই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়া উচিত। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। এ প্রসঙ্গে ব্রাত্য বলেন, ‘‘কোভিড সামান্যই দায়ী। মূল কারণ প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির সংখ্যা কমা।’’ তবে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘অঙ্কের হিসাবে দেখলে, আগামী বছর থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা আবার ১০ লক্ষের কাছাকাছি থাকবে।’’
রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুও। তিনি রাজ্য সরকারকে মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম (সিলেবাস) বদলানোরও পরামর্শ দিয়েছেন। এ বিষয়ে ব্রাত্য জানান, সরকারও এ ব্যাপারে মাস ছয়েক ধরে ভাবনাচিন্তা করছে। পাঠ্যক্রম নিয়ে তিনি নিজেও বেশ কয়েকটি বৈঠকও করেছেন। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘মহামান্য বিচারপতিকে তাঁর পর্যবেক্ষণের জন্য ধন্যবাদ জানাব। গত ছ’মাস ধরে এটা নিয়ে আমরা ঘন ঘন বৈঠক করেছি। কিছু সিদ্ধান্ত হলে সিলেবাস কমিটির সঙ্গে কথা বলে যথা সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে যত ক্ষণ সিলেবাস কমিটি আমাদের এটা নিয়ে বিবৃতি না দিচ্ছে, তত ক্ষণ এ ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy