—ফাইল চিত্র।
রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় কয়েক দিন ধরে বার বার দাবি করছেন, নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) অনুযায়ী আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি থেকে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া শুরু হবে। কিন্তু রাজ্যের ‘দলিত আদিবাসী মাইনরিটি আন্দোলন লিগ’ (দামাল) নামে একটি সংগঠন সিএএ-র একটি ধারা দেখিয়ে পাল্টা দাবি করছে, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি তো নয়ই, কখনওই নাগরিকত্ব পাবেন না রাজ্য বা দেশের সব শরণার্থী। ওই সংগঠনের অভিযোগ, মিথ্যাচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বিজেপি। এই প্রেক্ষিতে সকলকে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবি তুলেছে দামাল। তৃণমূলেরও বক্তব্য, নাগরিকদের জোর করে বে-নাগরিক দেখিয়ে আবার নাগরিকত্বের আবেদন করানোর ফাঁদ পেতেছে বিজেপি। নাগরিকত্বের ওই প্রক্রিয়া সহজ নয়। সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির পাল্টা দাবি, সব শরণার্থীই নিঃশর্ত নাগরিকত্ব পাবেন।
সিএএ-র দু’নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বর বা তার আগে যে সব হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ভারতে এসেছিলেন এবং যাঁরা পাসপোর্ট আইন, ১৯২০ বা ফরেনার্স অ্যাক্ট, ১৯৪৬ অনুযায়ী ছাড় পেয়েছেন, তাঁরা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে গণ্য হবেন না। এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রের ২০১৫ সালের পাসপোর্ট সংশোধনী বিধি (অ্যামেন্ডমেন্ট রুলস) এবং ওই বছরেরই ফরেনার্স অ্যামেন্ডমেন্ট অর্ডারের দু’ নম্বর ধারা দেখিয়ে দামালের মুখ্য আহ্বায়ক মানিক মণ্ডল বলেন, ‘‘২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর বা তার আগে যে সব হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে বা ধর্মীয় নির্যাতনের আশঙ্কায় পাসপোর্ট এবং অন্যান্য বৈধ নথিপত্র ছাড়াই বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁরা পাসপোর্ট এবং ফরেনার্স আইনে ছাড় পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু সেই ছাড় পেতে হলে তাঁদের কেন্দ্রের কাছে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে আবেদন করতে হত। যাঁরা ভারতে এসেই সেই আবেদন করেছিলেন, তাঁরা শরণার্থীর মর্যাদা পেয়েছেন। এখন কেবল তাঁরাই এ দেশে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু যাঁরা তা করেননি, তাঁরা সিএএ অনুযায়ী নাগরিকত্বও পাবেন না। বিজেপি ভোটের লোভে এই সত্য আড়াল করছে।’’ এই ‘সত্য’ বোঝাতে দুর্গাপুজোর আগে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠকও করেন মানিকবাবুরা। ইদানীং শান্তনুকে বিজেপির মধ্যে ঈষৎ ‘বেসুরো’ শোনাচ্ছে। তবে বিজেপির উদ্বাস্তু সেলের আহ্বায়ক মোহিত রায় বলেন, ‘‘এই তত্ত্ব ভুল। পাসপোর্ট এবং ফরেনার্স আইনে ছাড় পাওয়ার জন্য কোথাও আবেদন করার সংস্থানই ছিল না, এখনও নেই। সুতরাং, কাউকে ওই বিষয়ে আবেদনই করতে হয়নি। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর বা তার আগে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে বা ধর্মীয় নির্যাতনের আশঙ্কায় এ দেশে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান সকলেই নাগরিকত্ব পাবেন।’’
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘এ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাটা বলছেন। তিনি বার বার বলেছেন, মতুয়ারা তো নাগরিক আছেনই। তাঁদেরকে আবার নাগরিকত্ব নেওয়ার ঝামেলায় ফেলা হবে কেন? আর নাগরিকত্ব পাওয়ার পদ্ধতিটা যথেষ্ট জটিল। বিজেপি এটা করছে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির জন্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy