ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা রয়েছে। তাই সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবসায়ীরা ক্ষতি রুখতে নিজেদের লঞ্চ, ভুটভুটি সরিয়ে নিয়ে এসেছেন জল থেকে। ক্যানিংয়ে কাছি দিয়ে অনেকে বেঁধে রেখেছেন মাতলা নদীর পাড়ে। ছবি: প্রসেজিৎ সাহা।
ক’দিনের দহনজ্বালা থেকে আজ, শনিবার কিছুটা মুক্তি মিলতে পারে দক্ষিণবঙ্গে। হাওয়া অফিসের খবর, শনিবার দুই মেদিনীপুর-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। পূর্ব মেদিনীপুর এবং দুই ২৪ পরগনায় বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। রবিবারও ওই তিন জেলায় ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে শুক্রবার অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেওয়া ‘মোকা’ রবিবার মায়ানমারে আছড়ে পড়তে পারে। ‘মোকা’র সরাসরি প্রভাব পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে না পড়লেও সাগর উত্তাল থাকায় মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, ‘মোকা’র প্রভাবেই গাঙ্গেয় বঙ্গের পরিমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ঢুকেছে।
রাজ্যের সমুদ্র সৈকতও ‘মোকা’র আশঙ্কাতেই খালি। শুক্রবার দিনভর কার্যত পর্যটক-শূন্যই রইল সৈকত শহর দিঘা। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় শনি ও রবিবারও দিঘায় পর্যটকেরা পা রাখতে চাইছেন না বলেই হোটেল মালিক থেকে পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সকলেই জানাচ্ছেন। একে সপ্তাহান্তের ছুটি। তার উপর প্রায় সব স্কুলেই গরমের ছুটি শুরু হয়েছে। তার পরেও এই শুক্র-শনি-রবি দিঘার হোটেলের অধিকাংশ ঘর ‘বুক’ হয়নি। অনেকে অগ্রিম ‘বুকিং’ বাতিল করছেন। অথচ গত সপ্তাহেই মে দিবসের ছুটির সময় ‘ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই’ অবস্থা ছিল দিঘার সৈকত লাগোয়া হোটেলগুলিতে। সপ্তাহ ঘুরতেই উল্টো ছবি। সে ভাবে ভিড় নেই মন্দারমণি, শঙ্করপুরেও।
ওল্ড এবং নিউ দিঘা মিলিয়ে সাতশোর বেশি বড় হোটেল এবং লজ রয়েছে। দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘মোকা নিয়ে প্রশাসন অনেক আগে থেকেই বার বার সতর্ক করছে। তাই অনেকেই ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় বুকিং করে বাতিল করছেন।’’ ওল্ড দিঘার এক হোটেল মালিক গিরীশচন্দ্র রাউতও বলেন, ‘‘শুক্রবার থেকে হোটেলের ঘর প্রায় ফাঁকা।’’
‘মোকা’র প্রভাব এ রাজ্যে আদৌ পড়বে কি না, তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণের মধ্যেই কিন্তু শুক্রবার দিনভর পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। সঙ্গে ভ্যাপসা গরম। উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে প্রশাসনের তরফে প্রাথমিক ভাবে নজরদারি শুরু হয়েছে। দিঘায় খোলা হয়েছে জেলা পর্যায়ের কন্ট্রোল রুম। বৃহস্পতিবার পৌঁছে গিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। মাইকে প্রচার চলছে। শুক্র এবং শনিবার পর্যটকেরা যাতে কোনও ভাবে সমুদ্রে না নামেন, সে জন্য সতর্ক করা হচ্ছে। যদিও ওল্ড দিঘায় কোনও কোনও পর্যটককে সমুদ্রে নামতে দেখা গিয়েছে। মৎস্যজীবীদেরও এ দিন দুপুরের মধ্যেই ফিরে আসার জন্য প্রচার চালিয়েছে পুলিশ।
তবে মোকার ধাক্কায় সপ্তাহান্তের পর্যটন ব্যবসা যে অনেকটাই মার খেল, মানছেন হোটেল মালিক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। মন্দারমণির এক দোকানি সুমন মিশ্র বলছেন, ‘‘গরমের ছুটিতে বেশ ভাল সংখ্যক পর্যটক আসার কথা। বিক্রিবাটা ভাল হবে আশা ছিল। কিন্তু তাতে জল ঢালল মোকা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy