স্বমূর্তিতে ফিরলেন দিলীপ ঘোষ।—ফাইল চিত্র।
কুকথায় পঞ্চমুখ দিলীপ ঘোষ আবার স্বমূর্তিতে ফিরলেন। ইদানীং তাঁর মুখে কুকথা কম শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু ফের তিনি হুমকি এবং অশোভন উক্তির নজির গড়লেন।
মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘এতদিন প্রতিরোধের রাজনীতি হয়েছে। এ বার প্রতিশোধের রাজনীতি হবে। কর্মীদের বলেছি, মার খেয়ে আমার কাছে এসে কাঁদবেন না। প্রতিশোধ নিয়ে তারপর আসবেন।’’
এর আগে সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদায় এক কর্মীসভায় আরও ‘ভয়ঙ্কর’ কথা বলেন দিলীপবাবু— ‘‘আমি যদি খুন করা শুরু করি, ওদের (তৃণমূল) বংশ লোপাট হয়ে যাবে। তৃণমূলের নেতা-পুলিশকে মারুন। মেরে ফেলে দিন। দায়িত্ব আমার। আমি ওদের বুকের উপর পা দিয়ে হাঁটছি। গলায় পা দিয়ে হাঁটব। কোনও বাপের ব্যাটা বাঁচাতে পারবে না। আমি যে দিন মারব, লাশ খুঁজে পাওয়া যাবে না।’’ নিজের বক্তব্যের সমর্থনে এরপর যুক্তিও সাজিয়েছেন দিলীপবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘এখনও খুন করিনি। তাতেই একাধিক মামলা করা হয়েছে। কিন্তু যে দিন শুরু করব, সে দিন বুঝতে পারবেন। অধিকারী হোন, অথবা চট্টোপাধ্যায়, বন্দ্যোপাধ্যায়— কেউ ছাড় পাবেন না।’’ এ প্রসঙ্গেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমের গ্রেফতারের কথা তুলে তিনি বলেন, ‘‘চিদম্বরমও জেলে যেতে পারেন। ফলে তৃণমূলের নেতা-পুলিশদের রেয়াত করার কোনও অর্থই হয় না।’’
দিলীপবাবুর এই মন্তব্যের তীব্র কটাক্ষ করে এ দিন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের উন্নয়ন স্তব্ধ করতেই এ সব বলছেন দিলীপবাবুরা। রাজ্যে একটা অশান্তি তৈরি করে তাঁরা কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছেন। রাজ্যে বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাঁরা সফল হবেন না।’’
নিন্দে করেছে সিপিএম এবং কংগ্রেসও। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওঁর মুখ দিয়ে নর্দমা বইছে। উনি শয়তান। সে জন্যই খুনের কথা ভাবতে পারেন। রাজ্যের মানুষ এখন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে আছেন। কিন্তু যাঁরা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসবেন বলে দাবি করছেন, তাঁদের দেখে মানুষ শিহরিত হচ্ছেন।’’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের বক্তব্য, ‘‘দিলীপবাবুর কাছ থেকে এ ছাড়া আর কি আশা করা যায়? হিংসার রাজনীতিই তো ওঁদের হাতিয়ার।’’
জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, প্রশাসনের কাজে বাধা দেওয়া এবং বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের জন্য ইতিমধ্যেই দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে জেলা প্রশাসন।
অন্য দিকে, বিতর্কের মধ্যেই এ দিন দুপুরে বিধানসভায় যান দিলীপবাবু। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে দলীয় বিধায়কদের জন্য বড় ঘরের আবেদন করেন। এর পরেই তিনি সটান ঢুকে পড়েন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে। কুশল বিনিময়ের পরে বিধানসভায় বিজেপির বিধায়কদের আসন বন্টন সংক্রান্ত আলোচনা হয় দু’জনের মধ্যে। পরে দিলীপবাবুর কুকথা বিষয়ে পার্থবাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy