ছবি: সংগৃহীত।
বাইরের ছবি আপাত ভাবে উজ্জ্বল। কিন্তু ভিতরে গভীর উদ্বেগ!
দলে তরুণ মুখ বাড়ানোর জন্য ডাক দেওয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত ডাক দিচ্ছে সিপিএম। করোনা-কালে এবং আমপান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে ত্রাণের কাজে তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ দেখে দলের নেতৃত্ব উৎসাহিত। কিন্তু সদস্য-সংখ্যার নিরিখে তরুণ কর্মী কমে যাচ্ছে সিপিএমে। দলের সদস্যপদ পুনর্নবীকরণের কাজ শেষে এই পরিসংখ্যান ধরা পড়ায় চিন্তায় পড়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। সমস্যা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে এক দিকে তরুণ সদস্য বাড়ানোর জন্য আরও উদ্যোগ এবং তার পাশাপাশি জঙ্গি আন্দোলনে যাওয়ার দাওয়াই দিচ্ছে তারা।
চলতি ২০২০ সালের সদস্য পুননর্বীকরণ থেকে কী ছবি ধরা পড়ল, তা এ বারের ৪ নম্বর পার্টি চিঠিতে ব্যাখ্যা করেছে সিপিএম। দেখা যাচ্ছে, এই বছরে বাংলায় সিপিএমের পুনর্নবীকৃত পার্টি সদস্য ১ লক্ষ ৬০ হাজার ৪৮৫ জন। গত বছর ওই সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪২ জন। অর্থাৎ সদস্য কমেছে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার (৭৫৫৭)। কর্মীসংখ্যা কমে যাওয়ায় নানা ধরনের কমিটিও বিভিন্ন জায়গায় নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে। তবে তার চেয়েও সিপিএমের কাছে বেশি উদ্বেগের বিষয় তরুণ অংশের সদস্যপদ কমে যাওয়া।
সিপিএমের তথ্য বলছে, ৩১ বছর পর্যন্ত বয়স— এমন সদস্যের হার মোট সদস্যের ৭.৬৮%। যা গত বছরে ছিল ৯.০৯%। প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১৫ সালে কলকাতা প্লেনামে সিপিএমের গৃহীত লক্ষ্য ছিল, তিন বছরের মধ্যে তরুণ এই অংশের সদস্যসংখ্যা ২০% এবং মহিলা কর্মীর সংখ্যা ২৫%-এ নিয়ে যেতে হবে। এই বছরের হিসেবে, মহিলা কর্মীর সংখ্যা ১০.৯৬%। গত বছর ছিল ১০.৪৫%। অর্থাৎ নামমাত্র বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু সময়-সীমা পেরিয়ে এলেও ঘোষিত লক্ষ্যের ধারেকাছে নেই তরুণ ও মহিলা কর্মীর সংখ্যা!
দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ছাত্র ও যুব সম্প্রদায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজে বিপুল ভাবে এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু দলের সংগঠনে তার প্রতিফলন ধরা পড়ছে না। নতুনদের সংগঠনে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সর্বস্তরের নেতৃত্ব ও কমিটিকেই অনেক বেশি আন্তরিক হতে হবে।’’
পার্টি চিঠিতেও বলা হচ্ছে, ‘নির্দ্বিধায় বলা যেতে পারে যে, এই দুইটি দিকের (তরুণ ও মহিলা) প্রতি নজর দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুতর ত্রুটি বিরাজ করছে। ৩১ বছর বয়সী পার্টি সদস্যের শতাংশ হার ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালেও ধারাবাবিক ভাবে হ্রাস পেয়েছে। অথচ এই সময়কালে আন্দোলন-সংগ্রামে এদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। মহিলা ও তরুণ সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি সমগ্র পার্টির কাছে অগ্রাধিকার দাবি করছে’। সর্বক্ষণের কর্মীর সংখ্যা বেশ কয়েক বছর ধরেই কমছে, তার অন্যথা হয়নি এ বারেও।
আন্দোলন যত ঝিমিয়ে পড়বে, সংগঠনও তত শিথিল হবে। পার্টি চিঠিতে তাই বার্তা দেওয়া হয়েছে, ‘আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের দুর্বলতা বিজেপির মত অতি প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির সুবিধা করে দেবে। এই মুহূর্তে পার্টিকে আরও উন্নততর ও জঙ্গি আন্দোলনের নতুন রূপের উদ্ভাবনার দিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। আদায়যোগ্য দাবির ভিত্তিতে আন্দোলন গড়ে তোলার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ’।
ছাত্র ও যুব ফ্রন্টের কাজে যে ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে, তা-ও বলা হয়েছে দলের মূল্যায়ন রিপোর্টে। সেই সূত্রেই মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘অসংখ্য তরুণ কর্মী এই সময়কালে যোগ্যতা প্রমাণ করে সামনে এসেছেন। এদের মধ্য থেকে উন্নততর ক্যাডার ও সর্বক্ষণের কর্মী গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেতৃত্বকে করতে হবে’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy