এই স্বীকৃতি পেলে শিল্পীরা উপকৃত হবেন বলে দাবি। প্রতীকী চিত্র
বাংলায় কীর্তনের অনেক রূপ। লীলা, পদাবলি, রাসলীলা-সহ নানা নামে কীর্তন পরিবেশন করেন বাংলার শিল্পীরা। কিন্তু খাতায়কলমে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার কীর্তনকে ধ্রুপদী সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এর ফলে সরকারি অনুষ্ঠানে কীর্তন শিল্পীরা তুলনায় কম টাকা পান। এ বার সেই সমস্যা মেটাতে কেন্দ্রের কাছ থেকে কীর্তনের ধ্রুপদী স্বীকৃতি আদায়ে উদ্যোগী হয়েছে সঙ্ঘ পরিবারের সাংস্কৃতিক সংগঠন বঙ্গীয় সনাতনী সংস্কৃতি পরিষদ। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর সাংস্কৃতিক শাখা সংস্কার ভারতীর সদস্যদের নিয়েই তৈরি হয়েছে নতুন এই সংগঠন।
শুধু কীর্তন নয়, তার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে যুক্ত খোলের জন্যও ধ্রুপদী মর্যাদার দাবি জানাবে পরিষদ। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক প্রবীর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শুধু কীর্তন ও শ্রীখোল নয়, আমরা বাংলা ভাষার জন্যও ধ্রুপদী মর্যাদার দাবি তুলছি। সংস্কৃত ছাড়াও পাঁচটি আঞ্চলিক ভাষা তামিল, তেলুগু, কন্নড়, মালয়ালম, ওড়িয়াকে ভারত সরকার শাস্ত্রীয় (ক্ল্যাসিকাল) মর্যাদা দিয়েছে। সেই একই যুক্তিতে বাঙ্গলা ভাষাও শাস্ত্রীয় মর্যাদার অধিকারী। আমরা সেই দাবিও জানাব।’’
আচমকা কেন্দ্রের কাছে এমন দাবি কেন? প্রবীর বলেন, ‘‘বিভিন্ন রাজ্যের সরকার নিজস্ব প্রাদেশিক ভাষা ও সংস্কৃতির ধ্রুপদী মর্যাদার জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানায়। তার ভিত্তিতেই কেন্দ্র পদক্ষেপ করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় বাংলার কোনও সরকারই কোনও দিন সেই দাবি তোলেনি। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন রাজ্যের শিল্পীরা।’’ প্রবীরের আরও দাবি, বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম অঙ্গ ‘গৌড়ীয় নৃত্য’ ধ্রুপদী স্বীকৃতি পেলেও এই ক্ষেত্রে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয় না। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমেও অন্তর্ভূক্ত হয়নি।
বাংলার বাদ্যযন্ত্র খোল পর্যাপ্ত মর্যাদা পায়নি বলেও অভিযোগ পরিষদের। কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রকে যে দাবি সনদ সংগঠন পাঠাতে চায় তাতে বলা হয়েছে, বাংলার নিজস্ব শাস্ত্রীয় সঙ্গীত কীর্তনের কপালে শুধুই অবহেলা জুটেছে। অথচ চর্যাপদে যে প্রবন্ধগীতির উল্লেখ রয়েছে, তারই পরবর্তী রূপ বাংলার কীর্তন। এই প্রবন্ধসঙ্গীত থেকেই ধ্রুপদ, ধামার প্রভৃতির উৎপত্তি এবং সেগুলি শাস্ত্রীয় মর্যাদা পেয়েছে। তা হলে বাংলার কীর্তন শাস্ত্রীয় মর্যাদা পাবে না কেন?
একই সঙ্গে তালবাদ্য খোল নিয়ে পরিষদের দাবি, চৈতন্য মহাপ্রভুর হরিনাম সংকীর্তনে খোলের ব্যবহার বিশ্বজনীন পরিচিতি তৈরি করলেও এই তালবাদ্যটি বাংলার নিজস্ব। কয়েক হাজার বছরের পুরনো ঐতিহ্যের খোলের উল্লেখ যেমন নাট্যশাস্ত্রে রয়েছে। সঙ্গীত বিষয়ক একাধিক শাস্ত্রেও এর উল্লেখ রয়েছে। পরিষদের দাবি, নাট্যশাস্ত্রে উল্লিখিত মৃদঙ্গই সঠিক অর্থে বাংলার শ্রীখোল বা খোল। যে নিয়মে দক্ষিণ ভারতের ঘট্টম শাস্ত্রীয় বাদ্য হয়, সেই একই কারণে খোল সমমর্যাদা পাওয়ার অধিকারী।
পরিষদের পক্ষে জানানো হয়েছে, এই দাবি সনদ কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে খুব তাড়াতাড়িই পাঠানো হবে। তার আগে এই দাবি যাতে লোকসভা ও রাজ্যসভায় ওঠে তার জন্য বাংলার সাংসদদের কাছেও পরিষদের পক্ষ থেকে দরবার করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy