গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে দু’জায়গাতেই বামেদের কাছে হেরে গিয়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। এক জায়গায় পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতা চলে যায় হাত থেকে। আর অন্য জায়গায় দল রীতিমতো পর্যুদস্ত হয় বামেদের কাছে। স্বভাবতই বলাগড় আর পাণ্ডুয়া ব্লক নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের মাথাব্যথা কম নয়। এই দুই জায়গায় জনসভা দিয়েই আজ হুগলিতে লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, মমতা হুগলিতে আসবেন হেলিকপ্টারে। বেলা ২টোয় প্রথম সভা বলাগড় ব্লকের জিরাটের পাঁচপাড়া ফুটবল ময়দানে। পাশের মাঠেই হেলিপ্যাড করা হয়েছে। সেখান থেকে মমতা উড়ে যাবেন পাণ্ডুয়ায়। পাণ্ডুয়ার কলবাজারে কাছে কোহিনূর চালকলের মাঠে জনসভায় বক্তৃতা দেবেন তিনি। রবিবার দু’জায়গায় সভার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে যান তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্ত, পরিষদীয় সচিব অসীমা পাত্র, বিধায়ক তপন মজুমদার, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহবুব রহমান প্রমুখ। হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগ নিজে অবশ্য প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন।
রাজ্য তৃণমূল সূত্রের খবর, দু’টি সভাই যে হেতু চড়া রোদে হবে, মঞ্চে যেন রোদ সরাসরি প্রবেশ করতে না পারে তা দেখা হচ্ছে। মঞ্চে যাতে বেশি লোক না ওঠেন, সে ব্যাপারেও কড়া নির্দেশ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিশেষ বাহিনী (এসপিজি) এ দিন থেকেই সভামঞ্চ এবং হেলিপ্যাডের দায়িত্ব নিয়ে নেয়।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, হুগলির দু’টি সভা শেষ করে বর্ধমানের জামালপুরে যাবেন মমতা। আলোর অভাব বা নিরাপত্তাজনিত কারণে যদি হেলিকপ্টারে সেখানে যাতায়াত করতে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের নিষেধাজ্ঞা থাকে, সে জন্য সড়ক পড়েও মুখ্যমন্ত্রীর জামালপুরে যাওয়ার বন্দোবস্ত থাকছে।
এক বছর আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়েও পাণ্ডুয়ায় প্রচারে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গোটা জেলার নিরিখে অবশ্য এই ব্লকেই সবচেয়ে খারাপ ফল হয় তৃণমূলের। ১৬টি পঞ্চায়েতের মধ্যে হাতেগোনা ৩টি দখল করে তারা। পঞ্চায়েত সমিতির ১৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পায় মাত্র ১২টি। বাকিগুলি বামেদের। ৩টি জেলা পরিষদ আসনের সবগুলি বামফ্রন্টের ঝুলিতে যায়। দলের এক জেলা নেতা বললেন, “এখানে সিপিএমের হাতে এখনও আমাদের মার খেতে হচ্ছে। লোকসভায় আমাদের দলীয় প্রার্থী নিশ্চিত ভাবেই জিতবেন জিতবেন। কিন্তু পাণ্ডুয়া-বলাগড়ে কতটা কী করা যায়, সেটাও দেখতে হবে। এখানে ভোটের বিচারে দলের পরিস্থিতি ভাল করার চেষ্টা চলছে। দিদি এলে কর্মীরা উজ্জীবিত হবেন।” প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ দেওয়াল লিখন নিয়ে তৃণমূলের কর্মীদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। কয়েক জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের মাথা ফাটে। পরে অবশ্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে।
বস্তুত, গোটা জেলা জুড়ে যেখানে তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’-এর অভিযোগ বিরোধীদের গলায়, সেখানে একমাত্র পাণ্ডুয়াতেই এর বিপরীত চিত্র। জেলায় মাত্র দু’টি বিধানসভা বামেদের। তার মধ্যে একটি পাণ্ডুয়া। পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে মহানাদ হাইস্কুলের মাঠে সভায় এসে খোদ মমতা অভিযোগ করেছিলেন, বিধানসভা ভোটে এখানে রিগিং করে জিতেছে সিপিএম।
বলাগড় ব্লকেও পঞ্চায়েত ভোটের নিরিখে কিছুটা পিছিয়ে তৃণমূল। এখানে ১৩টি পঞ্চায়েতের ৮টি বামেদের দখলে। পঞ্চায়েত সমিতিও হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। দলের নেতারা অবশ্য সে সব হিসেব ধর্তব্যের মধ্যে রাখছেন না। দলের জেলা সভাপতি তপনবাবুর কথায়, “আমাদের দলের সবাই এককাট্টা হয়ে লড়াই করছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও অভূতপূর্ব উত্সাহ লক্ষ্য করছি। সকলেই দিদির আসার অপেক্ষায় সময় গুনছেন। সিপিএম কোনও জায়গাতেই দাঁত ফোটাতে পারবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy