ধূপগুড়ি দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নিয়ে রাজ্যকে কটাক্ষ দিলীপের। —ফাইল চিত্র।
ধূপগুড়ি পথ দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। নিহতদের পরিবার পিছু ২.৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। গুরুতর আহতরা মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা করে পাবেন। অল্পবিস্তর চোট পেয়েছেন যাঁরা, মাথাপিছু ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে তাঁদের। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই নিহতদের ২ লক্ষ এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা হয়েছে। অর্থাৎ সবমিলিয়ে ৪.৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন প্রত্যেক নিহতের পরিবার। গুরুতর আহতরা পাবেন মোট ১ লক্ষ টাকা। তবে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কেন্দ্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে বলে অভিযোগ বিজেপির।
বৌভাতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার রাতে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে পাথরবোঝাই ডাম্পারের নীচে চাপা পড়ে চুরমার হয়ে যায় তিনটি গাড়ি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৩ শিশু-সহ ১২ জনের। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় আরও ২ জনের। বহন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত পাথর বোঝাই করাতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডাম্পারটি উল্টে যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এমনকি, গত বছর মে মাসে ডাম্পারটির ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদও অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছিল। তার পুনর্নবীকরণ না করে গাড়িটি কেন রাস্তায় বার করা হয়েছিল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর থেকেই জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে রাজ্য সরকার। উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ নিজে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন বলেও জানান রবীন্দ্রনাথ। আহতদের দেখতে ইতিমধ্যেই হাসপাতালে গিয়েছেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এবং আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। এ নিয়ে টুইটারে শোকপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রাজ্যের তরফে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা হওয়ার আগেই নিহতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরই রাজ্য সরকারের তরফে নিহতদের জন্য আলাদা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়। তবে আহতদের জন্য বরাদ্দ টাকার অঙ্ক এক থাকলেও, নিহতদের পরিবারে পিছু ক্ষতিপূরণের অঙ্ক কেন্দ্রের থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে দেয় রাজ্য সরকার। তা নিয়েই কটাক্ষ ছুড়তে শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। ফুলবাড়িতে দলের হয়ে সভা করতে গতকাল রাত থেকেই সেখানে রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি নিজেও দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেখানেই ক্ষতিপূরণ নিয়ে তৃণমূল সরকারকে একহাত নেন তিনি। দিলীপ বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমেছে রাজ্য। প্রতিযোগিতা করছে করুক, তাহলে আয়ুষ্মান যোজনার টাকাটাও দিয়ে দিক বরং।’’
তবে ধূপগুড়ির দুর্ঘটনা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের এই তৎপরতা, সাততাড়াতাড়ি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষতিপূরণ ঘোষণা— এ সবের পিছনে ‘রাজনৈতিক কারণ’ আছে বলে মনে করছে তৃণমূল। দলীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, ভোটের আগে চমক দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। অন্য সময় বিপদেআপদে ‘টিকি’ দেখা না গেলেও, এখন প্রচারের সামান্য সুযোগটুকুও হাতছাড়া করতে চাইছেন না তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy