ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছ সরানো হচ্ছে। ছবি: পিটিআই।
ঝড়ে উড়েছে ঘরের চাল। একটি মাত্র ত্রিপল চান ক্ষতিগ্রস্তরা।
ঘর-বাড়ি হারিয়ে পথে বসেছেন যাঁরা, দু’মুঠো খাবার চাইছেন তাঁরা। সঙ্গে একটু জল। কোলের শিশু নিয়ে বাঁধের উপরে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটছে যাঁদের, এক গ্লাস দুধের জন্য চাতক-অপেক্ষায় সেই মায়েরা।
ঝড় কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের এই সামান্য দাবিও মিটছে না বহু জায়গায়। ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কাজে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। প্রশাসন জানিয়েছে, এর আগে কোনও ঝড়ে এত গাছ পড়েনি। যোগাযোগ ব্যবস্থা এভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়নি। সুন্দরবনের সাগরদ্বীপ-সহ বেশ কিছু এলাকার সঙ্গে শনিবারও যোগাযোগ করা যায়নি। পূর্ব মেদিনীপুরে মোটরবাইকে করে ত্রিপল আনতে হয়েছে পঞ্চায়েত সদস্যকে। ত্রাণ না পৌঁছনোয় বিক্ষোভ বাড়ছে এলাকায় এলাকায়।
ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং, সাগরদ্বীপ-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু এলাকা ঝড়ের তিন দিন পরেও কার্যত বিচ্ছিন্ন। সাগরদ্বীপ-সহ বেশ কিছু এলাকায় প্রশাসন জলপথে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে। আয়লার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন আগে থেকেই বিভিন্ন সরকারি অফিস, পঞ্চায়েত অফিসে ত্রাণ সামগ্রী মজুত করে রেখেছিল। প্রশাসনের বক্তব্য, বাঁধ ভেঙে, রাস্তা ধসে, গাছ পড়ে অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে ১০ কিলোমিটার দূরের গ্রামেও ত্রাণ পৌঁছনো যাচ্ছে না। যদিও শনিবার গোসাবা-বাসন্তীর মধ্যে খেয়া পারাপার শুরু হওয়ায় ওই এলাকায় ত্রাণ পৌঁছনোর সমস্যা কিছুটা মিটেছে।
আরও পড়ুন: ঘর হারিয়ে নৌকোয় সংসার পেতেছেন গুরুপদ
ত্রিপলের দাবিতে শনিবার বিক্ষোভ হয় হাওড়ার উলুবেড়িয়া পুরসভায়। এখানে কয়েক হাজার বাড়ির চাল উড়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়, ত্রিপল ওয়ার্ড অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেখান থেকেই তা সংগ্রহ করতে হবে। কিন্তু তাঁরা তা পুরসভা থেকে নেবেন বলে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে অবশ্য তাঁরা ওয়ার্ড থেকেই ত্রিপল নিতে রাজি হন বিক্ষোভকারীরা।
ত্রাণ নিয়ে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস নিয়ে শনিবার নন্দীগ্রামে পৌঁছে যান পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি জলের সঙ্কট মেটানোর প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। আবার নন্দকুমারের পরমানন্দপুর, দেশপ্রাণ ব্লকের উত্তর ডিহিমুকুন্দুপুরে এখনও ত্রাণের ত্রিপল পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। দেশপ্রাণ এলাকার একটি পঞ্চায়েতের সদস্য গোপাল দাস জানান, তিনি শনিবার মাত্র ১০টি ত্রিপল পেয়েছেন। সেটাও তাঁকে মোটরবাইকে করে আনতে হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা দফতরের জেলা আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, ‘‘অনেক জায়গায় যোগাযোগের সমস্যার জন্য পঞ্চায়েত স্তরে ত্রাণ পৌঁছনো যাচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy