Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গরমিলের অভিযোগ কলেজের নিয়োগেও

এই সব বিভ্রান্তি ও অভিযোগ নিয়ে শীঘ্রই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার কথা ভাবছেন চাকরিপ্রার্থীদের অনেকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৯ ০১:৫৭
Share: Save:

গত কয়েক বছরে প্রাথমিক শিক্ষক, এসএসসি, পিএসসি-র নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। এ বার অভিযোগের তির রাজ্যের কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়োগের দিকেও! ‘স্বজনপোষণের’ পাশাপাশি ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদেরও নিয়োগ তালিকায় ঠাঁই দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে ব্যঙ্গোক্তি। বেশি অভিযোগ ইতিহাসের শিক্ষক তালিকায়। অভিযোগ রয়েছে নৃতত্ত্ব, মনস্তত্ত্ব বিষয়ের নিয়োগ তালিকা নিয়েও।

এই সব বিভ্রান্তি ও অভিযোগ নিয়ে শীঘ্রই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার কথা ভাবছেন চাকরিপ্রার্থীদের অনেকে। কেউ কেউ তথ্য জানার অধিকার আইনে ইন্টারভিউয়ের নম্বরও কমিশনের কাছে জানতে চাইবেন বলে জানিয়েছেন।

কলেজ সার্ভিস কমিশন সূত্রের খবর, এ রাজ্যের কলেজগুলিতে পুরাতত্ত্ব বলে কোনও পৃথক বিষয় নেই। ইতিহাসের সহযোগী বিষয় হিসেবে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ বার ইতিহাসের নিয়োগ তালিকায় ইতিহাসের স্নাতকোত্তরদের বদলে কয়েক জন পুরাতত্ত্বের স্নাতকোত্তরকে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জনের স্নাতকের বিষয় ছিল ভূগোল। পরে পুরাতত্ত্বে তিনি স্নাতকোত্তর করেছেন। তিনি ইতিহাসের শিক্ষক নিয়োগ তালিকায় ঠাঁই পাওয়ায় বিস্মিত অনেকেই।

অন্য এক প্রার্থীর কথায়, ‘‘যিনি কোনও দিন সার্বিক ইতিহাস পড়লেন না, তিনি স্নাতক স্তরে ইতিহাস পড়াবেন!’’ সূত্রের দাবি, শুধু ওই ব্যক্তি নয়, আরও দু’জনের নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অথচ অনেক পিএইচডি, পোস্ট-ডক্টরেট করা প্রার্থীরা সুযোগ পাননি।

কলেজ সার্ভিস কমিশনেরই অন্য একটি সূত্রের দাবি, ইতিহাসের আরও এক প্রার্থীর নিয়োগ নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি অসংরক্ষিত কোটার প্রার্থী হিসেবে পড়াশোনা করলেও নিয়োগ তালিকায় তিনি তফসিলি জাতিভুক্ত প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, ওই চাকরিপ্রার্থী রাজ্যের শাসক দলের ঘনিষ্ঠ এক প্রভাবশালী ইতিহাস শিক্ষিকার ‘অনুগামী’ হিসেবে পরিচিত। ‘তৃণমূলপন্থী’ হিসেবে পরিচিত এক অধ্যাপক ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিলেন। ফলে ওই প্রার্থীর চাকরির পিছনে এই সব ‘সমীকরণ’ কাজ করেছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। এমনকি, ওই চাকরিপ্রার্থীর এক সহপাঠী বলছেন, ‘‘নিয়োগ তালিকা প্রকাশের পরে জানতে পারলাম, উনি নাকি তফসিলি জাতিভুক্ত! এই তথ্য এত বছরে জানা ছিল না।’’

চাকরিপ্রার্থীদের অনেকের বক্তব্য, ইতিহাসের পাশাপাশি নৃতত্ত্ব বিষয়ের নিয়োগ তালিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। সেখানেও নৃতত্ত্ব বিষয়ে অনার্সের বদলে অন্যান্য বিষয়ে অনার্স পাশ করে এসে যাঁরা পরবর্তী কালে নৃতত্ত্বে স্নাতকোত্তর করেছেন, তাঁরাই নিয়োগ তালিকায় বেশি সুযোগ পেয়েছেন বলে দাবি। বহু ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠেছে, ইন্টারভিউ চলাকালীন ঠিক মতো সময় দেওয়া হয়নি। কোথাও কোথাও ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যদের হাবভাবও সন্দেহজনক ঠেকেছে চাকরিপ্রার্থীদের। এক চাকরিপ্রার্থীর কথায়, ‘‘আমাকে প্রশ্ন করা হলেও উত্তর শোনার ধৈর্য ছিল না পরীক্ষকদের। বেরিয়ে আসার পর গোটা বিষয়টি কেমন যেন লেগেছিল।’’

পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান দীপক করের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়েছিল। তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও উত্তর দেননি।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

College Service Commission Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE