ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ। গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের ভাইপো পাপ্পুকে তৃণমূলকর্মী ভিকি যাদব খুনের মামলায় বুধবার আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। লোকলস্কর নিয়ে কাকা অর্জুনও পৌঁছে গিয়েছিলেন আদালত চত্বরে। তখনই দেখা গেল, আকাশে উড়ছে ড্রোন। পাখির চোখে অর্জুনকে নজরবন্দি করার কৌশল? ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের কাছে খবর ছিল, বুধবার আদালত চত্বরে গন্ডগোল হতে পারে। সেই কারণেই বাড়তি নিরাপত্তা রাখা হয়েছিল। কিন্তু অর্জুনের কারণেই কি না, তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, বুধবার ব্যারাকপুর আদালতে পাপ্পুর চেয়ে ‘বড়’ কাউকে পেশ করা হয়নি। তাই অনেকেই দুইয়ে দুইয়ে চার করতে চাইছেন। এমনকি, অর্জুনের ঘনিষ্ঠেরাও ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন, দাদাকে ড্রোন দিয়ে দমিয়ে দেওয়া যায় না।
গত ২১ ডিসেম্বর পাপ্পুকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেই সময়ে সংসদের অধিবেশনের জন্য দিল্লিতে ছিলেন অর্জুন। পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের পরে বুধবার পাপ্পুকে আদালতে হাজির করানো হয়। ফের তাঁকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। অর্জুন যদিও স্পষ্ট বলছেন, ‘‘পাঁচ দিনে পুলিশ কিচ্ছু পায়নি। আবার সাত দিন হেফাজতে নিয়ে আসলে হয়রানি করতে চাইছে।’’
বিজেপিতে যাওয়ার পর অর্জুনের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ মামলা হয়েছিল। তাঁর তৃণমূলে ফেরার কারণ হিসেবে অনেকে বলেন, হয়রানি থেকে মুক্তি পেতেই পুরনো দলে ফিরেছিলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ। বিজেপিতে তাঁর সমস্যা হচ্ছিল না। কিন্তু পাটশিল্পে কেন্দ্রের নীতির সমালোচনা করে বিজেপি ছাড়ার পথ প্রশস্ত করেছিলেন সেই সময়ে। তৃণমূলে ফেরা অর্জুনের ভাইপোর গ্রেফতারি নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘‘এটাই বোধ হয় দলে ফেরার পুরস্কার!’’
পাপ্পু অর্জুনের সব কিছুই সামলান। অর্জুনও মানেন, তাঁর ‘যুদ্ধঘর’ পাপ্পুর মতো কেউ সামলাতে পারবেন না। সেই পাপ্পুকে গ্রেফতার করে আসলে অর্জুনকে ‘শায়েস্তা’ করতে চাইছে বলে মনে করছেন তাঁর অনুগামীরা। ২০১৯ সালের ভোটে ব্যারাকপুরে বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন অর্জুন। বলা ভাল, তৃণমূলের কাছে টিকিট চেয়ে না পেয়ে, বিজেপিতে যোগদান করে ২৯ দিনে একটা লোকসভা কেন্দ্র জিতে নিয়েছিলেন অর্জুন। তাঁর যে ‘দবং’ ভাবভঙ্গি, তা সেই ভোটের পর আরও জোরালো ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল শিল্পাঞ্চলের রাজনীতিতে। কিন্তু সেই অর্জুন অভিষেকের হাত ধরে তৃণমূলে ফেরার পর থেকে ব্যারাকপুরের অনেক নেতাই তা মানতে পারছেন না। পাপ্পুর গ্রেফতারির পর জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের সঙ্গে যে ভাবে অর্জুনের বাক্যুদ্ধ চলেছে, তা তৃণমূলকেও খুব একটা স্বস্তি দেয়নি। শেষমেশ তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী অর্জুনকে ফোন করে ‘শান্ত’ থাকার বার্তা দিয়েছেন। অর্জুনের অনুগামীরাও বলছেন, পাখির চোখ ২০২৪-এর ভোট। কিন্ত প্রশ্ন হচ্ছে, অর্জুনকে কি এ বার টিকিট দেবে কালীঘাট? অর্জুন অনুগামীরা আশাবাদী। আর না দিলে? এ ক্ষেত্রেও তাঁরা বলছেন, দাদা সাংসদ থাকবেনই। এক তরুণ অনুগামীর কথায়, ‘‘আকাশে ড্রোন থাকুক। দাদার পা রয়েছে মাটিতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy