Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

ডাকাতি করতে এসে গণধর্ষণ কিশোরীকে

ডাকাতি করতে ঢুকে বাবা-মার সামনে থেকেই কিশোরী মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করল দুষ্কৃতীরা। ধর্ষণের সময়ে মুখের ঢাকা সরে যাওয়ায় মেয়েটি এক জনকে চিনতে পেরেছিল। তাকে ‘দাদা’ বলে ডেকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পায়েও ধরেছিল সে। উল্টে মাটিতে ঠুকে তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বেড়মজুর ২ পঞ্চায়েতে ঝুপখালি গ্রামের ঘটনা। সোমবার রাতে উদ্ধারের পরেই কিশোরীকে স্থানীয় খুলনা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা করায় পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ০২:০৯
Share: Save:

ডাকাতি করতে ঢুকে বাবা-মার সামনে থেকেই কিশোরী মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করল দুষ্কৃতীরা।

ধর্ষণের সময়ে মুখের ঢাকা সরে যাওয়ায় মেয়েটি এক জনকে চিনতে পেরেছিল। তাকে ‘দাদা’ বলে ডেকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পায়েও ধরেছিল সে। উল্টে মাটিতে ঠুকে তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়।

উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বেড়মজুর ২ পঞ্চায়েতে ঝুপখালি গ্রামের ঘটনা। সোমবার রাতে উদ্ধারের পরেই কিশোরীকে স্থানীয় খুলনা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা করায় পুলিশ। তার বর্ণনার ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ ওসমান মোল্লা নামে এক দাগী দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” ইতিমধ্যে রাজনৈতিক জলঘোলাও শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মেয়েটির বাবা ধান কেনাবেচার ছোটখাটো কারবার করেন। দরমায় ঘেরা টালি ও অ্যাসবেস্টসের চালের বাড়িতে স্ত্রী এবং এক মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার। সোমবার তিনি ৭০ হাজার টাকার ধান বিক্রি করেছিলেন। পাওনাদারের ৫০ হাজার টাকা মিটিয়ে বাকি টাকা বাড়িতে আনেন। দুষ্কৃতীরা ধান বিক্রির খবর পেয়ে গিয়েছিল। রাত ১টা নাগাদ তারা বাড়িতে হামলা চালায়।

ব্যবসায়ী পুলিশকে জানিয়েছেন, মুখে কাপড় বাঁধা তিন জন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকেছিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর দু’টি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় তারা। তার পর কপালে রিভলভার ঠেকিয়ে ধান বিক্রির টাকা চায়। ভয়ে তিনি ২০ হাজার টাকা দিয়ে দেন। গয়নাগাটিও দেন। আর টাকা নেই বললেও ডাকাতেরা তা বিশ্বাস করেনি। উল্টে স্বামী-স্ত্রীকে মারধর করে। মেয়েটির বাবার কথায়, “মারধর করে ওরা আমাদের দু’জনের হাত-পা বেঁধে দেয়। শ্যালো পাম্পটা তুলে নেয়। মেয়েটাকেও উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেখে আমরা অনেক কাকুতি-মিনতি করি। ওরা বলে, ‘বাকি টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনিস।’ চিৎকার করলে মেয়েকে মেরে ফেলবে বলে হুমকিও দিয়ে যায়।”

আতঙ্কে অনেক ক্ষণ স্বামী-স্ত্রী আর নড়াচড়া করেননি। পরে ডাকাতেরা কাছাকাছি নেই বুঝে চিৎকার করতে শুরু করেন। তা শুনে প্রতিবেশীরা এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খানিকক্ষণ খোঁজাখুজির পরে বাড়ির কাছেই ধানজমিতে মেয়েটিকে বিবস্ত্র ও অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া যায়। খুলনা হাসপাতালে পরীক্ষা ও প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি ফিরে মেয়েটি পুলিশকে জানিয়েছে, ধর্ষণের সময়ে এক জনকে চিনতে পেরে ‘দাদা’ বলে পায়ে ধরেছিল সে। লাভ হয়নি। মাটিতে ঠুকে তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। তার পর আর তার কিছু মনে নেই। তার দাদুর অভিযোগ, ওসমান ধরা পড়ার পরে নানা ভাবে তাঁদের শাসানো হচ্ছে।

ধৃত ওসমান তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত হওয়ায় রাজনীতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। সন্দেশখালির সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের দাবি, ‘‘গ্রামবাসী ও দলীয় সূত্রে জানতে পেরেছি, ডাকাতি এবং গণধর্ষণে জড়িতরা তৃণমূল আশ্রিত।’’ সন্দেশখালি ব্লক তৃণমূল সভাপতি লক্ষ্মণ অধিকারী পাল্টা বলেন, “ওসমানরা আগে সিপিএম করত। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর

অনেকেই দলে আসছে। তবে দল কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। ঘটনার কথা জানতে পেরে আমিই প্রথম থানায় গিয়ে অপরাধীদের ধরতে বলি। সিপিএম নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

sandeshkhali gang-rape
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy