—প্রতীকী চিত্র।
শহরে নতুন মেট্রোপথে পরিষেবা শুরু করার প্রস্তুতি এবং সরকারি উদ্বোধনের তোড়জোড়ের মধ্যে যেন কোনও সমন্বয় নেই। কখনও উদ্বোধনের সরকারি তৎপরতায় ট্রেন এসে দরজায় কড়া নাড়লেও প্রস্তুতি শেষ হয় না। আবার কখনও পরিষেবা শুরুর যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রাখা হলেও মাসের পর মাস উদ্বোধনের ডাক আসে না। বৈপরীত্যের এই জোড়া ধাক্কায় অপেক্ষা ও দুর্ভোগ বাড়ে যাত্রীদের।
যেমন, নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোপথে পরিষেবা শুরু করার জন্য রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের ছাড়পত্র পাওয়ার পরে প্রায় বছর ঘুরতে চলেছে। অথচ, ওই মেট্রোপথের উদ্বোধন এখনও হয়নি। বার দুয়েক সরকারি তরফে উদ্বোধনের মহা-তৎপরতার পরেও এখনও যাত্রীদের কাছে অধরাই রয়ে গিয়েছে ওই মেট্রোপথে যাত্রা। এখন লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের ওই মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন হতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। যদিও কী আকারে এবং কত ক্ষণ পরিষেবা চলবে, তার সব কিছুই অনিশ্চিত।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে জোকা-তারাতলা মেট্রোর উদ্বোধনের সময়েই নিউ গড়িয়া-রুবির ৫.৪ কিলোমিটার মেট্রোপথে পরিষেবা চালু করার তোড়জোড় শুরু হয়। এক বারে একটি করে ট্রেন চালানোর জন্য ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে রেলওয়ে সেফটি কমিশনার শর্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় অনুমতি দেন। তড়িঘড়ি স্টেশনের দায়িত্ব দিয়ে মেট্রোকর্মীদের বদলি করা হয়। কিন্তু তার পরে মন্ত্রকের তরফে সাড়া না মেলায় পুরো প্রক্রিয়া শ্লথ হয়ে যায়।
পুজোর আগে মেট্রো কর্তৃপক্ষ নিউ গড়িয়া-রুবি ছাড়াও শহরের আরও কিছু মেট্রো প্রকল্প সম্পূর্ণ করে খুলে দেওয়া হবে বলে জানালেও বাস্তবে অবশ্য কিছুই সম্ভব হয়নি। পরে মেট্রো কর্তৃপক্ষ বেলেঘাটা পর্যন্ত মেট্রোপথ নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করে পরিষেবা খুলে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়ার কথা জানান।
গত ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কলকাতা সফরের জল্পনা উস্কে উঠতেই ফের নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রো উদ্বোধনের বিষয়টি গতি পায়। রেল মন্ত্রক উদ্বোধনের সম্ভাব্য করিডরের খোঁজখবর নিতেই মেট্রো কর্তৃপক্ষ রুবি পর্যন্ত মেট্রোপথের কথা জানিয়েছিলেন। এর পরে ওই পথের উদ্বোধন হচ্ছে ধরে নিয়ে উত্তর-দক্ষিণ এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো থেকে ফের কর্মীদের একাংশকে বদলি করে সেখানে আনা হয়। তাঁরা কাজে যোগ দিতেও শুরু করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সফর বাতিলের জেরে মেট্রোর উদ্বোধনও থমকে যায়। ফলে উত্তর-দক্ষিণ ও ইস্ট-ওয়েস্টের পরিষেবা সামাল দিতে দিনকয়েকের মধ্যেই ফের ওই মেট্রোকর্মীদের আগের জায়গায় ফেরত পাঠানো হয়।
এ দিকে, প্রায় বছর ঘুরতে চলায় ইতিমধ্যেই রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের ছাড়পত্রের মেয়াদ ফুরিয়েছে। বিধি অনুযায়ী, ওই পথে পরিষেবা শুরু করতে ফের ছাড়পত্র নিতে হবে। যদিও মেট্রোর কর্তাদের দাবি, তাতে সমস্যা হবে না। নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোপথে সিগন্যালিং ব্যবস্থা সংস্কারের পরে কম সময়ের ব্যবধানে ট্রেন চালানো সম্ভব হবে বলে দাবি। কিন্তু পর্যাপ্ত সংখ্যক চালক, রেক এবং কর্মীর অভাবে সেই ব্যবধান কতটা কমানো সম্ভব, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। নিউ গড়িয়া-রুবি পথে স্বল্প দূরত্বে ভাড়ার বিন্যাসেও অভিনবত্বের ছাপ নেই বলে যাত্রীদের অভিযোগ। উত্তর-দক্ষিণ এবং নিউ গড়িয়া-রুবি— দুই মেট্রোপথের সমন্বিত ভাড়া কার্যত দু’টি পথের যোগ করে দেওয়া ভাড়া। কাছাকাছি দূরত্বে বাসের ভাড়া আদতে মেট্রোর ভাড়ার অর্ধেক। ফলে অল্প দূরত্বে যেতে যাত্রীরা মেট্রোয় উঠতে চাইবেন কি না, সেই সংশয় থাকছে।
নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোর উদ্বোধন সম্পর্কে এক মেট্রোকর্তা বলেন, ‘‘পরিষেবা শুরু করার যাবতীয় প্রস্তুতি রয়েছে। উদ্বোধনের বিষয়টি রেল মন্ত্রকের বিবেচনাধীন। নির্দেশ এলেই পরিষেবা শুরু করা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy