কানাঘুষো
মঙ্গলবার সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনের শেষ দিন। সকালে রাজ্য কমিটির বৈঠক। তার পরে ঘোষিত হবে নতুন রাজ্য কমিটি। তার আগে কানাঘুষো শুরু হয়েছে নতুন কারা রাজ্য কমিটিতে জায়গা পাবেন, তা নিয়ে। নানাবিধ নাম নিয়ে আলোচনা করছেন প্রতিনিধিরা। কিন্তু কেউই হলফ করে বলতে পারছেন না, কী হবে। বিশেষত, দুই ২৪ পরগনার কারা বাদ পড়বেন, তাঁদের জায়গায় কারা অন্তর্ভুক্ত হবেন, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে দলে। কারণ, এই দুই জেলার সম্মেলনেই ঝক্কি পোহাতে হয়েছিল রাজ্য নেতৃত্বকে। যে জেলায় সম্মেলন হচ্ছে, সেই হুগলির কেউ নতুন রাজ্য কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন কি না, হলে কে হবেন, তা নিয়েও বিস্তর আলোচনা। আলোচনায় রয়েছে এক তরুণ ট্রেড ইউনিয়ন নেতা, এক আদিবাসী নেত্রী এবং সংখ্যালঘু অংশ থেকে উঠে আসা এক নেতার নাম (যিনি যুব অন্দোলনের রাজ্য স্তরের শীর্ষে ছিলেন এক সময়)।
সাজানো ঘটনা
সম্মেলন পর্বেই সিপিএমের এক প্রাক্তন সাংসদের বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে নানাবিধ অভিযোগ করেছেন এক মহিলা। তবে তা নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিপিএমের মধ্যে কিছু ঘটেনি। তবে সম্মেলনে ওই প্রাক্তন সাংসদও থাকায় ফিসফাস জারি আছে। অনেকে ওই পোস্ট খুঁজে নিচ্ছেন। অনেকে স্বগতোক্তির মতো বলছেন, ‘‘না না! এ সব সাজানো ঘটনা।’’ কেউ কেউ আবার দলের কারও ষড়যন্ত্র কি না, সে প্রশ্নও তুলছেন।
গর্জনের প্রস্তুতি
মঙ্গলবার সম্মেলন পর্ব শেষের পরে ডানকুনি ফুটবল মাঠে সমাবেশ করবে সিপিএম। রাজ্য সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশ হলেও মাঠ ভরানোর মূল দায়িত্ব হুগলি এবং হাওড়া জেলারই। বড় জমায়েত করে শক্তি প্রদর্শনে গর্জন করতে চাইছে সিপিএম। সম্মেলনের মধ্যেও দক্ষিণবঙ্গের নেতারা এলাকা থেকে জমায়েত আনার তদারকি করছেন ফোনে-ফোনে।
আরও পড়ুন:
কেয়ার-ট্রেকার
সম্মেলনে আগত প্রতিনিধিদের বিভিন্ন হোটেল, লজ, গেস্টহাউসে থাকার ব্যবস্থা করেছে সিপিএম। সে সব খুবই সাদামাঠা। পাশাপাশি, পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ট্রেকার। সিপিএম এই রাজ্য সম্মেলনে পার্টির অভিমুখকে গ্রামের দিকে করার ডাক দিয়েছে। কাকতালীয় ভাবে, গ্রামীণ জনতার পরিবহণ ট্রেকারেই যাতায়াত করছেন দলীয় সম্মেলনে আগত প্রতিনিধিরা।

সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনে পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ট্রেকার। ছবি: শোভন চক্রবর্তী।
এগিয়ে বাংলা
সম্মেলনের বাইরে মার্ক্সীয় সাহিত্যের স্টল রয়েছে। রয়েছে কমিউনিস্ট আন্দোলনের নেতাদের ছবিও। ছবির পসরায় যেমন রুশ দেশের লেনিন আছেন, তেমনই আছেন কিউবা বিপ্লবের নেতা চে গেভারা। আছেন জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও। বিক্রেতা জানালেন, লেনিন এবং চে-র দু’-একটি ছবি বিক্রি হলেও বেশি বিক্রি হয়েছে জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ছবি। ছবি বিক্রির নিরিখে দিনের শেষে এগিয়ে রইলেন বাংলার দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীই।
(শোভন চক্রবর্তী)