Advertisement
E-Paper

আবহাওয়া খারাপ, উদ্ধারে নামানো গেল না হেলিকপ্টার

সরকারি সূত্রের খবর, দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে সিকিম নিয়ে আলোচনা হয়। তৈরি করা হয়েছে, ‘ইন্টার মিনিস্টিরিয়াল সেন্ট্রাল টিম’ বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি দল।

উদ্ধার কাজে এখনও হেলিকপ্টার নামানো হয়নি।

উদ্ধার কাজে এখনও হেলিকপ্টার নামানো হয়নি। —ফাইল চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৫০
Share
Save

বিপর্যয়ের রেশ কাটিয়ে উত্তর সিকিমের বিভিন্ন প্রান্তে সেনাবাহিনী যাতায়াত করতে শুরু করেছে। লাচুং, লাচেনের মতো যেখানে পর্যটকেরা আটকে আছেন, সেখানে তাঁরা প্রয়োজনীয় সাহায্য পৌঁছে দিচ্ছেন। কিন্তু উদ্ধার কাজে এখনও হেলিকপ্টার নামানো হয়নি। একটি সূত্রের দাবি, নতুন করে ধস বা বৃষ্টি না হলেও খারাপ আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখেই এখনও এই নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। এরই মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে সাকো-চু হ্রদ। বৃহস্পতিবার রাতে সেই হ্রদের তাপমাত্রা, জল বেরনো নিয়ে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। যদিও সিকিম প্রশাসনের দাবি, তিস্তার দু’পাড়ের এলাকায় পরিস্থিতির নতুন করে অবনতি হয়নি। তুলনায় সহজে পৌঁছনো যায়, এমন এলাকা, অর্থাৎ পেলিং বা গ্যাংটক থেকে অনেক পর্যটক সমতলে নেমেছেন। তাঁদের নিরাপদে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করতে শিলিগুড়িতে ‘হেল্প ডেস্ক’ খোলা হয়। রংপো, সিংটাম ও বারদাং এলাকায় ভিতরের দিকে রাস্তা খোলা হয়েছে। তবে শিলিগুড়ি থেকে তিনটি রুটে ঘুরপথে প্রায় ৭-৯ ঘণ্টায় গাড়ি গ্যাংটকে পৌঁছচ্ছে।

এ দিন সকালে সেনাবাহিনীর দু’টি হেলিকপ্টার মঙ্গন হেলিপ্যাডে আনা হয়। বিকেল নাগাদ আরও একটি ডবল ইঞ্জিনের হেলিকপ্টার গ্যাংটকের কাছে বুরটুক হেলিপ্যাডে নিয়ে রাখা হয়েছে। লাচেন, লাচুং, মঙ্গনে সেনা জওয়ানেরা আটকে পড়া বাসিন্দা ও পর্যটকদের সাহস জুগিয়েছেন। আজ, শনিবার সকালে বিভিন্ন এলাকায় আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হলে উদ্ধারকাজ শুরু হতে পারে। মঙ্গন থেকে হেঁটে চুংথামে গিয়ে রাস্তার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে এনডিআরএফেএর একটি দল। নতুন করে ন’টি দেহ তিস্তা থেকে উদ্ধার হয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভীন বলেন, ‘‘এখনও অবধি ২৭টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ জন সেনা জওয়ান, দু’জন সাধারণ বাসিন্দাকে শনাক্ত করা হয়েছে।’’

সরকারি সূত্রের খবর, দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে সিকিম নিয়ে আলোচনা হয়। তৈরি করা হয়েছে, ‘ইন্টার মিনিস্টিরিয়াল সেন্ট্রাল টিম’ বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি দল। দলটি সিকিম যাবে। তার পরেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে টাকা মঞ্জুর করা হবে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার সিকিমের ত্রাণ, উদ্ধারকাজের জন্য ৪৪.৮০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। সিকিমের একাধিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থা সিকিম উর্জা লিমিটেড ২৫ কোটি টাকা দিয়েছে। তারা একটি হেলিকপ্টারও এনেছে।

সকালে রংপো, সিংটামের ত্রাণ শিবিরে যান সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমসিংহ তামাং। তাঁকে দেখে স্থানীয়েরা ছোট জায়গা, রেশনের অভাবের কথা বলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী জানান, চিহ্নিতকরণের পর মৃতদের পরিবার-পিছু ৪ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। শিবিরে আশ্রিত সকলকে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। সিকিমকে টাকা দেওয়া হলেও এ রাজ্যের কালিম্পঙের তিস্তাবাজারের জন্য এক টাকাও বরাদ্দ না হওয়ায় কেন্দ্রের সমালোচনা করেন জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। তিনি বলেছেন, ‘‘শতাধিক মানুষ বিপন্ন। সাংসদ এখন কোথায়!’’ পাল্টা বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেছেন, ‘‘দিল্লিতে রিপোর্ট যাচ্ছে, সয়মমতো ব্যবস্থা হবে। তবে ২০২১ সালের দুর্যোগে রাজ্যে প্রায় ৫০০ কোটি এসেছিল। পাহাড়ের ভাগের অংশের তো হিসাব নেই।’’

এর মধ্যে, সিকিমে বিপর্যয়ের দায় কেন্দ্রের সরকারকে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। তাঁর অভিযোগ, হিমালয়ের বুকে বড় বড় জলাধার, সেতু তৈরির সময়েই পরিবেশবিদেরাআশঙ্কার কথা বলেছিলেন। কিন্তু সরকার শোনেনি। একই সঙ্গে রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তুলে তিনি জানান, এই বিপর্যয়ের পর রাজ্য সরকারের উচিত ছিল প্রতিবেশী রাজ্যের সাহায্যে ছুটে যাওয়া। তৃণমূল বা বিজেপি অবশ্য এই নিয়ে এ দিন কিছু বলতে চায়নি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

flood sikkim

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}