আটক সোনার বিস্কুট।
একেই বলে সর্ষের মধ্যে ভুত! বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দর থেকে সোনার বিস্কুট নিয়ে এদেশে এসে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে গেল এক বাংলাদেশি ক্লিয়ারিং ও ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ বিএসএফের ৪০ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানেরা পেট্রাপোল থেকে মহম্মদ মনিরুজ্জামান নামে ওই যুবককে পাকড়াও করে। বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, মনিরুজ্জামানের বাড়ি বাংলাদেশের সারষা থানার রাজনগর এলাকায়। তার কাছ থেকে ৩৭টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার হয়েছে। ব্যাটালিয়নের কমাণ্ডান্ট বরজিন্দার সিং বলেন, “আটক করা সোনার বিস্কুটের ওজন ৪ কেজির উপরে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম প্রায় এক কোটি টাকা। দিন দুয়েক আগে আমাদের কাছে খবর আসে। সেইমত আমরা সতর্ক ছিলাম। এ দিন মনিরুজ্জামানকে হাতেনাতে ধরা হয়।’’
বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে সোনার বিস্কুট এদেশে পাচার হওয়াটা নতুন নয়। সাম্প্রতিক সময়ে এই সীমান্তে ৩ কোটিরও বেশি টাকার সোনার বিস্কুট আটক করেছে বিএসএফ। দু-দেশের কয়েকজন পাচারকারিকেও ধরা হয়। বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, সব চেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল বন্দরে আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত দু’দেশের ক্লিয়ারিং ও ফরওয়াডিং এজেন্টদের একাংশও সোনা পাচারে যুক্ত হয়ে পড়ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ৩ জন এবং এদেশের ২ জন এজেন্ট ধরা পড়েছে বলে বিএসএফের দাবি। দু’ দেশের এই সব এজেন্টরা বাণিজ্যের প্রয়োজনে নির্দিষ্ট কার্ড দেখিয়ে দু’দিকে অবাধে যাতায়াত করেন। এঁদের উপর নজরদারি সে ভাবে থাকে না। তারই সুযোগ নিয়ে সোনা পাচার করা হচ্ছে বলে দাবি বিএসএফের।
ধৃত মহম্মদ মনিরুজ্জামান।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “আমরা বিএসএফ এবং শুল্ক দফতরের কাছে দু-দেশের মধ্যে যাতায়াত করা এজেন্টদের উপর নজরদারি বাড়াতে অনুরোধ করেছি।’’ তাঁর দাবি, বেনাপোলে বাংলাদেশের ২ থেকে ৩ হাজার এজেন্ট রয়েছে। যাঁদের মধ্যে পেট্রাপোলে আসার প্রয়োজন রয়েছে ২০-৩০ জনের। বাকিরা অন্য কাজে ঢুকছেন। শুল্ক দফতরের পক্ষ থেকে বেনাপোল শুল্ক দফতরের কাছে এজেন্টদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। বরজিন্দার বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরা শুল্ক দফতরের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিএসএফের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। সোনা পাচার ঠেকাতে বিএসএফ, শুল্ক ও অভিবাসন দফতরের জয়েন্ট টিম তৈরি করা হচ্ছে।’’
বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন আটক যুবক জিনসের প্যান্টের তলায় দু-পায়ে হাঁটু সেলোটেপ দিয়ে এঁটে বিস্কুটগুলি এনেছিল। জেরায় সে জানিয়েছে,এক একটি বিস্কুটের জন্য তার পাওয়ার কথা ৫০০টাকা করে। সে মূলত ক্যারিয়ারের কাজ করে। বেনাপোলের একটি দোকান থেকে তাকে বিস্কুটগুলি দেওয়া হয়েছিল। পেট্রাপোলে একটি হোটেলের সামনে থেকে জনৈক দেবনাথ নামে একজনের তার কাছ থেকে বিস্কুটগুলি নেওয়ার কথা ছিল। তবে একই সঙ্গে সে জানিয়ছে, এর আগে সে কখনও বিস্কুট নিয়ে আসেনি।
সীমান্তে সোনা পাচার বেড়ে যাওয়া নিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মত, এ দেশে কেন্দ্রীয় সরকার সোনা আমদানির উপর শুল্ক কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়ার ফলেই সোনা পাচার বেড়ে গিয়েছে।
ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy