কেকধ্বনি
দুবাই থেকে লন্ডনের উড়ান টানা আট ঘণ্টার। শনিবার রাতে উঠে রবিবার সকালে হিথরোয় নামলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুবাইয়ে নামার আগে মমতার জন্য ‘বঁ ভয়াজ’ (শুভযাত্রা) লেখা কেক সাজিয়ে দেন এমিরেটসের বিমানবালারা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সেই মিষ্টি অভ্যর্থনা গ্রহণ করলেও নিজের হাতে কেক কাটেননি। সহযাত্রীদের দিকে এগিয়ে দেন। তাতেও প্রচুর হাততালি (গৌরবার্থে ‘কেকধ্বনি’)। লন্ডন পর্যন্ত দীর্ঘ উড়ানের সময়টা মমতা প্রায় জেগেই কাটালেন। খোঁজ নিলেন তাঁর সফরসঙ্গীরা ঠিকঠাক আছেন কি না। হিথরোয় বিমান অবতরণের পর সোজা সেন্ট জেমস কোর্ট হোটেলে। রবিবার তাঁর কোনও সরকারি কর্মসূচি নেই। সোমবার থেকে চার দিন টানা ব্যস্ততা।
কেবলই ছবি
দুবাই-লন্ডন উড়ানে সপরিবার আসছিলেন এক বাঙালি তরুণ। আদতে কলকাতার বাসিন্দা। চাকরির সূত্রে রিডিংয়ে থাকেন। স্ত্রী এবং কন্যাকে নিয়ে ছুটি কাটিয়ে ফিরছিলেন টাটা কনসালট্যান্সি সার্ভিসের চাকুরে। তক্কে তক্কে ছিলেন, যদি ম্যাডামের সঙ্গে এই তালে একটা ছবি তোলা যায়। জানালেন, এ বিষয়ে তাঁর বুৎপত্তি আছে। বিলেতে একই শপিং মলে কেনাকাটা করতে গিয়ে কোহলি আর ধোনির দেখা পেয়েছিলেন। ছবি তুলতে ছাড়েননি। এ বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছবি তুলতে পারলে কেল্লা ফতে! কলকাতায়ও নাকি চেষ্টা করেছিলেন। বড্ড বেশি নিরাপত্তা। তাই পারেননি। আকাশপথে হয়ে গেলে মন্দ কী? হল না অবশ্য। বিমান অবতরণের পর ‘ভিভিআইপি’ মমতা দ্রুত অন্তর্হিত হলেন। টিসিএসের চাকুরে অতঃপর পাকড়াও করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র (এখন সফররত সাংবাদিকের অবতারে) কুণাল ঘোষকে। ঠিকই করেছেন। এমন রেকর্ড যাঁর আছে, তিনি কি একেবারে খালি হাতে ফিরবেন?

তিনমূর্তির সামনে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
পুতিন নিপাত যাক!
রবিবারের বিকেলে লন্ডন শহরের পার্লামেন্ট স্কোয়ারে পর্যটকের খুশিয়াল ভিড়। আবহাওয়া খুব প্রসন্ন নয়। মেঘলা। তবে বৃষ্টি ধরে গিয়েছে। ফলে বিগ বেনের আশেপাশে জটলা জমেছে বিস্তর। পার্লামেন্ট স্কোয়ারে মহাত্মা গান্ধীর পূর্ণাবয়ব প্রস্তরমূর্তির বাঁ দিকে ১০০ ফিটের মধ্যে ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল। স্থূল চেহারা খানিক সামনে ঝুঁকে। যিনি বিরক্ত হয়ে গান্ধীকে বলেছিলেন, ‘দ্যাট হাফ-নেকেড ইন্ডিয়ান ফকির!’ ঘটনাচক্রে, তাঁরা দু’জনেই রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে একই জমির বাসিন্দা। গান্ধীর মূর্তির ডানপাশে নেলসন ম্যান্ডেলা। সেই তিনমূর্তির সামনে সবুজ ঘাসে ঢাকা জমির ওপারে ধূমায়িত বিক্ষোভ। নীল-হলুদ পতাকার ছড়াছড়ি। লন্ডননিবাসী ইউক্রেনীয়দের হাতে প্ল্যাকার্ড: ‘পুতিন কিলস্’! গলায় স্লোগান। রবিবার দিনভর তাঁরা এই চত্বরেই রয়েছেন। স্লোগান দিচ্ছেন ‘রুশ আগ্রাসন’ এবং রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে। তবে শান্তিপূর্ণ ভাবে। ধারেপাশে পুলিশ-টুলিশও চোখে পড়ল না। মনে হচ্ছিল, দীর্ঘ বিমানযাত্রার ধকলে ক্লান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হোটেল থেকে বেরোননি। সোমবার থেকে তাঁর সরকারি কর্মসূচি শুরু। সব ঠিক থাকলে দৈনিক হন্টনও চালু হবে। ক্ষমতাশালীর ‘আগ্রাসন’-এর বিরুদ্ধে বরাবর আন্দোলনকারিণী মমতা কি ইউক্রেনীয়দের বিক্ষোভ দেখলে খানিক দাঁড়িয়ে সহমর্মিতা দেখাতেন না?
- মঙ্গলবার বাণিজ্য সম্মেলন যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার হওয়ার কথা সরকারি স্তরে বাণিজ্য-বৈঠক।
- আগামী বৃহস্পতিবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেওয়ার কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।
-
১৮:১৪
বাপু, সংবিধানটাকে রক্ষা কোরো! ঘড়ির কাঁটা পিছিয়ে। ডোনা, হাঁটো তো দেখি। একা একা হবে না, দলে এসো ভাই -
হোমওয়ার্ক করে বাণিজ্যের মানদণ্ড নিয়ে ব্রিটিশদের দরবারে মমতা, শিল্প সম্মেলনের বক্তৃতায় ছুঁলেন সাফল্য ও উন্নয়নের বিভিন্ন বিন্দু
-
কলকাতায় ফুটবল স্কুল খুলছে ম্যান সিটি। লন্ডনে রবিঠাকুরের গানে মমতা। সোনার চেয়েও দামি এবং ঠান্ডায় নো পাকামি
-
লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসে আবির্ভূত ‘দিদি’ মমতা, তবে করে রাখলেন মঙ্গলবারের বাণিজ্যবৈঠকের নান্দীমুখটিও
-
সে বার মহারানির ডাকে প্রাসাদে, এ বার অক্সফোর্ডে সঙ্গী হচ্ছেন মহারাজ! রোদ ঝলমলে লন্ডনের পথে মমতার ‘ওয়ার্ম আপ’