প্রণব মুখোপাধ্যায়।
যে দিন প্রণব মুখোপাধ্যায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সে দিন থেকেই তিনি প্রার্থনা করে যাচ্ছিলেন, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন। বার বার তাঁর মনে পড়ে যাচ্ছিল বেথুয়াডহরির সেই রাতটার কথা, যে দিন গাড়ি দুর্ঘটনায় জখম প্রণববাবুর প্রাথমিক চিকিৎসা করে সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন।
বর্তমানে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে কোভিড ডিউটিতে থাকলেও সোমবার ছুটিতে ছিলেন চিকিৎসক পলাশ মজুমদার। সন্ধ্যায় টিভি খুলেই জানতে পারেন, প্রণববাবু আর নেই। টেলিফোনে বিষণ্ণ শোনায় তাঁর গলা, “ভেবেছিলাম, হয়তো এ বারও সুস্থ হয়ে বেরিয়ে আসবেন। কিন্তু এ বার আর শেষরক্ষা হল না।”
২০০৭ সালের ৭ এপ্রিল রাত ৮টা নাগাদ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ঘটে গিয়েছিল সেই দুর্ঘটনা। হুটার বাজিয়ে কলকাতার দিকে যাচ্ছিল তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কনভয়। উল্টো দিক থেকে আসা লোহার রড বোঝাই লরির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে লরির ডান দিকের পিছনের চাকা ফেটে যায়। লরি কাত হয়ে ঘষটে যায় গাড়িতে। প্রণববাবুর মাথা ফাটে। পাশে বসে ছিলেন মানস ভুঁইয়া, তিনিও অল্প চোট পান। গাড়ির চালকও জখম হন। পাইলট কারে তুলে অচৈতন্য প্রণববাবুকে কাছেই বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ পলাশ তখন সেই হাসপাতালের ডিউটিতে। তিনিই প্রায় চল্লিশ মিনিট ধরে প্রণববাবুর মাথায় আট-দশটা সেলাই করেন। রাতে সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কৃষ্ণনগরে জেলা হাসপাতালে। গত ১০ অগস্ট টিভিতে প্রণববাবুর গুরুতর অসুস্থতার কথা জানা ইস্তক পলাশের বারবার মনে পড়েছে সেই সন্ধেটা। বলেছেন, ‘‘এখনও চোখ বুজলে ওঁর সেই রক্তাক্ত মুখটা স্পষ্ট দেখতে পাই। কোনও দিন ভুলতে পারব না।”
পরে সুস্থ হয়ে তরুণ চিকিৎসককে চিঠি পাঠিয়ে তাঁর জীবন বাঁচানোর জন্য পলাশকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন প্রণববাবু। সেই চিঠিটাই অক্ষয় স্মৃতি হয়ে রয়ে গেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy