নির্বাচনের মুখে গণ্ডগোলের রাশ টানতে কিছু দিন ধরেই চোলাই উচ্ছেদ অভিযানে গতি বেড়েছে আরামবাগ মহকুমায়। কোথাও পুলিশ এবং আবগারি দফতর যৌথ ভাবে অভিযান চালাচ্ছে। কোথাও দুই দফতর পৃথক ভাবেও কাজ করছে। আবার দুই দফতরকে নিয়ে মহকুমাশাসক এবং বিডিওদের তত্ত্বাবধানেও চলছে অভিযান। প্রশাসনের এই সাঁড়াশি হানায় শুধুমাত্র গত মঙ্গলবার রাতেই আরামবাগ-গোঘাট-খানাকুল-পুড়শুড়ার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ৫৫ হাজার লিটারেরও বেশি চোলাই বাজেয়াপ্ত ও নষ্ট করা হয়েছে। মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, “এলাকায় বিশৃঙ্খলা এড়াতে চোলাই উচ্ছেদ অভিযান চলবে।”
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমায় অপরাধমূলক বা হিংসাত্মক ঘটনাগুলির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার পিছনে সিংহভাগই নানা সহজলভ্য মাদক সেবনের নজির পাওয়া গিয়েছে। নির্বাচন কমিশনও ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকে ফল ঘোষণা পর্যন্ত লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকান থেকেও মদ বিক্রির হিসেব চেয়ে পাঠিয়েছে।
আরামবাগ মহকুমা জুড়ে সবচেযে সহজলভ্য মাদক বলতে চোলাই মদ। প্রায় সব গ্রামেই একাধিক চোলাইয়ের ঠেক আছে। পুলিশ এবং আবগারি দফতরের হিসাবে মহকুমার চারটি থানা এলাকা গোঘাট-আরামবাগ-পুড়শুড়া এবং খানাকুলের বিভিন্ন গ্রামে চোলাই মদ তৈরির ভাটি আছে প্রায় শ’তিনেক। কোথাও কোথাও তো চোলাই প্রায় কুটির শিল্পের আকার নিয়েছে। পুড়শুড়ার রাউতাড়া গ্রাম-সংলগ্ন আকবরী খালের দু’পাড় জুড়ে যেমন ৪৫টি চোলাইয়ের ভাটি চলে। গোঘাটের মথুরাতেও প্রায় একই সংখ্যক ভাটি আছে। পুড়শুড়ার ফুলপুকুর, নিমডাঙ্গী, খানাকুলের নতিবপুর, মাড়োখানা, রাজহাটি, বন্দর, আরামবাগের সুজলপুর, বাতানল, গৌরহাটি বারোয়ারিতলা, গোঘাটের দামোদরপুর, কানাইপুর, পশ্চিমপাড়া ইত্যাদি বহু গ্রামে চোলাইয়ের ঠেক বহু পুরনো। ওই সমস্ত ভাটি থেকে মহকুমার গ্রামগুলি ছাড়াও সংলগ্ন বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন গ্রামে চোলাই পৌঁছয়। আরামবাগ আবগারি দফতরের মহকুমাশাসক জানান, পুলিশ এবং আবগারি দফতর সারা বছর ধরেই চোলাই উচ্ছেদ অভিযান চালালেও এলাকাগুলিতে নিয়মিত নজরদারি সম্ভব হয়নি। ফলে উচ্ছেদ অভিযানের দিন কয়েক পরেই অনেক ক্ষেত্রে আগের অবস্থায়ই ফিরে আসে। আবগারি দফতর সুত্রে জানা যায়, শুধু পুড়শুড়ার রাউতাড়াতেই প্রতিদিন গড়ে চোলাই মদ তৈরি হয় ৮ হাজার লিটার। আরামবাগ আবগারি দফতরের ওসি চিরঞ্জীব সরকার বলেন, “চোলাই মদ উচ্ছেদ অভিযানের ক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা চাইছি আমরা। সেই সহযোগিতা পেলে তবেই নির্মূল করা সম্ভব হবে। মহকুমার সমস্ত চোলাই ভাটিগুলিতে দৈনিক তদারকির সরকারি পরিকাঠামো নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy