দিন-গোনা: কবে সরবে নোনাজল। অপেক্ষায় বৃদ্ধা। গোসাবার রাঙাবেলিয়ায়। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
ঘরবাড়ি গিয়েছে ঝড়ে। যেটুকুও বা মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে, তা-ও জলের তলায়। হয় উঁচু রাস্তা, না-হলে নদীর বাঁধে আশ্রয় জুটেছে। কিন্তু ঝড় কবলিত এলাকার মানুষজন সমস্যায় পড়েছেন শৌচাগার ব্যবহার নিয়ে। বিশেষ করে মহিলারা। পুরুষেরা মাঠে-ঘাটে শৌচকর্ম সারলেও মহিলারা বিপাকে পড়ছেন। অনেকেই অপেক্ষা করেন, কখন রাত নামবে। রাত থেকে ভোরের মধ্যে শৌচকর্ম সারতে হয় তাঁদের। প্রশাসন থেকে পরিবেশবান্ধব শৌচাগার দেওয়ার আশ্বাস দিলেও, এখনও পর্যন্ত তা আসেনি এলাকায়।
হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অর্চনা মৃধা অবশ্য দ্রুত অস্থায়ী শৌচাগার বানানোর আশ্বাস দিয়েছেন। সন্দেশখালি ১-এর বিডিও সুপ্রতিম আচার্য জানান, দ্রুত ৫০০০টি ‘বায়ো টয়লেট’ আনার চেষ্টা চলছে।
আমপান ঝড়ের পরে পার হয়ে গিয়েছে ১২ দিন। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের রূপমারি পঞ্চায়েতের বাইনাড়া ও বিশপুর পঞ্চায়েতের ধানিখালি এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বড় রাস্তার দু’পাশে দু’টি গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি জলের তলায়। রাস্তার উপরে ত্রিপল খাটিয়ে মাথা গুঁজেছে গৃহহীন পরিবারগুলি। ধানিখালির বাসিন্দা সীতা সরকার বলেন, “মাটির বাড়ি ও ছোট একটা শৌচাগার বানিয়েছিলাম। বন্যায় আর কিছু নেই। এখন রাত নামলে বানের জলে জেগে থাকা মাঠেঘাটে যেতে হয়। চারিদিকের জলও পচা।” ওই গ্রামেরই বাসিন্দা সুস্মিতা সরকার, কল্পনা গায়েন, তাপসী মণ্ডলেরা বলেন, “রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছি। শৌচাগার ডুবে গিয়েছে। যাঁদের পাকা বাড়ি আছে, তাঁদের শৌচাগারে যাচ্ছি। অনেকেই আপত্তি জানাচ্ছেন। তবুও বাধ্য হয়েই একরকম জোর করেই যেতে হচ্ছে।” গ্রামবাসীরা জানান, সরকারি-বেসরকারি ভাবে কিছুটা ত্রাণের ব্যবস্থা হলেও শৌচাগারের সমস্যা মেটেনি। বাইনাড়া গ্রামের বাসিন্দা প্রীতি বিশ্বাস বলেন, “ঝড়ের পর থেকে রাস্তায় আছি। সকলেই ফাঁকা জায়গায় শৌচকর্ম করতে বাধ্য হচ্ছেন। আমি পারি না।
যখন ভাটা হয়, হাঁটুজল ঠেলে কোনও রকমে বাড়ির শৌচাগারে ঢুকি। চারদিকের জল দূষিত। সংক্রমণ, সাপখোপের ভয়ে আছি।” প্রীতির মতো সমস্যায় রয়েছেন গ্রামের অসংখ্য মহিলা। সকলেই সন্ধে নামার অপেক্ষা করেন।
হাসনাবাদ ব্লকের পাটলি খানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের টিয়ামারি, পশ্চিম ঘুণির বাসিন্দা দেবী গিরি, মাধবী দাসদেরও একই সমস্যা। হাসনাবাদের চিকিৎসক মনোজ মণ্ডল বলেন, “শৌচাগার ও শৌচকর্মের জন্য জলের ব্যবস্থা দ্রুত করা প্রয়োজন। তা না-হলে জলবাহিত রোগে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy