Advertisement
E-Paper

তৃণমূলে যাচ্ছেন না, প্রশান্ত কিশোরের প্রস্তাব ফিরিয়ে ‘হাত’ই ধরে রইলেন মিঠু রায়

দেবপ্রসাদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি শুধু বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে, আমার কাছে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু আমি ‘না’ বলে দিয়েছি।’’

দেবপ্রসাদ রায় ও প্রশান্ত কিশোর।

দেবপ্রসাদ রায় ও প্রশান্ত কিশোর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১২:৫৩
Share
Save

প্রশান্ত কিশোরের প্রস্তাব ফিরিয়েই দিলেন প্রবীণ কংগ্রেসি নেতা এবং প্রাক্তন বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় (মিঠু)। শনিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন তৃণমূলের ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। তাঁর সংস্থা ‘আইপ্যাক’ সূত্রের খবর, দেবপ্রসাদকে প্রথমে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়াতে বিধানসভার টিকিট এবং পরে রাজ্যসভায় পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। দেবপ্রসাদ জানিয়ে দেন, কংগ্রেসের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কচ্ছেদ করে যদি তিনি তৃণমূলে আসেনও, তা হলে তা ভোটের টিকিটের জন্য নয়।

দেবপ্রসাদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি শুধু বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে, আমার কাছে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু আমি ‘না’ বলে দিয়েছি।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমি তো বরাবরই বলে এসেছি, যব তক হাত, তব তক কংগ্রেস কা সাথ।’’ তা হলে তিনি কেন পিকে-র সঙ্গে দেখা করলেন? দেবপ্রসাদের জবাব, ‘‘ওর অনেক নাম শুনেছি। সে কারণে ওকে একবার দেখার ইচ্ছে হয়েছিল। তাই ও যখন ডেকে পাঠাল, তখন সেটা অগ্রাহ্য করিনি।’’ প্রবীণ কংগ্রেসিনেতা আরও জানাচ্ছেন, বাম-কংগ্রেস জোটের বিবিধ কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও বিধানসভা ভোটে তিনি কংগ্রেসের হয়েই কাজ করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ঠিক না ভুল, সেটা তো আমরা ঠিক করি না। মানুষ ঠিক করে দেয়।’’

প্রসঙ্গত, তাঁর কাছে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে কি না, শনিবার সকালে আনন্দবাজার ডিজিটালের সেই সরাসরি প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছিলেন দেবপ্রসাদ। বলেছিলেন, ‘‘এই প্রশ্ন আমার জন্য অবমাননাকর। তবে আমার অবস্থানগত বদল হতেই পারে। যেহেতু একটা প্ররোচনা এসেছে। আর সেটা নিয়ে কেউ কিছু বলছেনও না।’’ যে ‘প্ররোচনা’র কথা দেবপ্রসাদ বলছেন, তা এসেছিল স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের তরফে। দেবপ্রসাদের কথায়, ‘‘গত ২২ জানুয়ারি আলিপুরদুয়ারের জেলা সিপিএম সম্পাদক মৃণালকান্তি রায় প্রকাশ্যেই বলেছেন, আমি এ বার আলিপুরদুয়ারে বিরোধী জোটের প্রার্থী হলে তাঁরা আমার বিরুদ্ধে কাজ করবেন। গতবারের ভোটে আমি নাকি কংগ্রেসের প্রার্থীকে তলে তলে হারানোর কাজ করেছিলাম! তৃণমূলের সৌরভ চক্রবর্তীকে জেতানোর পিছনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলাম! অথচ কংগ্রেসের প্রার্থী নিজেও তেমন কোনও অভিযোগ করেননি।’’

মৃণালকান্তির ওই বক্তব্য দেবপ্রসাদ লিখিত ভাবে সিপিএমের পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীকে জানিয়েছিলেন। দেবপ্রসাদের কথায়, ‘‘উনি নীরব থেকেছেন। ওঁর নীরবতা দেখে আমি ওঁকে ফোন করে বলি, আমি একটা বিষয় পাঠিয়েছি। সেটা কি দেখেছেন? সুজন বলেন, ‘এখনই দেখছি মিঠুবাবু।’ কিন্তু উনি তার পরেও সেটা দেখেছএন বলে অন্তত আমি তো দেখতে পেলাম না। ফলে প্ররোচনা যথেষ্টই রয়েছে।’’

সেই ‘প্ররোচনা’ সত্ত্বেও কেন তিনি চৌকাঠ পেরোলেন না? দেবপ্রসাদ সে প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক কংগ্রেসনেতার (পিকে-কে‘না’ বলার পর যাঁর সঙ্গে তিনি আলোচনা করেছেন) বক্তব্য, ‘‘যে সুরে এবং যে ভাবে প্রস্তাব এসেছিল, সেটা মিঠুর পছন্দ হয়নি। এটাই প্রাথমিক কারণ। অন্তত ও নিজে সেটাই বলেছে।’’

উল্লেখ্য, গত ৫৭ বছর ধরে দেবপ্রসাদ নিরবচ্ছিন্ন ভাবে কংগ্রেস রাজনীতিই করছেন। ১৯৭০ সালে শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে দলের সর্বক্ষণের কর্মী হয়েছিলেন। আগে দিল্লিতে সর্বভারতীয় স্তরে কাজ করলেও এখন ‘জলপাইগুড়ির ভূমিপুত্র’ রাজ্যের রাজনীতিতেই সম্পৃক্ত। ২০০৬ থেকে ২০১১ পর্যন্ত তিনি ছিলেন জলপাইগুড়ির কংগ্রেস বিধায়ক। ২০১১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত ছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক। ২০১৬ সালে তিনি ভোটে দাঁড়াননি। তাঁর ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, তখন তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণার অব্যবহিত আগে তাঁকে ফোন করে আলিপুরদুয়ারের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন সুব্রত বক্সি। কিন্তু তিনি রাজি হননি।

TMC Congress Politics

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}