Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মামলা করে আধার আদায় প্রতিবন্ধীর

গৌরী প্রামাণিক নামে বছর তিরিশের ওই মহিলার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন আরাপাঁচ গ্রামে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শমীক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০২:৪০
Share: Save:

আধার কার্ড সেন্টার জানিয়ে দিয়েছিল, ওই কার্ড করাতে হলে আঙুলের ছাপ জরুরি। কিন্তু যাঁর দু’হাতের দশ আঙুলের মধ্যে সাতটিই আগুনে পুড়ে বিকৃত হয়ে গিয়েছে, তিনি কি আধার কার্ড পাবেন না? এই প্রশ্নের জবাব না-পেয়ে শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক প্রতিবন্ধী মহিলা। অবশেষে উচ্চ আদালতের নির্দেশে আধার কার্ড পেয়েছেন তিনি।

গৌরী প্রামাণিক নামে বছর তিরিশের ওই মহিলার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন আরাপাঁচ গ্রামে। তাঁর আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ রায়চৌধুরী জানান, ছোটবেলায় গৌরীর বাঁ হাতের পাঁচটি এবং ডান হাতের দু’টি আঙুল পুড়ে বিকৃত হয়ে যায়। ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বেড়ে ওঠেন তিনি। পরিচারিকার কাজ করে বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে সংসার চালান গৌরী। বছর চারেক আগে সোনারপুর এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলেন ওই মহিলা। ব্যাঙ্ক তাঁর আধার কার্ডের নম্বর চায়। কিন্তু তাঁর হাতের অবস্থা দেখে সব আধার সেন্টারই তাঁকে জানায়, আধার কার্ডের জন্য আঙুলের ছাপ দেওয়া আবশ্যিক। গত মার্চে বাবার চিকিৎসার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ চান গৌরী। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার জানান, ঋণ পেতে আধার নম্বর লাগবেই।

একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গৌরীর হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া’ ও ব্যাঙ্কের কলকাতার সদর দফতরে চিঠি লিখে আধার কার্ডের জন্য আবেদন জানালেও সেই কার্ড মেলেনি। গত এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের আদালতে মামলা করেন ওই মহিলা। মামলার আবেদনে বলা হয়, আধার-কর্তৃপক্ষের নির্দেশিকাতেই বলা আছে: প্রয়োজনে প্রতিবন্ধীদের বাড়িতে গিয়ে আধার কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা হবে। বিশেষ সফটওয়্যারের ব্যবস্থা রয়েছে প্রতিবন্ধীদের জন্য। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আঙুলের ছাপ দিতে না-পারলে চোখের মণির ছবিই যথেষ্ট। তা সত্ত্বেও আধার কার্ড মেলেনি।

গত ২১ এপ্রিল গৌরীর মামলার শুনানি হয় বিচারপতি বসাকের আদালতে। তিনি আধার-কর্তৃপক্ষের আইনজীবী আরপি সিংহের কাছে জানতে চান, আধার কার্ড পেতে নাগরিকদের বারবার আদালতে আসতে হবে কেন? গৌরীর আধার কার্ডের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আধার-কর্তৃপক্ষকে পাঁচ দিন সময় দেন তিনি। বুধবার বিচারপতি বসাকের আদালতে ওই আইনজীবী জানান, সোনারপুরের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে নিয়ে গিয়ে গৌরীর আধার কার্ডের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করে ২৪ এপ্রিল ওই কার্ড ল্যামিনেশন করিয়ে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তা জেনে বিচারপতি বসাক মামলাটির নিষ্পত্তি করে দেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Aadhaar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy