এখনও জল ভেঙেই যাতায়াত। মঙ্গলবার সন্দেশখালির ন্যাজাটে। ছবি: নির্মল বসু
ঘূর্ণিঝড় আমপানে বিধ্বস্ত প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের হাতে সরাসরি নগদ সাহায্য পৌঁছে দেওয়া গিয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার জানান। টুইট বার্তায় তিনি জানান, ইতিমধ্যেই ১৪৪৪ কোটি টাকা মানুষের হাতে পৌঁছে গিয়েছে। অন্তত পাঁচ লক্ষ মানুষের হাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি সারানোর টাকা, ২৩ লক্ষ ২৭ হাজার চাষির হাতে ফসলের ক্ষতি বাবদ অর্থ এবং দু’লক্ষ পান চাষির হাতে ক্ষতিগ্রস্ত বরজ ফের দাঁড় করানোর টাকা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও আমপানের দাপটে সব হারানো মানুষগুলিকে যতটা পারা গিয়েছে, সাহায্য করা হয়েছে। এর পরেও পরিস্থিতি যাচাই করে সরকার যতটা পারবে সহায়তা করবে।’’
আমপান-কবলিত বিভিন্ন জেলায় ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজ কী ভাবে এগোচ্ছে, সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের সঙ্গে এ দিন তার পর্যালোচনা করেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। আমপানের পরের দিনেই বঙ্গে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঘোষণা করেছিলেন এক হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা। বলেছিলেন, শীঘ্রই কেন্দ্রীয় দল এসে রাজ্যের সঙ্গে যৌথ পরিদর্শন করে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করবে। কেন্দ্রীয় দল চলতি সপ্তাহের শেষে কলকাতায় আসতে পারে। মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘দিল্লি দল পাঠাতে চেয়ে সোমবার ফোন করেছিল। আমরা বলেছি, দ্রুত রাজ্যে এসে পরিদর্শন করুন। দু’-এক দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় দলের আগমনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’
মুখ্যসচিব জানান, জেলাশাসকেরা যে-সব মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন, সেখানকার চাষিদের কাছে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকে মৎস্যজীবী ও প্রাণিপালকদের টাকা দেওয়া হবে। যে-সব বাড়ি ভেঙেছে, সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে। আপাতত বাড়ির জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। যাঁদের কাছে টাকা পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৩০% উপভোক্তার আইএফএসসি কোড এবং ২০% উপভোক্তার অ্যাকাউন্ট নম্বর না-মেলায় কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে দিন দু’য়েকের মধ্যেই সব মিটে যাবে। ঘূর্ণিঝড়ের ১২ দিনের মধ্যে দলমত নির্বিশেষে উপভোক্তাদের কাছে ১৪৪৪ কোটি টাকা পাঠানো গিয়েছে। এটাই বড় ব্যাপার বলে মন্তব্য করেন মুখ্যসচিব।
আরও পড়ুন: কেউ ঠেলছেন দূরে, কেউ পরিযায়ীদের দিচ্ছেন ভাত
আরও পড়ুন: শহরে এক দিনে আক্রান্ত ১১৬, বদলাচ্ছে কন্টেনমেন্ট নীতি
টুইট-বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, করোনা মহামারির সঙ্গে লড়াইয়ের মধ্যেই বাংলায় ধেয়ে এসেছিল আমপানের মতো সুপার সাইক্লোন। সাম্প্রতিক অতীতে এমন বিধ্বংসী ঝড় দেখেনি রাজ্য। এই ঝড়ে ঘরবাড়ি, চাষ-আবাদ, মাছ চাষ, পরিকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে রাজ্যবাসীর ঘুরে দাঁড়ানোর তীব্র ইচ্ছা এবং সরকার ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজে দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়ার ফলে প্রথম পর্যায়ে ৬২৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা সম্ভব হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী ওই বার্তায় আরও জানান, প্রাথমিক ভাবে ২০ লক্ষ চাষিকে সাহায্যের কথা ভাবা হলেও শেষ পর্যন্ত ২৩ লক্ষ ২৭ হাজার চাষির অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো সম্ভব হয়েছে। ১৩৫০ কোটি টাকা অবিলম্বে পাঠানোর পরিকল্পনা থাকলেও সরকার ১৪৪৪ কোটি টাকা পাঠাতে পেরেছে। ভবিষ্যতে আরও টাকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য।
৬২৫০ কোটি টাকার প্যাকেজে ভাঙা বাড়ি সারানোর জন্য ২০ হাজার টাকা, চাষিদের ফসলের ক্ষতির জন্য মাথাপিছু ১৫০০ টাকা এবং প্রতিটি নষ্ট পান বরজের জন্য ৫০০০ টাকা পাঠানো হয়েছে। এর পরেও ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে বাড়ি নির্মাণের মজুরির টাকা, বরজ নতুন করে তৈরির টাকা এবং কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছে সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy