চারিদিকে জল আর জল, তবুও পানীয় জলের খোঁজে এক গৃহবধূ, শুক্রবার গোসাবার কুমিরমারি দ্বীপে। নিজস্ব চিত্র
দূরত্বটা কম নয়। প্রায় চার কিলোমিটার। এক বালতি পুকুরের জলের জন্য শুক্রবার সেই পথশ্রম সহ্য করতেই হল রাজলক্ষ্মীকে।
বেলায় পাখিরালয়ের টাইগার মোড়ে এসে জলের বালতি নামিয়ে রাজলক্ষ্মী তখন হাঁফাচ্ছেন। তার মতো একই দশা মলিনা মণ্ডল, মঙ্গলা সর্দারদেরও। এর পরে উনুন জ্বালানো, জল ফোটানো আছে। কিন্তু রান্নাঘরটাই তো নেই! ভেসে গিয়েছে। রাজলক্ষ্মী বললেন, ‘‘আপাতত রাস্তায় ইট পেতে উনুন জ্বালব। ফোটানো জলই খাব। চারদিক নোনা জলে ডুবে গিয়েছে। দু’একটা পুকুর বেঁচে আছে। সেখান থেকেই সবাই জল আনছেন। এখনও এখানে সরকারি উদ্যোগে জল পৌঁছয়নি।”
দুর্যোগ কাটার পরে গোটা গোসাবা ব্লকে পানীয় জলের সঙ্কট চরমে। প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ দুর্গত হয়েছেন। ইয়াসের জেরে একাধিক নদীর বাঁধ ভেঙে ব্লকের ন’টি দ্বীপের ১৪টি পঞ্চায়েত এলাকাই জলমগ্ন। নদীর নোনাজল ঢুকে পানীয় জলের নলকূপ থেকে বেশির ভাগ মিষ্টি জলের পুকুরের দফারফা করেছে। বৃহস্পতিবার এই দ্বীপাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা ফের প্লাবিত হওয়ায় সমস্যা তীব্রতর হয়েছে। শুক্রবারও জল ঢুকেছে গ্রামগুলিতে।
সরকারি উদ্যোগে পানীয় জলের পাউচ পাঠানোর চেষ্টা করা হলেও রাস্তা জলে ডুবে থাকায় তা সব জায়গায় পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছে না বলে ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে। গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কৈলাস বিশ্বাস বলেন, “দ্রুত পানীয় জল সব জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। নোনাজল একটু সরলেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সমস্ত পাম্প চালু হয়ে যাবে।” বিডিও সৌরভ মিত্র বলেন, ‘‘দুর্গতেরা যাতে পানীয় জল ও খাবার অন্তত পান, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
এ দিনও গোসাবার দুলকি, পাখিরালয়, সোনাগাঁ, রাঙাবেলিয়া গ্রামের মানুষকে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় থাকতে দেখা গিয়েছে। সর্বত্র পানীয় জলের হাহাকার। দুলকির বাসিন্দা সমীর সর্দার বলেন, “খাবার দিতে হবে না। একটু জল দিক অন্তত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy