ব্লক অফিসে ক্ষতিপূরণের আবেদনের ফর্ম জমা দেওয়ার ভিড়। বৃহস্পতিবার কুলতলিতে। ছবি: সুমন সাহা
ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে ব্লক অফিসে গিয়ে হুড়োহুড়িতে পড়ে গিয়ে জখম হলেন বেশ কয়েক জন। দুই মহিলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কুলতলি ব্লক দফতরের সামনে। বিডিও বিপ্রতিম বসাক অবশ্য হুড়োহুড়িতে আহত হওয়ার কথা স্বীকার করেননি। তাঁর দাবি, লাইনে দাঁড়িয়ে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন কয়েক জন।
আমপানে সরকারি ক্ষতিপূরণ নিয়ে পঞ্চায়েত ও বুথস্তরে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছিল রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে। এর জেরেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্তদের সরাসরি ব্লক দফতরে এসে আবেদন করতে বলা হয়। কুলতলির বিভিন্ন পঞ্চায়েতে তালিকা তৈরি নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। এর জেরে একাধিক জায়গায় ইতিমধ্যে বিক্ষোভ-আন্দোলনও হয়েছে।
২৬ জুন থেকে কুলতলি ব্লক অফিসে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে সরাসরি ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্র নেওয়ার কাজ শুরু হয়। ব্লক প্রশাসন জানায়, রোজই চার-পাঁচ হাজার করে আবেদন জমা পড়ছে। বৃহস্পতিবার ছিল আবেদন নেওয়ার শেষ দিন। এ দিন ভিড় আরও বাড়ে। স্থানীয় সূত্রের খবর, ভোর থেকেই হাজার হাজার মানুষ লাইন দেন। সকাল ৮টার মধ্যেই কয়েকশো মিটার লম্বা লাইন পড়ে যায়। ব্লক অফিস ছাড়িয়ে লাইন চলে যায় জামতলা ব্রিজ পর্যন্ত। পুরুষ ও মহিলাদের দু’টি আলাদা লাইন হয়েছিল। সাড়ে ৯টা নাগাদ খবর ছড়ায়, অফিসের গেট খোলা হচ্ছে। লাইনে দাঁড়ানো মানুষের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কয়েক জন পড়ে গিয়ে পদপিষ্ট হন।
আরও পড়ুন: মিলিজুলি পঞ্চায়েতে ক্ষতিপূরণের টাকা বহু সদস্যের নামেই
কুলতলি ব্লক হাসপাতাল সূত্রে খবর, তিন মহিলা চিকিৎসার জন্য আসেন। এঁদের মধ্যে অসীমা হালদার ও সন্ধ্যা গায়েনকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু হয়েছে। কুলতলি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরজিৎ সেন জানান, সন্ধ্যার পায়ে এবং অসীমার বুকে চোট ছিল। অসীমাকে বুকের এক্স-রে করতেও পাঠানো হয়। তবে এক্স-রে-তে কোনও সমস্যা ধরা পড়েনি।
এ দিন দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন সন্ধ্যা ও অসীমা। অসীমার স্বামী শ্যামপদ বলেন, “লাইনে বেশ কিছুটা পিছনে ছিলাম। হঠাৎই শুনি গেট খুলছে।
সঙ্গে সঙ্গে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। তাড়াহুড়োতে অনেকেই মাটিতে পড়ে যান। কোনও রকমে এগিয়ে গিয়ে দেখি, স্ত্রী রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছেন। আরও এক মহিলাও পড়ে রয়েছেন। দু’জনকে তুলে নিজেই ভ্যান ভাড়া করে হাসপাতালে নিয়ে আসি।”
আরও পড়ুন: তালিকা তৈরি, বাড়তি বুথের জায়গায় টান
এত লোক এলেও ভিড় নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের তরফে দু’জন মাত্র সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়া আর কেউ ছিলেন না বলে অভিযোগ শ্যামপদর। ঘটনার পরে অবশ্য কুলতলি থানার পুলিশ আসে। পুলিশের উপস্থিতিতে পরে সুষ্ঠু ভাবেই আবেদন জমা নেওয়ার কাজ হয়েছে।
বিডিও বলেন, “শুনেছি গরমে দু’জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।” তবে ডাক্তারি রিপোর্ট বলছে, দুই মহিলাই চোট পেয়েছেন। এ দিকে, ঘটনার জন্য বিডিওকে দায়ী করেছেন সিপিএম বিধায়ক রামশঙ্কর হালদার। তাঁর কথায়, “প্রতিটি পঞ্চায়েতে ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। বিডিও এতে মদত দিয়েছেন। ক্ষতিপূরণ ঠিকঠাক বণ্টন হয়নি বলেই হাজার হাজার মানুষকে ব্লক দফতরে এসে লাইন দিতে হচ্ছে। নেতাদের পাশাপাশি বিডিও এই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy