Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

পদ্মের প্রেমে কাঁটা, তুলতে হাজির দিলীপ

ফ্ল্যাশব্যাক ২০১৬। রাজ্যে বিধানসভা ভোট। খড়্গপুর কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন প্রেমচাঁদ ঝা। কিন্তু দেখা যায়, দল রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেই ওই কেন্দ্রে মনোনয়ন দেয়। দিলীপ জেতেন।

মালঞ্চয় বিজেপি-র নির্বাচনী কার্যালয়ের উদ্বোধনে দিলীপ ঘোষ।

মালঞ্চয় বিজেপি-র নির্বাচনী কার্যালয়ের উদ্বোধনে দিলীপ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০২:২৯
Share: Save:

তাঁর হাতে রাজ্যে পদ্ম ফোটানোর ভার। পদ্মকাঁটার আঁচড়ও তাঁর অজানা নয়। তাই কি প্রেমহরি ভবনে বসে প্রেমচাঁদের পথের কাঁটা সরানোয় এত মনোযোগ?

ফ্ল্যাশব্যাক ২০১৬। রাজ্যে বিধানসভা ভোট। খড়্গপুর কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন প্রেমচাঁদ ঝা। কিন্তু দেখা যায়, দল রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেই ওই কেন্দ্রে মনোনয়ন দেয়। দিলীপ জেতেন। তাঁর বিধায়ক প্রতিনিধি হন প্রেমচাঁদ।

জাম্প কাট ২০১৯। খড়্গপুর বিধানসভা উপ-নির্বাচন। বিধায়ক দিলীপ এখন মেদিনীপুরের সাংসদ। খড়্গপুরে তাই উপ-নির্বাচন। এ বার শিকে ছিঁড়েছে প্রেমচাঁদের। কোন্দল কাঁটা এড়িয়ে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন তিনি। তাঁকে জেতাতে এ বার পথে নেমেছেন দিলীপ। প্রেমচাঁদ নিয়ে দলের অন্দরে যে অসন্তোষ রয়েছে তা জানেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তাই পদ্ম কাঁটা উপড়ে ফেলতে চেষ্টার কসুর করছেন না তিনি। যেমনটা করলেন রবিবার। রেলশহরের প্রেমভবনে শক্তি প্রমুখ, যুব, মহিলা মোর্চার নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে বসেন দিলীপ। বিজেপি সূত্রের খবর, বৈঠকে উত্তর মণ্ডল সভাপতি অভিষেক আগরওয়ালকে বলতে শোনা গিয়েছে, “কারও ক্ষোভ থাকতে পারে। কিন্তু প্রার্থীকে জেতাতে হবে।” আর দিলীপ বলেন, “২০১৫ সালে আমাদের কাউন্সিলরদের বন্দুকের ভয় দেখিয়ে ভাঙিয়েছিল তৃণমূল। ২০১৬ সালে আমি জেতার পরে মাফিয়ারাজ বন্ধ করেছি। লোকসভাতেও জিতেছি। এ বার পুর-ভোট, তার পরে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই উপ-নির্বাচনে জিততে হবে।”

প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে দেখা মিলছে না প্রেমচাঁদের। পরিজনেরা জানিয়েছেন, শহরের বাইরে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। কিন্তু কোনও অপ্রেমের ফেরে পড়ে যাতে প্রেমচাঁদের ক্ষতি না হয়ে যায় তা দেখতে চেষ্টার কসুর রাখছেন না দিলীপ। শনিবার রাত থেকে রবিবার। দফায় দফায় দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক সারলেন তিনি। বার্তা একটাই— সব দ্বন্দ্ব সরিয়ে রেখে জেতাতেই হবে প্রার্থীকে। শনিবার রাতে রেল বাংলোয় নিজের সাংসদ কার্যালয়ে শহরের মণ্ডল কমিটি ও নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বুঝে নেন পরিস্থিতি। প্রার্থীকে নিয়ে ওঠা প্রশ্নের সুকৌশলে জবাব দিয়ে পদ্ম প্রতীককে জয়ের বার্তা দেন দিলীপ। এ দিন সকালে প্রথমে রেল বাংলোর সাংসদ কার্যালয়ে ও পরে মালঞ্চর প্রেমহরি ভবনে দফায়-দফায় বৈঠক হয়। উদ্বোধন করেন নির্বাচনী কার্যালয়ের।

সব দেখে শহরের এক বিজেপি নেতা বলেন, “প্রেমচাঁদকে প্রার্থী করেছেন দিলীপদা। তাই তাঁকে জেতানোর দায়িত্ব দিলীপদার। এই আসনের সঙ্গে জড়িয়ে দিলীপদার সম্মানও। তাই সম্মান রক্ষায় উনি ফাঁক রাখছেন না। বাকিটা তো কর্মীরা ঠিক করবে।” দিলীপও বলেছেন, ‘‘আমরা জিতেই আছি। শুধু ফল ঘোষণার অপেক্ষা।” একই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘তৃণমূল বাইরে থেকে লোক আনবে শুনেছি। কিন্তু ফেরত যাবে কি না, কী ভাবে যাবে, সেটা আমরা ঠিক করব।’’

বিজেপির একাংশ কিন্তু মনে করিয়ে দিচ্ছেন, প্রদীপ পট্টনায়েকের কথা। যিনি ইতিমধ্যে ‘বিজেপি বাঁচাও কমিটি’ গড়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়াইয়ের কথা জানিয়েছেন। এমনকি, তুলে রেখে‌ছেন মনোনয়নও। দিলীপ অবশ্য বলছেন, ‘‘আমাদের গণতান্ত্রিক দল। অনেকের ইচ্ছা, অনিচ্ছা, রুচি থাকে। কেউ-কেউ বাইরেও বলছেন। যাঁদের একটু ধৈর্য কম তাঁরা বলেন। আমরা শুনছি। কিন্তু সকলের মতামত নিয়ে দল যা সিদ্ধান্ত নেয় কর্মীরা তাঁকেই জেতানোর চেষ্টা করে। এখানেও তাই হবে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy