ফাইল ছবি
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সফরের আগে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে নতুন জল্পনা তৈরি হল রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপবাবু মঙ্গলবার প্রকাশ্যেই বলেছেন, তিনি দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডার কাছে বঙ্গ বিজেপির জন্য ‘শক্তিশালী অভিভাবকের’ দাবি জানিয়েছেন। যদিও দিলীপবাবু নির্দিষ্ট ভাবে কারও নাম বলেননি। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, দিলীপবাবুর নিশানা বিজেপির আইটি সেলের প্রধান এবং বাংলার সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়ের দিকেই। কারণ, খাতায়-কলমে সহ-পর্যবেক্ষক হলেও বিধানসভা ভোটের পর থেকে বাংলায় বিজেপির সাংগঠনিক সব বিষয়ে সক্রিয় থাকতে দেখা যায় মালবীয়কেই। সাংগঠনিক বৈঠকেও তিনিই নিয়মিত উপস্থিত থাকেন।
পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই বাংলায় পড়ে ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন, শিব প্রকাশেরা। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে দু’শো আসন জয়ের লক্ষ্যের ধারেকাছে যেতে না পারায় বঙ্গ বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব যায় মালবীয়ের কাছে। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান ওই দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজ্য বিজেপিতে কোন্দল মাত্রাছাড়া হয়েছে। প্রকাশ্যে তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বিক্ষুব্ধ শিবিরের নেতারা। পাশাপাশি, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরে কাজের নয়, ‘কাছের মানুষ’দের বসানোর। জয়প্রকাশ মজুমদারের মত বিজেপি-ত্যাগী কিংবা রীতেশ তিওয়ারির মতো শাস্তিপ্রাপ্ত নেতারা প্রকাশ্যেই তাঁকে ‘ট্যুইটার মালবীয়’ বলে কটাক্ষ করেছেন। এমনকি, তিনি ‘বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে বেমানান’ বলে তাঁকে সরিয়ে ত্রিপুরায় বিজেপিকে ক্ষমতায় আনার অন্যতম নেপথ্য কারিগর সুনীল দেওধরকে দায়িত্বে নিয়ে আসা হোক। বিজেপির একটা অংশ এই নিয়ে দিল্লিতে দরবারও করেছে বলে সূত্রের খবর। এ বার সেই দাবি শাহের বঙ্গ সফরেও উঠতে পারে।
এক দিকে পর পর সাংগঠনিক পদাধিকারীর পদত্যাগ, অন্য দিকে একের পর এক নির্বাচনে দলের ক্রমাগত খারাপ ফলাফলে এমনিতেই বেসামাল বঙ্গ বিজেপি। তার মধ্যেই রাজ্যে আসার কথা শাহের। সব মিলিয়ে শাহের সাংগঠনিক বৈঠকে সুকান্ত -অমিতাভকে কাঠগড়ায় তুলে যে ঝড় উঠতে চলেছে, তা কার্যত নিশ্চিত ছিল। তবে সূত্রের খবর, শুধু তাঁরা দু’জনেই নন, শাহের কাছে নালিশ জানানো হতে পারে মালবীয়ের বিরুদ্ধেও।
শাহের বঙ্গ সফর প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে এ দিন ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমি নড্ডাজি’র সঙ্গে দেখা করে বলে এসেছি, আমাদের নেতা-কর্মীরাই পরিশ্রম করে ৩৮% ভোট পেয়েছে। আমরাই ঘুরে দাঁড়াতে পারব। আপনি আমাদের জন্য শুধু এক জন শক্তপোক্ত অভিভাবক পাঠান।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর দাবি, তিনি ‘‘এই তো সবে শুরু। এর পর একে একে নড্ডাজি, প্রধানমন্ত্রী মোদিজী সবাই বাংলায় আসবেন।’’
বিজেপির রাজ্য কমিটির এক নেতার মতে, ‘‘এক জন আইটি সেলের লোককে সাংগঠনিক দায়িত্ব দিলে যা হওয়ার, তা-ই হচ্ছে। রাস্তার আন্দোলন সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণাই নেই। ফলে, আমাদের আন্দোলনের পরিকল্পনা মাঠে মারা যাচ্ছে। কর্মসূচির ধার বাড়ছে না।’’ এই প্রসঙ্গে দিলীপাবুর মন্তব্য, ‘‘যে যার কাছে, যা খুশি বলতেই পারেন। আমাদের দলে সেই গণতন্ত্র আছে।’’ আর রীতেশের বক্তব্য, ‘‘শাহ অনেক দিন পরে আসছেন। যা হবে, ভালই হবে।’’
যদিও রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অমিতজি সাংগঠনিক পদে নেই। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর কাছে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, যে ভাবে সীমান্তবর্তী অঞ্চল দেশের মানুষের জন্য অসুরক্ষিত হয়ে যাচ্ছে, সেই বিষয়গুলি তুলে ধরা হবে। এর বাইরে কেউ কিছু বলবেন কি না, জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy