মেয়ের সাফল্যে মায়ের চুমু সুসীতাকে। ছবি: সুব্রত জানা।
গান গাওয়া এবং ছবি আঁকার পাশাপাশি চলছিল পড়াশোনা। কিন্তু জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বাগনানের সুসীতা যে রাজ্যের মেধা-তালিকায় নবম স্থানে উঠে আসবে, তা ভাবতেই পারেননি পরিবারের লোকজনেরা।
এ বার মাধ্যমিকে হাওড়া জেলা থেকে মাধ্যমিকের মেধা-তালিকায় উঠে এসেছে তিন জন। হাওড়া জেলা স্কুলের ছাত্র অভিষেক পাত্র ৬৭৬ নম্বর পেয়ে সপ্তম হয়েছে। ওই স্কুলেরই কনাদ মিত্র ৬৭৩ নম্বর পেয়ে দশম। ৬৭৪ নম্বর পেয়ে গ্রামীণ হাওড়ার মুখ উজ্জ্বল করেছে বাগনান আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুসীতা সামুই।
বিভিন্ন বিষয়ে সুসীতার নম্বর: অঙ্কে ৯৯, ভৌতবিজ্ঞানে ১০০, জীবনবিজ্ঞানে ৯৬, ইতিহাসে ৯৬, ভূগোলে ৯৬, বাংলায় ৯০ এবং ইংরেজিতে ৯৭। সুসীতার দিদি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রী। বাবা মানসবাবু রাজ্য পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ার। সিনেমার ভক্ত সুসীতা অবশ্য ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়। সে বলে, “আমাদের পরিবারে ইঞ্জিনিয়ার অনেক আছেন। কিন্তু চিকিৎসক নেই। তাই চিকিৎসক হতে চাই। তবে, না পারলে আরও পড়াশোনা করে উচ্চ প্রশাসনিক পদে চাকরি করার ইচ্ছে রয়েছে।”
বাগনান শহরেরই বাসিন্দা সুসীতা তার স্কুলে ভর্তি হয় পঞ্চম শ্রেণিতে। শুরু থেকেই সে ছিল ক্লাসের পরীক্ষায় প্রথম। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সুলতা মণ্ডল বলেন, “ও যে মাধ্যমিকে ভাল ফল করবে আমরা জানতাম। গান গাওয়া, ছবি আঁকা এই সবেও ও পারদর্শী। স্কুলের যে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ও সামিল হত। এর মাঝেও ও যে ভাবে পড়াশোনা চালিয়েছে, তা দেখার মতো।”
সুসীতার বাবা বৃহস্পতিবার মেয়ের ফল প্রকাশের আগেই অফিসে চলে গিয়েছিলেন। স্ত্রী শিপ্রাদেবী বসেছিলেন টিভির সামনে। মেয়ের খবর জানতে পেরে খুশিতে কেঁদে ফেলেন। বাড়ি থেকে ফোনে মেয়ের রেজাল্ট জানতে পারেন মানসবাবু। বেলা দু’টোর মধ্যে ফিরে এসে বাড়ির সকলের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন। তাঁর কথায়, “মেয়ের এই ফলাফল হবে ভাবিনি। মেয়ের চার জন গৃহশিক্ষক ছিল। তাঁদের বলে দিয়েছিলাম, মেয়ে পরীক্ষায় কোনও স্থান পাবে কিনা, তার চেয়েও বড় কথা হল পড়াশোনা যেন ভাল ভাবে করে।”
মাধ্যমিকে প্রথম দশ জনের মধ্যে চলে আসায় আনন্দে ভাসছে সুসীতা। বাড়িতে দুপুর থেকেই প্রতিবেশীদের ভিড়। সুসীতা বলে, “স্কুলের শিক্ষিকাদের পরামর্শ, বাবা, মা-সহ পরিবারের সকলের উৎসাহ আমার কাজে লেগেছে। দিদি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে। সে আমাকে বরাবর উৎসাহ দিয়ে গিয়েছে। পাশে ছিলেন প্রতিবেশীরাও।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy