প্রতীকী ছবি।
সরকারি কোষাগারে ফিরল প্রায় ২০ লক্ষ টাকা।
শুধুমাত্র মথুরাপুর ২ ব্লকেই ১০৩ জনের কাছ থেকে সরকারি ক্ষতিপূরণের এই টাকা ফেরত এসেছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক সুকান্ত সাহা বলেন, ‘‘সোমবার পর্যন্ত ১০৩ জনের থেকে টাকা আদায় হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে আদায়ের কাজ শেষ করা হবে।’’ একটি ব্লকের এই চিত্র দেখে চোখ কপালে প্রশাসনের কর্তাদের!
প্রসঙ্গত, প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, রাজ্যে সামগ্রিক ভাবে ২১০০টি ভুয়ো ক্ষতিপূরণের অভিযোগ এসেছে বলে শীর্ষ মহল থেকে জানানো হয়েছে। সব অভিযোগই সত্য হলে, সরকারের কাছে ৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ফেরত আসার কথা। কারণ, প্রধানত বাড়ি মেরামতের জন্য ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই খাতে মাথাপিছু ২০ হাজার টাকা প্রাপ্র্য।
যেমন সোমবার মথুরাপুর-২ ব্লকের কুমড়োপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার কাছাড়িপাড়ায় গিয়ে দেখা হল পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ পারুল মজুমদারের স্বামী জ্ঞানরঞ্জনের সঙ্গে। ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা পেয়েছেন। তবে ফেরত দিচ্ছেন বলে জানালেন। কেন? জ্ঞানরঞ্জন বলেন, ‘‘বহু গরিব মানুষ টাকা পাননি। তাই টাকা ফেরত দেব বলে ঠিক করেছি।’’
আরও পড়ুন: হিসেব না-কষেই ভাঙা গাছ বিক্রি, প্রশ্নে নেতা
তা হলে আবেদন করেছিলেন কেন? জ্ঞানরঞ্জনের বক্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে তালিকা তৈরি হয়েছে। কী ভাবে আমার নাম উঠল জানি না।’’ কিন্তু ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্র তো নিজেদেরই জমা দিতে হয়। পঞ্চায়েত কি আপনার হয়ে আবেদন জমা করেছিল? উত্তর নেই জ্ঞানরঞ্জনের মুখে। আবেদনপত্রের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য, আধার নম্বর, ভোটার কার্ডের ফোটোকপি দিতে হয়। সেই সবও কি আপনার অগোচরেই জমা পড়েছিল? ‘‘আমাকে আজই টাকা ফেরতের কাজ সারতে হবে’’—এগিয়ে যান জ্ঞানরঞ্জন।
আরও পড়ুন: পড়শির নিদানে সঙ্কটে ক্যানসার রোগী
এই ব্লকেরই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হামিদা বিবি মোল্লা নিজের ও স্বামী-সন্তানের নামেও ক্ষতিপূরণের টাকা তুলেছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁদেরও দাবি, জানতেন না, কী ভাবে নাম উঠেছিল তালিকায়। টাকা ফেরত দিয়েছেন হামিদারা। টাকা ফেরত দিয়েছেন, এমন যাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তাঁরা একই কথা বলেছেন।
কুমড়োপাড়া পঞ্চায়েতের মুসলিমপাড়ায় কথা হচ্ছিল আনসার মোল্লা, সাহাদাত শেখ, লিয়াকত শেখদের সঙ্গে। দেখালেন, গ্রামে এখনও বেশ কিছু ভাঙা বাড়ি রয়েছে। সেখানে কোনও মতে ত্রিপল, প্লাস্টিক টাঙিয়ে ছেন অনেকে। গ্রামে কিছু দোতলা, একতলা পাকা বাড়ির দিকে আঙুল দেখিয়ে লিয়াকতেরা বললেন, ‘‘ওই সব বাড়ির লোক ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা পেয়েছে। অথচ, আমরা এ ভাবে বাস করছি।’’
মথুরাপুর-২ ব্লকে প্রায় ৩০ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা পাঠানো হয়েছিল। ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন এখনও পর্যন্ত হাজার সাতেক। ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতের মধ্যে নন্দকুমারপুর, নগেন্দ্রপুর, রাধাকান্তপুর ও খাড়ি পঞ্চায়েত-সহ আরও কয়েকটিতে ক্ষতিপূরণ-দুর্নীতি নজরে এসেছে। ব্লক তৃণমুল নেতা শান্তনু বাপুলি বলেন, ‘‘কারা টাকা তুলেছে, সর্বদলীয় কমিটি তৈরি করে তা দেখা শুরু হয়েছে।’’ বিজেপি নেতা অলোক হালদারের বক্তব্য, ‘‘অনেকে টাকা খরচ করে ফেলেছে বলে জানতে পারছি।’’ সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘টাকা উদ্ধার করলেই কি সাত খুন মাফ? শাস্তির ব্যবস্থা হবে না?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy