—প্রতীকী ছবি
‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে স্বাস্থ্যসাথী-র কার্ড করানোর জন্য যত আবেদন জমা পড়ছে, ততই দুশ্চিন্তা বাড়ছে এই প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ কর্পোরেট ও বেসরকারি হাসপাতালগুলির। তাদের দাবি, এই প্রকল্পে রাজ্য সরকারের বেঁধে দেওয়া বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার খরচ অত্যন্ত কম। ফলে তাদের আশঙ্কা, সেই টাকায় লক্ষ লক্ষ লোকের চিকিৎসা করতে হলে হাসপাতালের ঝাঁপ বন্ধ করা ছাড়া গতি নেই। তাই হাসপাতালগুলি সরকারের কাছে টাকা বাড়ানোর আর্জি রাখছে।
পূর্বাঞ্চলের ১৭টি প্রথম সারির বেসরকারি হাসপাতালের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হসপিটাল্স অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’-র প্রধান রূপক বড়ুয়ার কথায়, ‘‘স্বাস্থ্যসাথীতে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার যে খরচ আছে, তা এই হাসপাতালগুলির স্বাভাবিক খরচের তুলনায় খুবই কম।’’ তিনি বলেন, ‘‘এত দিন স্বাস্থ্যসাথীর উপভোক্তা কম থাকায় সরকারের বেঁধে দাওয়া খরচে কোনও রকমে চালাচ্ছিলাম। আর সম্ভব নয়।’’
রূপকবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘এত দিন কম সংখ্যক মানুষ এই কার্ড নিয়ে পরিষেবা নিতে আসতেন। অধিকাংশ হাসপাতাল সরকারের বেঁধে দেওয়া খরচে পরিষেবা দিত। কিন্তু এখন তো স্বাস্থ্যসাথীর রোগীর সংখ্যার বাঁধ ভেঙে যাবে। তখন আমরা কী করব?’’
প্রসঙ্গত, রাজ্যে স্বাস্থ্যসাথী-র অন্তর্ভুক্ত বেসরকারি হাসপাতাল ১০৬১টি। যার মধ্যে কর্পোরেট হাসপাতাল ২১টি। পয়লা ডিসেম্বর ‘দুয়ারে সরকার’ চালু হওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত ১১ লক্ষেরও বেশি স্বাস্থ্যসাথীর আবেদন জমা পড়েছে। এত দিন রাজ্যের ১.৪৩ লক্ষ পরিবারের প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষ এই প্রকল্পের আওতায় ছিলেন। আগামীতে আসবে আরও প্রায় ৬০ লক্ষ পরিবার। অর্থাৎ মোট উপভোক্তা বাড়বে কয়েক কোটি।
আরও পড়ুন: লোক নেই, তাই কনভয়ে হামলার নাটক করছেন, বললেন মমতা
আরও পড়ুন: নড্ডার কনভয়ে হামলা মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, বললেন অভিষেক
হৃদ্রোগ চিকিৎসক তথা একটি কর্পোরেট হাসপাতালের প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত কুণাল সরকারের কথায়, ‘‘স্বাস্থ্যসাথীর টাকা দিতে রাজ্য সরকার দেরি করে না, এটা ঠিক। পাশাপাশি এটাও ঠিক, তাদের বেঁধে দেওয়া খরচ খুব কম।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পটি নিঃসন্দেহে খুবই ভাল। তবে প্রথমত, প্রচুর মানুষের হাতে এই কার্ড চলে এলে যাঁদের কার্ড থাকবে না, তাঁরা হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বেন। দ্বিতীয়ত, সাধারণ অসুখ অর্থাৎ শ্বাসকষ্ট, সাধারণ প্রসব, বুকে হঠাৎ যন্ত্রণা, জ্বর— এই ধরনের রোগীরা শয্যা পাবেন না। সব শয্যা শুধু আশঙ্কাজনক রোগীতেই ভর্তি থাকবে। তৃতীয়ত, স্বাস্থ্যসাথীর টাকা না বাড়ালে তার প্রভাব পড়তে পারে হাসপাতালে চিকিৎসার মানের উপরেও।’’ যদিও স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘আমজনতার উপকারের জন্যই এত মানুষকে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আনা হচ্ছে। এতে কিছু কর্পোরেট হাসপাতালের স্বার্থে ঘা লাগলেও গ্রামের অনেক ছোট হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথীর মাধ্যমেই টিকে আছে। এই প্রকল্পে টাকা বাড়ানোর ব্যাপারে এখনও ঊর্ধ্বতন স্তর থেকে কিছু জানানো হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy