ভাঙনের আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত।
‘দল ভাঙানোর খেলা’ শুরু হল দার্জিলিং পাহাড়েও।
নতুন দল তৈরির এক বছরের মাথায়, দার্জিলিঙের হামরো পার্টিতে ভাঙনের আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে। দল সূত্রের দাবি, কালীপুজোর মধ্যে শিলিগুড়ি লাগোয়া পিনটেল ভিলেজে দলের দুই জিটিএ সদস্যের সঙ্গে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতা অনীত থাপার বৈঠক হয়েছে। সেখানে হামরো পার্টির আরও দুই সদস্য টেলিফোনে যোগাযোগ করেছেন। শুরু হয়েছে জল্পনা— ছটপুজোর পরেই দার্জিলিং শহর লাগোয়া ঘুম জোড়বাংলো কেন্দ্রের জিটিএ সদস্য প্রোমোসকর ব্লোন এবং পুলবাজার বিজনবাড়ির কেন্দ্রের ভূপেন্দ্র ছেত্রী দল ছাড়তে চলেছেন। দলের সম্ভাব্য ভাঙনের খবর মেনেছেন হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড। তবে দল ভাঙানোর অভিযোগ মানেননি অনীত।
অজয় মঙ্গলবার বেশি রাতে ওই দু’জনের সঙ্গে দলের সমস্ত রকম সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা করেন। যদিও সরকারি ভাবে বহিষ্কারের বিষয় এখনও সামনে আসেনি। পাল্টা চাপ বাড়াতে, ওই দুই সদস্য দল ছাড়ার ঘোষণা করলেই অনুগামীদের নিয়ে ধর্নায় বসে ‘প্রতিবাদ দিবস’-এর ডাক দিয়ে রেখেছেন অজয়, যাকে কার্যত ‘হুমকি’ বলেও মনে করছেন অনেকে। অজয়ের কথায়, ‘‘দুই জিটিএ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে লাভ হয়নি। ওঁরা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যাবেন বলে শুনছি। মানুষ ওঁদের দার্জিলিঙের পরিবর্তনের জন্য জিতিয়েছেন। এখন উল্টো পথে হাঁটলে মানুষই বিচার করবেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘জিটিএ-তে বিরোধী পক্ষ হিসাবে আমরা দায়িত্ব পালন করে যাব। আমাদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করে লাভ নেই। গোটাটাই ষড়যন্ত্র। ওই দুই জিটিএ সদস্যের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক ছিন্ন করছি।’’
জুন মাসে পাহাড়ে জিটিএ ভোট হয়। অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ২৭টি আসন, হামরো পার্টি আটটি আসন, তৃণমূল পাঁচটি আসন জেতে। নির্দলেরা জয় পান পাঁচটি আসনে। ভোটের পরে, কালিম্পং জেলার তিন জন নির্দল জিটিএ সদস্য প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যোগ দেন। তাতে ক্ষমতাসীন দলের সদস্য সংখ্যা বেড়ে হয় ৩০। এ বার হামরো পার্টির শীর্ষ নেতাদের অভিযোগ, গাড়ি, গাড়ির তেল, নিজস্ব দফতরের মতো নানা ‘টোপ’ ও বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে এবং জিটিএ-র সভায় বিরোধীরা অজয়ের নেতৃত্বে মুখ খোলায়, দল ভাঙার খেলা শুরু হয়েছে।
প্রোমোসকর ব্লোন অবশ্য বলেছেন, ‘‘অজয় এডওয়ার্ড অনেক কিছু বলেছেন বলে শুনলাম। তবে আমি দলেই আছি। পদত্যাগ করিনি।’’ আর ভূপেন্দ্র ছেত্রীর দাবি, ‘‘লোকজন নিয়ে বাড়ি ঘেরাও করার কথা বলা হচ্ছে। আমার বা পরিবারের কিছু হলে, অজয় এডওয়ার্ড দায়ী থাকবেন।’’
জিটিএ প্রধান অনীত থাপার দাবি, ‘‘আমি নেতিবাচক রাজনীতি করি না।’’ তাঁর দলের সচিব অমর লামা কিছু বলতে চাননি। তবে দলের এক শীর্ষ নেতার দাবি, ক্ষমতায় থেকে উন্নয়নের কাজে সুবিধা হবে ভেবে, অনেকে বিরোধী দল ছাড়তে চাইছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy