রথীন ঘোষের বাড়িতে ইডি। —ফাইল চিত্র।
বেআইনি নিয়োগে যাঁদেরই নাম উঠে আসছে, তাঁদের সম্পত্তি খতিয়ে দেখতে চাইছে ইডি।
পুর নিয়োগ মামলাতেও বৃহস্পতিবার যাঁদের বাড়িতে হানা দিয়েছেন তদন্তকারীরা, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের ব্যাঙ্কের নথি, গয়নার হিসাব নেওয়া হয়েছে। এক জনের স্ত্রীকে নিয়ে তদন্তকারীরা সোজা ব্যাঙ্কেই পৌঁছে যান বলে ইডি সূত্রের খবর। সেই ব্যাঙ্কের লকারে কত গয়না আছে তাও খতিয়ে দেখেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার ইডির হানার কেন্দ্রে ছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। তিনি মধ্যমগ্রাম পুরসভায় ১০ বছর ধরে চেয়ারম্যানও ছিলেন। শুক্রবার রথীনও বলেন, ‘‘ঘরে থাকা সমস্ত নথি, স্ত্রী-মেয়ের গয়না, সে সবের রসিদ, ব্যাঙ্কের বই দেখিয়েছি।" ইডি সূত্রের দাবি, মন্ত্রীর ব্যাঙ্কের লকারে তল্লাশি চালিয়ে মিলেছে বেশ কিছু গয়না, গুরুত্বপূর্ণ নথি।
ইডি সূত্রের দাবি, পুর নিয়োগে প্রায় কয়েকশো কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। ফলে অভিযুক্তদের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি (ডিসপ্রপোরশানেট অ্যাসেট বা ডিএ) মামলার আওতায় আনা হতে পারে বলে তদন্তকারীদের একাংশের মত। সেই কারণে, এখন থেকেই টাকা, গয়না ও সম্পত্তির খতিয়ান নিতে শুরু করা হয়েছে।
যদিও পুর নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে বেশ কিছুদিন আগে। এত দিন বাদে ইডির এই সক্রিয়তা দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এর মধ্যে তো তথ্যপ্রমাণ অন্যত্র সরিয়েও ফেলা হতে পারে। তদন্তকারীদের একাংশের মতে, এ ক্ষেত্রে পুর নিয়োগ মামলায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত অয়ন শীলের বয়ান তাদের হাতে অন্যতম শক্তিশালী অস্ত্র। তা ছাড়াও অয়নের বাড়ি ও অন্য পুরসভায় তল্লাশি চালিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি তাদের হাতে এসেছে বলে ইডির দাবি।
ইডির আরও দাবি, রথীনের নামও উঠে এসেছে অয়নের বয়ান থেকেই। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত দেড়টা পর্যন্ত তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চলে এবং তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যদিও প্রায় ১৮ ঘণ্টার এই তল্লাশির পরেও শুক্রবার সকালে মন্ত্রীকে পাওয়া গিয়েছে বেশ হাল্কা মেজাজেই। রথীন বলেন, "ওঁরা খারাপ ব্যবহার করেননি। তবে কী করতে যে এলেন, বুঝতেই পারিনি। টানা তিন দশক পুরসভার জনপ্রতিনিধি থাকায় পুরআইন রপ্ত করেছিলাম। ওঁদের বোঝাই, নিয়োগ পদ্ধতিতে চেয়ারম্যানের ভূমিকা ঠিক কী। আইন-সংক্রান্ত একটি বই উপহার দিয়েছি।"
ইডির দাবি, ২০১৪-১৮ সাল পর্যন্ত মধ্যমগ্রাম পুরসভায় নিয়োগের ক্ষেত্রে গরমিল মিলেছে। ওই সময়েই চেয়ারম্যান ছিলেন রথীন। রথীন বলেন, "ওঁদের বলি, যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের জেরা করে জানুন, কাকে কত টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছে। আমার কাছে এসে কী পাবেন! নিয়োগ হয়েছে সংস্থার মাধ্যমে, সরকারি নিয়মে। আমার এবং পরিবারের দু’টো মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ দেখছিল। আমিই বললাম, নিয়ে যান। সময় নিয়ে দেখুন, পরীক্ষা করুন।"
বৃহস্পতিবার যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাঁদের আবার তলব করা হবে বলেও ইডির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, পুর নিয়োগ দুর্নীতির চাকরির বিক্রির লুটের টাকার একটি মোটা অংশ প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও সরকারি আধিকারিকদের কাছে পৌঁছেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy