সুধীর মাঝি ও গৌতম রায়
গানে আছে, চিতাতেই সব শেষ। কিন্তু শেষ কই এ যে শুরু!
মর্গ থেকে মৃতদেহ বদলের জেরে দেহ নিয়ে চলল টানাটানি। ঘি, তেল মাখিয়ে দেহ সৎকারের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ার পরে বাধল ধুন্ধুমার। চিতার মুখ থেকে ফেরাতে হল দেহ।
রবিবার রাতে এই ঘটনার সাক্ষী শহর মেদিনীপুর। জন্মের পরে শিশুবদলের অভিযোগ ওঠে। এ বার মৃত্যুর পরে মর্গ থেকে দেহ বদলের ঘটনাও ঘটল। অভিযোগ, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভুলেই মর্গ থেকে সুধীর মাঝি (৬৯) এবং গৌতম রায়ের (৪৮) দেহ বদলে যায়। মেদিনীপুর মেডিক্যালের ফেসিলিটি ম্যানেজার সঞ্জীবকুমার গোস্বামী বলেন, ‘‘তদন্তে সব দিক দেখা হচ্ছে।’’ হাসপাতালের অন্য এক কর্তার কথায়, ‘‘মর্গের বিষয়গুলি পুলিশ দেখে। দোষটা পুলিশের তরফে।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘পুলিশের তরফে কিছু হয়েছে কি না দেখছি।’’
হাসপাতাল সূত্রে খবর, শনিবার বিষ খেয়ে চন্দ্রকোনার বীরভানপুরের বাসিন্দা গৌতম মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। শনিবারই মেডিক্যালে আনার পথে মৃত্যু হয় মেদিনীপুরের রাঙামাটির বাসিন্দা সুধীরের। বুকে কফ জমে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
রবিবার দু’টি দেহেরই ময়নাতদন্ত হয়। সন্ধ্যার মুখে হাসপাতালের মর্গে প্রথমে মৃতদেহ নিতে এসেছিলেন সুধীরের পরিজনেরা। কিন্তু তাঁরা গৌতমের দেহ নিয়ে চলে যান। পরে যখন গৌতমের বাড়ির লোক আসেন, তাঁরা দেখেন মর্গে গৌতমের দেহ নেই। মর্গের এক কর্মী সুধীরের দেহ দেখিয়ে বলেন, ‘এটাই তো আপনাদের।’ গৌতমের পরিজনেরা জানান, এটা গৌতমের দেহ নয়। মর্গ থেকে হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ হয়ে খবর যায় পুলিশে। পুলিশ এসে জানতে পারে, সুধীরের পরিজনেরা যে দেহ নিয়ে গিয়েছেন, তা শহরের পদ্মাবতী শ্মশানে রয়েছে। শ্মশানে যায় পুলিশ। ঘি, তেল মাখানো অবস্থাতেই দেহটি মর্গে ফিরিয়ে আনা হয়। নতুন করে দেহ শনাক্ত হয়। তারপর সুধীর ও গৌতমের দেহ পরিজনেদের দেওয়া হয়। ততক্ষণে রাত হয়ে গিয়েছে। গৌতমের ছেলে পুষ্পেন্দু রায় বলছিলেন, ‘‘চরম গাফিলতি ছাড়া এটা হতে পারে না। শ্মশানে নিয়ে গিয়ে ঘি, তেল মাখিয়ে দেহ চিতায় তোলা হচ্ছিল। তখনই পুলিশ যায়। অনেক কষ্টে বাবার দেহ ফিরে পেয়েছি।’’
ময়না-তদন্তের পরে মৃতদেহ প্লাস্টিকে জড়িয়ে মৃতের নাম লেখা স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে ওই স্টিকার ছিল কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তা ছাড়া, সুধীরের পরিজনেরা কী করে অন্য দেহ নিয়ে চলে গেলেন সেই প্রশ্নও তুলেছেন গৌতমের পরিজনেরা। সুধীরের ছেলে বিশ্বনাথ মাঝির বক্তব্য, ‘‘আমার মাথার ঠিক ছিল না। ভাল করে দেহটা দেখিনি। মানছি, বড় ভুল হয়ে গিয়েছিল।’’
ভাগ্যিস চিতায় তোলার আগেই ভুল শোধরানো গিয়েছে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy