শম্পার শ্বশুরবাড়ির সামনে এখনও গাছ পোঁতা।ছবি: দীপঙ্কর দে
দলে থেকে দুর্নীতির প্রতিবাদ করে গত এক মাস ধরে হুগলি জেলা পরিষদের এক তৃণমূল সদস্যা হেনস্থার মুখোমুখি হচ্ছেন বলে অভিযোগ।
হরিপাল থেকে নির্বাচিত শম্পা দাস নামে ওই সদস্যার বাড়ির সামনের এক দিকের রাস্তায় বনসৃজন প্রকল্পে গাছ পুঁতে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে, তাঁর দাবি, তিনি গাড়ি বার করতে পারছেন না। দৃষ্টিহীন শাশুড়িকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যেতে পারছেন না। দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য অচেনা নম্বর থেকে প্রায়ই ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করছেন শম্পা।
তাঁর ‘অপরাধ’? শম্পার দাবি, তিনি এলাকার আশুতোষ পঞ্চায়েতের দলীয় প্রধান সুমিত সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। আমপানে হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতালের মেহগনি, অর্জুন, শিরীষ-সহ কিছু গাছ ভেঙে পড়েছিল। প্রধান বেআইনি ভাবে সেই গাছ কাটিয়ে এক করাত-কলের মালিককে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে শম্পা পুলিশ প্রশাসন, দলের জেলা নেতৃত্ব, এমনকি, দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকেও অভিযোগ জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে লিখিত অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
শম্পা বলেন, ‘‘ওই গাছগুলোর সঙ্গে আমার দাদু-বাবার স্মৃতি জড়িত। হাসপাতালের জমির একাংশও বাবার দেওয়া। সে জন্যই প্রতিবাদ করি। সুমিতবাবু যে আমার কথা শুনবেন না, বুঝিনি। ওঁরা আমাকে নানা ভাবে হেনস্থা করছেন।’’
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা অভিযোগপত্র।
সুমিত ছাড়াও দলের কিছু নেতার আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শম্পা। তাঁর দাবি, ‘‘কিছু দিন আগে দলের ব্লক সভাপতি বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে বিধায়ক বেচারাম মান্নাও ছিলেন। বৈঠকে আমাকে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বলা হয়। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার জন্য ক্ষমা চাইতে বলা হয়। কোনওটাই করিনি, করবও না। দলের কাছ থেকে শুধুমাত্র বিচার চাই।’’ অভিযোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করছেন সুমিত। তাঁর দাবি, ‘‘বিএমওএইচ-এর নির্দেশ মতোই স্পট-টেন্ডার করে গাছ বিক্রি করি। এ বাবদ ৭৫ হাজার টাকা পঞ্চায়েতের তহবিলে রয়েছে। শম্পাদেবীর বাড়ির সামনে কারা গাছ পুঁতল বা ফোনে কারা হুমকি দিচ্ছে, বলতে পারব না। আমি যুক্ত নই।’’ বিধায়ক বলেন, ‘‘সুমিত নিয়ম মেনেই গাছ কেটেছে। শম্পার অভিযোগ আসলে আষাঢ়ে গল্প।’’ তবে, তাঁদের কাউকে না-জানিয়ে স্পট-টেন্ডার ডেকে গাছ বিক্রি করা যায় না বলে জানিয়েছেন জেলা বন দফতরের এক কর্তা।
আরও পড়ুন: গাছ বিক্রি নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির ‘গুলি-বোমা’, তপ্ত খেজুরি
জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব অবশ্য বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে শম্পার কথা হয়েছে। স্থানীয় ব্লক নেতৃত্বকে প্রধানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বলেছি। তার পর রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।’’ রাতে এ ব্যাপারে ফিরহাদ হাকিমকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
আরও পড়ুন: আমপান ত্রাণের টাস্ক ফোর্সের মধ্যেও অভিযুক্ত!
স্কুলশিক্ষক সুমিত শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের অন্যতম জেলা সম্পাদক। স্থানীয় অটো, টোটো এবং হকার সংগঠনের কর্তাও। বছর কয়েক আগে হরিপাল কলেজের অনুষ্ঠানের জন্য দাবিমতো টাকা না-পাওয়ায় স্থানীয় এক পানশালায় ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। তার পরে তারকেশ্বরে পুণ্যার্থী মহিলাদের মারধরের অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। তবে, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy