—ফাইল চিত্র।
আমপানের ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে গোড়া থেকেই সরব বিরোধীরা। একাধিক জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। এ বার সেই মামলার প্রেক্ষিতেই আমপানে কেন্দ্রের দেওয়া ১ হাজার কোটি টাকার ত্রাণে দুর্নীতি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (ক্যাগ)-কে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণনের বেঞ্চ।
অন্য দিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে এ বিষয়ে পাল্টা তোপ দেগেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমপানের টাকা দিয়ে আবার বলছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে তদন্ত করাব। দু’-এক জন গরিব মানুষ ১-২ হাজার টাকা বেশি নিয়ে থাকতে পারেন। তবে তাও আমরা ফেরত নিয়েছি।’’ কোভিড সংক্রমণের মোকাবিলায় ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিল গঠন করেছে কেন্দ্র। সেই তহবিল নিয়েও প্রশ্ন তুলে মমতা বলেন, ‘‘আমি যদি বলি পিএম কেয়ার্সের টাকা কোথায় গেল?’’
সুপার সাইক্লোন আমপানের পর রাজ্য সফরে এসে ১ হাজার কোটি টাকা ত্রাণের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই টাকা সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যের বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, ওই ত্রাণ বণ্টনে দুর্নীতি হয়েছিল। এই নিয়ে হাইকোর্টে মোট পাঁচটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলাগুলি একত্রিত করে শুনানির পর প্রধান বিচারপতি রাধাকৃষ্ণনের পর্যবেক্ষণ, মামলার অভিযোগের ভিত্তি রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে। কোনও অনিয়ম থাকলেও থাকতে পারে। তাই এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
একইসঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়েছে, ক্ষতিপূরণের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার দিয়েছিল, তাই এর তদন্ত হওয়া উচিত কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়েই। সেই কারণেই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ক্যাগ-কে।
আরও পড়ুন: অভিষেক, দিলীপ, সৌমিত্র: রাজনীতির ব্যক্তি আক্রমণ গড়াচ্ছে আদালতে
তদন্তের অভিমুখও ঠিক করে দিয়েছে হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত জানিয়েছে, এই তদন্ত দুটি ভাগে করা হবে। প্রথমটি হবে ‘ফাইনান্সিয়াল অডিট’। যেখানে দেখা হবে, ত্রাণের টাকা রাজ্য স্তর থেকে ব্লক স্তর পর্যন্ত কী ভাবে বিলিবণ্টন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ত্রাণের টাকা বণ্টনে যুক্ত অফিসারদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রয়োজনে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হবে। তদন্তে দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পেলে আদালত খতিয়ে দেখে ওই অফিসারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।
ত্রাণ বণ্টনে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল বিরোধীদের। তাঁদের বক্তব্য ছিল, অনেকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও ত্রাণ পাননি। আবার কারও সামান্য ক্ষতিতেও ত্রাণের টাকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ‘পারফরম্যান্স অডিট’-এ এই বিষয়টিই খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ। এই ক্ষেত্রে দেখা হবে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন কি না। অর্থাৎ, যে কারণে এই ত্রাণের টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, তার সঠিক ব্যবহার হয়েছে কি না।
আরও পড়ুন: ‘বহিরাগত’ নয়, প্রার্থী করা হোক স্থানীয়দের, বালিতে পোস্টার, নিশানায় বৈশালী ডালমিয়া?
হাইকোর্টের এই নির্দেশ প্রসঙ্গে মামলাকারীদের আইনজীবী শামিম আহিমেদ বলেন, ‘‘এ বার নিরপেক্ষ তদন্ত হবে বলে আশা রাখছি। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy