ঘরে ঘরে জ্বর, কাশি, গলায় সংক্রমণ, মাথা ব্যথায় কাবু বিভিন্ন বয়সের রোগীরা। আবহাওয়ার কারণে সাধারণ ভাবে প্রত্যেকেরই অসুস্থতার নেপথ্যে রয়েছে, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের আক্রমণ। তবে, ওই সমস্ত রোগীর মধ্যে অনেকেরই পরীক্ষায় সোয়াইন ফ্লু ধরা পড়ছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি তাঁরা এ-ও বলছেন, কোন ধরনের ফ্লু-তে আক্রান্ত তা জানার জন্য যে ভাইরাল প্যানেল পরীক্ষা করতে হয়, তা অত্যন্ত খরচ সাপেক্ষ। তাই, সকলেই যে সেই পরীক্ষা করাচ্ছেন, তেমনটাও নয়।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের বিভিন্ন প্রকারভেদের মধ্যে একটি হল সোয়াইন ফ্লু (এইচ১এন১)। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘‘অন্য জীবাণুর তুলনায় ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের দ্রুত মিউটেশন হয়। ফলে এই ভাইরাস খুব তাড়াতাড়ি নিজের চরিত্র বদল করতে পারে। যে কারণে নানা সময়ে নানা ধরণের ফ্লু-র প্রকোপ বাড়ে।’’ চিকিৎসকেরা এ-ও জানাচ্ছেন, একেবারে শুরুর দিকে শূকরের শরীর থেকে সোয়াইন-ফ্লু ভাইরাস মানুষের শরীরে সংক্রমিত হলেও, এখন এটি বাতাসবাহিত সংক্রমণে পরিণত হয়েছে। ইন্টারনাল মেডিসিনের চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আক্রান্তের হাঁচি-কাশি অর্থাৎ ড্রপলেট থেকে ওই ভাইরাসে অন্য জন সংক্রমিত হন। বাতাসে ভেসে বেড়ায় ওই ভাইরাস।’’
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জাতে আক্রান্ত রোগীদের অন্তত ৯০ শতাংশ সাধারণ ভাবে ভাইরাল প্যানেল পরীক্ষা করেন না। কারণ, উপসর্গ বুঝে দেওয়া ওষুধেই কাজ হয়। সাধারণ ভাবে ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হলে শ্বাসযন্ত্রের উপরের অংশ সংক্রমিত হয়। তবে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে ফুসফুসে সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। সংক্রামক রোগের চিকিৎসক যোগীরাজ রায় বলেন, ‘‘ইনফ্লুয়েঞ্জাতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি সঙ্কটজনক রোগীর অনেকেই সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত। তবে ভর্তি না হলে ওই দামি পরীক্ষা সাধারণত কেউ করাচ্ছেন না।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)