—প্রতীকী ছবি
ডায়মন্ড হারবারের সরিষা হাই স্কুলের মাঠে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হল তৃণমূলের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সম্মেলন। উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, এ দিনের সমাবেশে প্রায় ৩৬ হাজার শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। তবে স্থানীয় সূত্রের খবর, উপস্থিতির হার ছিল আরও কম। সূত্রের দাবি, এ দিন সম্মেলনে উপস্থিত শিক্ষকদের মধ্যে অধিকাংশই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন স্কুলের।
শিক্ষকদের একাংশের দাবি, ডায়মন্ড হারবারে অনুষ্ঠান বলে এই জেলা থেকেই বেশি সংখ্যায় শিক্ষক নিয়ে যাওয়ার উপরে জোর দেওয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে কার্যত হুইপ জারি করে শিক্ষকদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। এ দিন স্কুল খোলা ছিল। কিন্তু শিক্ষকদের একাংশ সম্মেলনে যাওয়ায় পঠন-পাঠন ব্যাহত হয় বলেই অভিযোগ উঠছে। কিছু প্রাথমিক স্কুলে এ দিন পরীক্ষাও ছিল। শিক্ষক কম থাকায় সে ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার এক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, “কাজের দিনে সমাবেশে যেতে হচ্ছে। স্কুল চালু আছে। পঠন-পাঠনের ক্ষতি তো হবেই।” ওই শিক্ষক জানান, এ দিনের সমাবেশে যাওয়া শিক্ষকদের ছুটি কাটা যাবে না বলেই জানানো হয়েছে। সমাবেশে যোগ দিলেও কাজের দিন হিসেবেই তা গণ্য হবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের দু’টি সাংগঠনিক জেলা রয়েছে। সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দীপঙ্কর মণ্ডল বলেন, “সমাবেশে ১৬-১৭ হাজার শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। আমাদের সাংগঠনিক জেলা থেকেই প্রায় হাজার পাঁচেক শিক্ষক গিয়েছেন। কাউকে জোর করা হয়নি। প্রতি স্কুলকে বলা হয়েছিল দু’এক জন করে প্রতিনিধি পাঠাতে। পঠন-পাঠনের ক্ষতি হয়নি। কাজের দিনের কথা ভেবেই বেশি শিক্ষক যেতে পারেননি।”
এ দিন সমাবেশ থেকে শিক্ষক নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন ব্রাত্য। তিনি বলেন, “এর মধ্যেই আমরা ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করেছি। এ বার আবার স্বচ্ছ ও মেধাভিত্তিক নিয়োগ হবে।” আসন্ন ভোটে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির প্রভাব পড়বে কি না, সেই প্রসঙ্গে ব্রাত্য বলেন, “পঞ্চায়েত ও ধুপগুড়ি উপনির্বাচনে প্রভাব পড়েনি। এ বারও পড়বে না।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শিক্ষা দফতরে নানা উন্নয়নের উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “বাম জমানায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। এখন শিক্ষকদের পয়লা তারিখে বেতন দেওয়া হয়, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রে সন্তান জন্মানোর পরে এক মাস সবেতন ছুটি দেওয়া হয়।”
নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী কিছু বলবেন বলে আশা করেছিলেন শিক্ষকেরা। তবে মন্ত্রী এ দিন সেই সব কিছুই বলেননি। মন্ত্রীর দাবি, ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় শিক্ষকদের দাবি পূরণে কোনও পদক্ষেপ করা যায়নি। আগামী দিনে পদক্ষেপ হবে। এর ফলে অসন্তুষ্ট শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, সে ক্ষেত্রে ভোটের পরেই এই সমাবেশ করা যেত।
সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য বেশ কিছু দিন আগে থেকেই ৫০০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হয়েছিল শিক্ষকদের। পার্শ শিক্ষকদেরও টাকা দিতে হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি ব্রাত্য। সংগঠনের নেতাদের একাংশের দাবি, শিক্ষকদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতেই টাকা নেওয়া হয়েছিল।
সমাবেশের প্রস্তুতিতে মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতির ছাপানো নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, এ দিন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল প্রার্থী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে মিছিলে হাঁটতে হবে শিক্ষকদের। তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য মিছিল হয়নি। ব্রাত্য বলেন, “যানজটের কথা মাথায় রেখে মিছিল করা হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy