ফাইল চিত্র।
ইলিশ-আশা নিয়ে এ পারের ইলিশরসিকদের প্রতি করুণায় ঢাকা কি কল্পতরু হয়েছে? তবে হলেও আশ্বাস মাফিক ইলিশ পুব থেকে পশ্চিমে ঢোকা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গড়িয়াহাট, মানিকতলায় সবে দেখা মিলেছে পদ্মার রজতকান্তি মৎস্য কুলতিলকের। দুপুরে ঢাকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ইলিশ-সংক্রান্ত নয়া ঘোষণা, আরও ২৫২০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রফতানি করা যাবে। অর্থাৎ পূর্ব ঘোষিত ২০৮০ মেট্রিক টনের সঙ্গে যোগ করলে মোট ৪৬০০ মেট্রিক টন। গত বছরের অনুমোদিত ২০০০ মেট্রিক টনের যা দ্বিগুণেরও বেশি। কিন্তু সেই সঙ্গে তাদের ঘোষণা, ইলিশ রফতানির মেয়াদ ১০ অক্টোবর নয়, ৩ অক্টোবরের মধ্যেই সারতে হবে। তাতে এ পারের বাঙালির ইলিশ-আশা লাফিয়ে উঠেই কার্যত ধক করে নিভে যাওয়ার জোগাড়। এত দ্রুত এত ইলিশ আমদানি বা রফতানি কার্যত অসম্ভব বলেই ধরে নিচ্ছেন এ পার, ও পার দুই বাংলার ইলিশ কারবারিরাই।
তবে ৪ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করছে বাংলাদেশ। তাই এ দেশে ইলিশ রফতানিও ৩ অক্টোবরের পরে বন্ধ রাখা হচ্ছে বলেই ধারণা। তবে এই পরিস্থিতিতে এ রাজ্যে ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ দিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনার মহম্মদ ইমরানের কাছে দরবার করেছেন। তাঁর আর্জি, আপাতত ৩ অক্টোবর পর্যন্ত যা ইলিশ ঢোকার ঢুকুক। কিন্তু ২২ অক্টোবরের পরে ঢাকার ঘোষণা অনুযায়ী ধাপে ধাপে বাকি ইলিশও ঢুকতে দেওয়া হোক। আনোয়ারের কথায়, ‘‘ইলিশ বাজার এবং পরিকাঠামোর যা অবস্থা, তাতে গড়ে এক-এক দিনে এ পার বাংলায় বড়জোর ৫০ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ ঢুকতে পারে। ৩ অক্টোবরের মধ্যে ঢাকার উপহারের সামান্য ইলিশই ঢুকতে পারবে!’’ বুধবার দু’দিন ধরে গাড়ি বেনাপোলে ভিড় করায় ৮০ মেট্রিক টন ইলিশ ঢুকেছিল। এ দিন ঢুকেছে আরও ৪০ টন। কলকাতা বা রাজ্যের অন্যত্র এ দিন ইলিশের দর ছিল সাইজ় অনুযায়ী ৭০০-৮০০ থেকে ১২০০-১৩০০ টাকা কেজি। ঢাকার ইলিশ-কারবারি মহম্মদ রফিকুল ইসলাম বলছেন, ‘‘এ বার একেবারে ফার্স্টক্লাস ইলিশ ইন্ডিয়ায় যাচ্ছে। এত অল্প সময়ে অত ইলিশ পাঠানো সম্ভব নয়!’’ প্রধানত বরিশালের কাছে মনপুরা, হাকিমদ্দিন, তজিমুদ্দিন, পাথরঘাটা, মহীপুরের সেরা ইলিশ ঢাকা পাঠাচ্ছে। প্রথমে ৫২টি সংস্থাকে ৪০ মেট্রিক টন করে ইলিশ রফতানির ছাড়পত্র দেয় ঢাকা। এর পরে আরও ৬৩টি সংস্থাকে সুযোগ দেওয়া হয়। রফিকুল বলছেন, ‘‘মনে হচ্ছে বেশি সংস্থাকে সুযোগ দিতেই ইলিশের পরিমাণ বাড়ানো হল। কিন্তু তাতে কারও লাভ হবে না।’’ যশোরের ইলিশ -কারবারি মহম্মদ কুদ্দুসের কথায়, ‘‘ইন্ডিয়ায় পুজোয় ইলিশ পাঠাতে চাই। নইলে ইলিশের বাড়তি জোগানে বাংলাদেশ ভাল দাম পাব না! কিন্তু এ বার বেশি ইলিশ পাঠানো যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy