Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

প্রশাসনই ত্রাণ বিলি করবে: মুখ্যমন্ত্রী

সরকারের দাবি, আমপানে রাজ্যে ক্ষতির পরিমাণ এক লক্ষ কোটি টাকার বেশি। প্রাণ হারিয়েছেন ৯৮ জন। ত্রাণ এবং পুনর্গঠন বাবদ প্রায় ৬৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২০ ০৩:৫৭
Share: Save:

লকডাউনের শুরুতে রেশন বিলি ঘিরে অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ হয়েছিল অনেক জায়গায়। আমপান-ক্ষতিপূরণ বিলিতে তার পুনরাবৃত্তি চাইছে না রাজ্য সরকার।

বুধবার একাধিক জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ: এক, ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের তালিকা থেকে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নাম যেন বাদ না-যায়। দুই, একমাত্র রাজ্য প্রশাসনের মাধ্যমেই যাতে ত্রাণ বিলি হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। তিন, সুষ্ঠু ভাবে রেশন বিলি করতে হবে, এবং চার, উপভোক্তাদের ফোন করে পরিষেবা সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘কেউ যেন বঞ্চিত না-হয়। কারও নাম যেন তালিকা থেকে বাদ না-যায়। অসুবিধার কথা যেন না-শুনি। রেশন সবাই যেন পায়। অনাহারে মারা যাওয়ার কথা যেন না শুনি। ফোন করে র‌্যান্ডম ক্রস-চেক করুন পরিষেবা নিয়ে।’’

সরকারের দাবি, আমপানে রাজ্যে ক্ষতির পরিমাণ এক লক্ষ কোটি টাকার বেশি। প্রাণ হারিয়েছেন ৯৮ জন। ত্রাণ এবং পুনর্গঠন বাবদ প্রায় ৬৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। এর আগে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও পানচাষিদের ক্ষতিপূরণ দিয়েছে রাজ্য সরকার। টাকা দেওয়া হয়েছে ভেঙে পড়া বাড়ি মেরামতির জন্যও। এ দিন মৎস্যজীবীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। এ বাবদ বরাদ্দের পরিমাণ ১৭ কোটি ২২ লক্ষ টাকা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, পোলট্রির ক্ষতিপূরণে প্রায় ১৪ কোটি টাকা দিচ্ছে রাজ্য। গবাদি পশু মারা যাওয়ায় ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হচ্ছে ১২ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা। দুধেল গরু মারা গেলে মিলবে ৩০ হাজার টাকা। এ ছাড়া, পশু-খাদ্য, ওষুধ-ভ্যাকসিন এবং পশু চিকিৎসার জন্যও বরাদ্দ হচ্ছে বেশ কয়েক কোটি টাকা।

বাগদা, মিনাখাঁ, গোবরডাঙা, হাড়োয়া, সন্দেশখালির মতো কিছু এলাকায় ক্ষতিপূরণ ও ত্রাণ বণ্টন ঘিরে অশান্তির সম্ভাবনা নিয়ে এ দিন খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকারের আশঙ্কা, ওই সব এলাকায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা হতে পারে। উস্কানিমূলক আচরণ রুখতে মুর্শিদাবাদ জেলাশাসককেও ব্লকস্তর পর্যন্ত সমন্বয়ের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের প্রতি তাঁর আরও নির্দেশ, রাজ্য প্রশাসনের মাধ্যমে ত্রাণ বিলি নিশ্চিত করতে হবে। সেটা হলে এক দিকে যেমন কোনও বৈষম্য থাকবে না। তেমনই, কাকে, কোথায় এবং কী ভাবে ত্রাণ পৌঁছতে হবে, সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে ত্রাণ বিলিতে সমস্যা দেখা দেবে না।

গত ২৩ মে কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠক করে ত্রাণ বিলি নিয়ে কোনও অভিযোগ বরদাস্ত করা হবে না বলে সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই পঞ্চায়েত স্তরে স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠছে। সম্প্রতি সুন্দরবন এলাকায় কিছু পঞ্চায়েত নেতা ও তাঁদের আত্মীয়ের বাড়ি থেকে বুলবুল ঝড়ের সময় ত্রাণের জন্য বরাদ্দ বাসন উদ্ধার করেছেন এলাকার মানুষ। সম্প্রতি ত্রাণের দাবিতে মথুরাপুর-২-এর বিডিও-কে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। ওই দিনই সরকারি কর্মীদের মাধ্যমে ত্রাণ বিলির দাবি ওঠে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘আপাতত ব্লক আধিকারিক ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে ত্রাণ বিলি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সদস্যদের কাছ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নেওয়ার কাজও করা হচ্ছে। পুলিশ ও ব্লক অফিসাররা দুর্গতদের তালিকা তৈরি করে ত্রাণ পৌঁছে দেবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy