জনস্রোত: বাবুঘাটে গঙ্গাসাগর যাত্রীদের অস্থায়ী ক্যাম্পে লাগামছাড়া ভিড়। সোমবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
দাবানলের মতো কোভিড ছড়ানোর আবহে যে গঙ্গাসাগর মেলা আয়োজন ঘিরে এত উদ্বেগ, আনুষ্ঠানিক ভাবে তার উদ্বোধন হল সোমবার। মন্ত্রী, প্রশাসনের কর্তারা উপস্থিত থাকলেন। প্রতিশ্রুতি রইল আদালতের নির্দেশ মতো করোনা-বিধি মেনে মেলা আয়োজনের। কিন্তু তার পরেও সেই বিধিভঙ্গের ছবি চোখে পড়ল দিনভর।
বিচ্ছিন্ন ভাবে কোথাও কোভিড পরীক্ষা হচ্ছে, তো কোথাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেফ-হোমের প্রস্তুতি। তীর্থযাত্রীদের মাস্ক পরে থাকতে বলার অনুরোধ করা হচ্ছে নাগাড়ে। প্রয়োজনে ব্যারিকেড করে এ বার সাগর-স্নান রোখার কথা বলছে প্রশাসন। কিন্তু এই সমস্ত কিছুর পরেও উদ্বেগের ছবি সর্বত্র। বাবুঘাটের অস্থায়ী ক্যাম্প, সেখান থেকে আসার বাস, ভেসেল— সর্বত্র ঠাসাঠাসি ভিড়। অনেকে মাস্ক পরেননি, অনেকের তা ঝুলছে গলায়। কোভিডের কথা বলে গেরুয়াধারীদের অনেককে নিয়ম মানাতে হিমশিম খাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারা। প্রশ্ন উঠছে, এর পরে আরও ভিড় বাড়লে, তখন কোথায় থাকবে দূরত্ব-বিধি? মাস্ক পরতেই বা বলা হবে ক’জনকে?
এ বার গঙ্গাসাগর মেলায় শিবির করে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। এ দিন সকালে গঙ্গাসাগরের কে-১ বাসস্ট্যান্ডের কাছে তেমনই একটি শিবির বসে। খোলা আকাশের নীচে সেখানেই নমুনা সংগ্রহ করতে দেখা যায় স্বাস্থ্যকর্মীদের। পরীক্ষা করানোর জন্য লাইন দেন মেলায় আসা পুণ্যার্থীদের অনেকেই।
এ প্রসঙ্গে মেলা অফিসার তথা চিকিৎসক সৌগতেন্দ্র বসু বলেন, “খোলা জায়গায় করোনা পরীক্ষায় কোনও সমস্যা নেই।” তবে ভিড়ের কথা মেনে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। পরে প্রশাসনের তরফে ওই শিবির বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এ বার সমুদ্র স্নানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ দিনও অনেক পুণ্যার্থীকে সমুদ্রে স্নান করতে দেখা যায়। সাগরের সার্কিট হাউস চত্বরে এ দিন মেলার উদ্বোধন করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা ও বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা। মেলা উপলক্ষে প্রকাশিত বইয়ে মেলার গাইড ম্যাপ-সহ ও জেলার শীর্ষ আধিকারিকদের ফোন নম্বর রয়েছে। জেলাশাসক বলেন, “আদালতের নির্দেশ মতো সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বছর আমরা ই-স্নান, ই-দর্শন, ই-পুজোর ব্যবস্থা করেছি। ই-স্নানের জন্য ইতিমধ্যে ৬০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। মেলার কোথাও যাতে ৫০ জনের বেশি পুণ্যার্থীর জমায়েত না হয়, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” যদিও ভিড় আরও বাড়লে, তা কী ভাবে সম্ভব, সে বিষয়ে প্রশ্নচিহ্ন থাকছেই।
দুপুর থেকে বঙ্কিম হাজরা ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা কচুবেড়িয়া ঘাট-সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন। মাস্কহীন পুণ্যার্থীদের মাস্ক পরিয়ে দিতে দেখা যায় মন্ত্রীকে। মাইক হাতে মানুষকে বিধি মানার জন্য সতর্কও করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, “আদালতের নির্দেশ মতো প্রশাসন সব রকমের প্রস্তুতি নিয়েছে। কোভিড বিধি মানার উপর আমরা জোর দিচ্ছি। কোথাও যাতে বেশি জমায়েত না হয়, তা দেখার জন্য স্বেচ্ছাসেবকরা সর্বদা প্রস্তুত।”
কিন্তু পুণ্যার্থীর তুলনায় পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা আর তীর্থে আসা মানুষের বড় অংশের মধ্যে সচেতনতার অভাবের কারণে এ বার সাগর নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy