পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মায়ের নাম লেখা ট্রফি। নিজস্ব চিত্র
টেনিস বলে ক্রিকেট প্রতিযোগিতা। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোডের একটি ক্লাবের আয়োজনে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে ওই ক্রিকেটের আসরও এখন পার্থ-কাণ্ডে চর্চায়।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মা প্রয়াত শিবানী চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে আয়োজিত সেই টুর্নামেন্টে পুরস্কার মূল্য সাধারণ গ্রামাঞ্চলের তুলনায় ছিল অনেকটাই বেশি। চার চাকা, মোটরবাইকের পাশাপাশি নগদ কয়েক লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল ওই টুর্নামেন্টে। নিয়োগ-দুর্নীতিতে পার্থের গ্রেফতার ও তারপর কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের পরে ওই ক্রিকেট আসর নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। বিরোধীরা বলছেন, এই টুর্নামেন্টের খরচকোথা থেকে এসেছিল, তা-ও খুঁজে দেখা দরকার।
পার্থ টুর্নামেন্টে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না। তবে তাঁর মায়ের নামে টুর্নামেন্টের নাম রাখা হয়েছিল ‘শিবানী চট্টোপাধ্যায় স্মৃতি এজিএসি কাপ’। অভিযোগ, সামনে স্থানীয় ক্লাবকে আয়োজক হিসেবে রাখা হলেও প্রতিযোগিতার মূল পরিচালক ছিলেন পার্থের কাছের মানুষ হিসাবে পরিচিত স্থানীয় তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু বিষই। তিন দিনের প্রতিযোগিতার আয়োজনে ১০ লক্ষ টাকারও বেশি খরচ হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন টুর্নামেন্টের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। চন্দ্রকোনা রোড ফুটবল ময়দানে ১৬ দলের প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খেলোয়াড়েরা এসেছিলেন নানা দলের হয়ে খেলতে। চ্যাম্পিয়ন দলের পুরস্কারের অর্থ ছিল নগদ ২ লক্ষ টাকা ও রানার্সের জন্য নগদ দেড় লক্ষ টাকা। চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স দু’দলকেই দেওয়া হয়েছিল ‘স্বর্গীয় শিবানী চট্টোপাধ্যায় ট্রফি’। সেরা খেলোয়াড়কে আধুনিক গাড়ি, ফাইনালের সেরাকে দামি ব্র্যান্ডের বাইক পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। প্রতিযোগিতার আকর্ষণ বাড়াতে খেলার সরাসরি ধারাবিবরণীর জন্য করা হয়েছিল কমেন্ট্রি বক্সও।
এ সবেরই আয়োজনের পিছনে কৃষ্ণেন্দু ছিলেন বলে দাবি। প্রায় ৯ মাস পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানও ছিলেন কৃষ্ণেন্দু। কিছুদিন আগেই তাঁকে ওই পদ থেকে অপসারণ করা হয়।
কিন্তু আইপিএলের ধাঁচে সেই প্রতিযোগিতার খরচ উঠেছিলকী ভাবে?
জল্পনা এখানেই। বিজেপির জেলা সম্পাদক গৌতম কৌড়ির মন্তব্য, ‘‘মফস্সলে এত মোটা অর্থের পুরস্কার মূল্যের প্রতিযোগিতার খরচ কোথা থেকে এল তা খতিয়ে দেখা দরকার।’’ তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কৃষ্ণেন্দু নিজের প্রভাব খাটিয়ে এ দিক-সে দিক করে অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন। বিজ্ঞাপন থেকেও অনেক টাকা উঠেছিল। এ ব্যাপারে জানতে ফোন করা হলে ধরেননি কৃষ্ণেন্দু। পরে অবশ্য হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের উত্তরে তিনি দাবি করেন, ‘‘ভুল খবর। এজিএসি কাপ প্রতিবছর অগ্রগামী অ্যাথলেটিকস ক্লাবই করায়।’’
ওই ক্লাবের সম্পাদক সুব্রত গণ আবার পাল্টা দাবি করে বলেন, ‘‘ক্লাবে মিটিং করে বিস্তারিত আলোচনা ছাড়াই এ বার টুর্নামেন্ট করা হয়েছিল। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেউ করতে পারেন। এ বারের খেলার ভার ক্লাব নেয়নি।’’ আর তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান অজিত মাইতিকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর জবাব, ‘‘আমার কিছু জানা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy